ঢাকা: বিএনপি পুনর্গঠনের নেতা দাবিদার কামরুল হাসান নাসিম বলেছেন, “আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপির প্রাণ নয়াপল্টনে (কেন্দ্রীয় কার্যালয়) এই বছরেই আমাকে দেখা যাবে। কিন্তু আমি দীর্ঘমেয়াদী নেতৃত্বে কখনই আসব না। দলটির চিকিৎসা শেষ হলেই আমার একান্ত ভুবনে আমি চলে যাব।” বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। কামরুল হাসান নাসিম বলেন, “আমি যে পথে হেঁটেছিলাম সেই দিকে
ই যাচ্ছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। এটি ভালো লক্ষণ। তবে এতে ‘মীরজাফর’ পর্যায়ের নেতারাও রয়েছেন। তাদের থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কথিত আছে, অদৃশ্য শক্তির স্বার্থে হাত মিলিয়ে তারা বিএনপিকে ভাঙতে চায়। আশার খবর- এতদিন পর শুভ চিন্তায় জিয়াউর রহমানের আদর্শে দল পরিচালনার কথা বলছেন অনেকেই, যে রাস্তার পথ খানিকটা আমিই দেখাতে উদ্বুদ্ধ করেছি।” তিনি বলেন, “আমি যখন যাত্রা শুরু করেছিলাম তখনই বলেছিলাম- দলের অসুখ হয়েছে। আমি একজন ওষুধওয়ালারূপী চিকিৎসক। কিন্তু প্রয়োগ করেছি ‘হোমিওপ্যাথি’। রমজানের পরই ‘অ্যালোপ্যাথি ওষুধ’ ছাড়া হবে। সেখান থেকেই বিএনপির মধ্যকার দলীয় গণতন্ত্র ফেরত আনার চেষ্টায় সফল হওয়া যাবে।” তার দাবি, “এই বছরের শেষভাগে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল ভারতসহ কয়েকটি দেশ সফর করবে। আমি থাকছি সেই সফরে। যেটিতে আমি খুব স্বাচ্ছন্দ্যে থাকিনা। তবুও দেশের ভবিষ্যত পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারিত করেই ২০১৬ বছরটিকে নতুন করে সাজাতে চাই। বিএনপিকে গণমানুষের অর্থবহ দল করাই লক্ষ্য এখন। সেই রাস্তায় হাঁটতে পারলে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেয়ার আন্দোলনে যাওয়া হবে আগামী বছরের শুরুতেই।” নাসিম বলেন, “বিএনপিতে এখন চার ধরণের শ্রেণি রয়েছে। এক, পূর্বসূরীদের ছাপিয়ে না যেয়ে উত্তরসূরী বর্গ। যাদের প্রতি বিএনপি সমর্থকের বড় একটা অংশের অন্ধ আসক্তি রয়েছে, সেটি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তারা ফুরিয়ে গেছেন এবং তা সচেতন সমর্থক বুঝতে পেরেছেন। আগামী দিনে ওই শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে নতুন নেতৃত্বের জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। তারাও থাকবেন, কিন্তু একটু পিছনেই দাঁড়াতে হবে- মাথায় হাত বুলাতে হবে। দুই, বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যের কেহ কেহ বহু বছর পর প্রহসনকে সঙ্গি করে নীতি কথায় আবৃত থেকে একটি জাতীয়তাবাদী সমিতি খোলার চেষ্টা। মনে রাখা দরকার, তাদের ব্যর্থতার কারনেই গৃহিণী থেকে দল নেতৃত্বে এসেছেন আমাদের ‘মা’ বেগম খালেদা জিয়া। অথচ, দেশ পরিচালনা করা তার ভাগ্য জোটার পিছনে ওই গোষ্ঠীই দায়ী। এই শ্রেণি বিএনপি পরিবারের অবাধ্য ত্যাজ্য ও সব সময়ের শত্রু। তারা রাতের আধারে একবার আওয়ামী লীগ একবার বিএনপি আরেকবার সেনাসমর্থিত সরকার প্রত্যাশায় রাজনীতি করেন। তিন, দলের মধ্যে থাকা ‘মীরজাফর’ গোত্রের এক বিশেষ শ্রেণি। অদৃশ্য শক্তির প্রেসক্রিপশনে তাদের এমন ভাব, ‘ম্যাডাম’, আপনার সঙ্গেই আছি কিন্তু ‘ক্রেডিবল অপোজিশন প্রধান’ হওয়ার লক্ষ্য তাদের। এখন ২০ দলীয় জোটের সাবেক আরেক বিএনপি নেতাও আছেন এমন দৌড়ে। চার, দলীয় বিপ্লবে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতিতে একটি উচ্চমার্গের মেধাসম্পন্ন শ্রেণি। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপির প্রাণ নয়া পল্টনে এই বছরেই আমাকে দেখা যাবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, আমি দীর্ঘ মেয়াদী নেতৃত্বে কখনই আসব না।চিকিৎসা শেষ হলেই আমার একান্ত ভুবনে আমি চলে যাব। সামান্য একজন সদস্য হিসাবে থাকতে পারলেই বিএনপির মতো সমুদ্রের তীরে হাওয়া খেতে মন্দ লাগার সুযোগ কোথায়।” নতুন বার্তা/কেএম
No comments:
Post a Comment