Thursday, May 21, 2015

রোহিঙ্গা কারা, কেন তারা মিয়ানমার ছাড়ছে?:টাইমনিউজ

রোহিঙ্গা কারা, কেন তারা মিয়ানমার ছাড়ছে? টাইম ডেস্ক টাইম নিউজ বিডি, ২১ মে, ২০১৫ ১২:৪৩:১৮ মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশের অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান বসবাস করেন। এই সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। কারণ হাজার হাজার রোহিঙ্গা সড়ক ও সাগরপথে উন্নত জীবন লাভ ও মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য পালিয়ে যাচ্ছেন। রোহিঙ্গা কারা এবং কেন তারা ব্যাপকভাবে মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন এখানে তা তুলে ধরা
হলো। রোহিঙ্গা কারা: রোহিঙ্গারা প্রধানত জাতিগতভাবে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করেন। আরো ১০ লাখ রোহিঙ্গা সৌদি আরব, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। তাদের বেশির ভাগই সুন্নি মুসলমান। ২০১২ সালের আঞ্চলিক সঙ্ঘাতের সময় মিয়ামারের এক লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে নির্মমভাবে উচ্ছেদ করা হয়। তার পর থেকে এক লাখ ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা সংঘর্ষ নিপীড়ন থেকে বাঁচতে ও অর্থনৈতিক অসচ্ছলতায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যান। বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত, নির্যাতিত সংখ্যালঘুর মধ্যে অন্যতম হিসেবে রোহিঙ্গাদের অভিহিত করেছে জাতিসঙ্ঘ। তারা কেন মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন: এটি জটিল। কিন্তু কেউ কেউ এ জন্য কুসংস্কার ও ভীতির রাজনীতিকে দায়ী করেছে। মিয়ানমারে বৌদ্ধদের সংখ্যা ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ। এমন সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও অনেকে শাস্ত্রীয়ভাবে দুর্বল ভবিষ্যদ্বাণীতে বিশ্বাস করে। এতে দাবি করা হয়, আগামী সহস্রাব্দে তাদের ধর্মের অস্তিত্ব থাকবে না। একটি আরবি বাক্যের প্রচলিত সংখ্যাতাত্ত্বিক সংক্ষেপণ ৭৮৬ এর প্রতিও তারা লক্ষ করেন, বাক্যটি হচ্ছে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম’ (পরম করুণাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি)। এটিকে তারা একবিংশ শতাব্দীতে মুসলিম শাসনের ষড়যন্ত্রের প্রমাণ হিসেবে বিশ্বাস করে (৭+৮+৬=২১)। ৭৮৬ সংখ্যাটি এ অঞ্চলে মুসলমান মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে প্রায়ই দেখা যায়। বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীরা মান্দালাই-ভিত্তিক সন্ন্যাসী ও টাইম ম্যাগাজিন কর্তৃক বৌদ্ধ সন্ত্রাসীর মুখ হিসেবে অভিহিত হওয়া উইরাথু ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে এসব ‘ইসলামিক আক্রমণের’ ভীতি ছড়িয়েছে ও মুসলিমবিরোধী সংঘর্ষে প্ররোচনা দিয়েছে। অর্থনৈতিক ও অন্যান্য রাজনৈতিক কারণও এখানে ভূমিকা রেখেছিল, কিন্তু মিয়ানমার সরকার পরিস্থিতির শুধু অবনতিই ঘটাচ্ছে। সরকার কী করছে: ইয়াঙ্গুনে মিয়ানমারের জাতীয় জাদুঘরে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরা কয়েক ডজন পুতুল দেখা যায় যা দেশটির জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যেরই প্রতিনিধিত্ব করে। লক্ষণীয়ভাবে অনুপস্থিত রোহিঙ্গারা, সরকারিভাবে যাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। সরকারি কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করেছে। একই সাথে তারা পরোক্ষভাবে বলেছে, তারা পাশের বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে মিয়ানমারে প্রবেশ করেছে। ১৯৮২ সালের একটি আইনে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব থেকে বাদ দেয়া হয়, এর পরে তারা রাষ্ট্রহীন হয়ে যায়। গত বছর ভূমিজরিপের সময় তাদের জাতীয় পরিচয়ও চলে যায়। সরকার দীর্ঘ দিন ধরে সরকারি চাকরি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের প্রবেশের ব্যাপারটি উপেক্ষা করে আসছে। কঠোর আইন তাদের ভ্রমণ, বিয়ে ও সন্তান জন্মদানের অধিকারকে সীমাবদ্ধ করেছে এবং এমনকি সরকার তাদেরকে মানবিক সহায়তা গ্রহণ থেকেও নিষিদ্ধ করেছে। এগুলো শুনতে খারাপ লাগে কিন্তু রোহিঙ্গাদের অবস্থা প্রকৃতই কত খারাপ? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণহত্যা স্মৃতি জাদুঘর এ মাসের প্রথম দিকে ‘দে ওয়ান্ট আস অল টু গো অ্যাওয়ে : আরলি ওয়ার্নিং সাইনস অব জেনোসাইড ইন বার্মা’ নামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, কিভাবে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে ঘৃণামূলক বক্তৃতা দেয়াসহ, শারীরিক নির্যাতন, বিভক্তি, ভয়াবহ জীবনযাপনের অবস্থা, চলাচলের সীমাবদ্ধতা, ভূমি বাজেয়াপ্ত করা, যৌন সহিংসতা, বিধিবহির্ভূত কারাদণ্ড, ভোটাধিকারের সীমাবদ্ধতা, নাগরিকত্ব হারানো, চাঁদাবাজি ও মানবতার বিরুদ্ধে অন্য আরো অপরাধ সংঘটিত করা হয়। মিয়ানমারে অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মানুষকেও নির্যাতনের শিকার হতে হয়, কিন্তু রোহিঙ্গাদেরকে সবচেয়ে খারাপ নির্যাতনের শিকার হতে হয়। নয়াদিগন্ত ইআর    

No comments:

Post a Comment