? ঘটনার পর থেকেই গণমাধ্যমে এ নিয়ে নানা ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। বিষয়টি যেন ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতরো রুপ ধারণ করছে। আজ (বুধবার-১৮ই মার্চ ২০১৫) বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী ইংরেজী দৈনিক দি নিউ এজ পত্রিকায় এ বিষয়ে রিপোর্টার মুক্তাদির রশিদের একটি অনুসন্ধানি প্রতিবেদন ছাপা হয়। “SALAH UDDIN DISAPPEARANCE: Wife worried, says law enforcers not cooperating” অর্থাৎ-“সালাহ উদ্দীন গুম; উদ্বিগ্ন স্ত্রী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসহযোগিতা”-এই শীরোনামে খবরটি প্রকাশিত হয়। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু আলামত তুলে ধরা হয়। টাইমনিউজবিডির পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটির হুবহু অনুবাদ তুলে ধরা হলো: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দীন আহমদের উদ্বিগ্ন স্ত্রী গত মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, গত ১০ই মার্চ থেকে অপহৃত স্বামীকে খুঁজে পেতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো তাকে কোন সহযোগিতা করছে না। “আমি প্রত্যেকটি মুহুর্ত এই আশায় অতিবাহিত করছি যে তিনি ফিরে আসবেন”, স্ত্রী হাসিনা আহমদ আবেগরুদ্ধ কন্ঠে বলেন। মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত শেষে হাসিনা আহমদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আমি দাবি জানিয়ে আসছি, হয় তাকে আদালতে তোলা হোক অথবা তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক। হাসিনা আহমদের এই অভিযোগের মাত্র একদিন আগে (সোমবার) হাইকোর্টের এক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী চার সংস্থা থেকে আদালতে উপস্থাপিত কোন প্রতিবেদনেই এমন কোন বিষয় প্রতিফলিত হয়নি যাতে প্রমাণিত হয় বিএনপি নেতাকে খুঁজে পেতে তারা পদক্ষেপ নিয়েছেন। এদিকে, প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্রে জানা যায়, যেই রাতে সালাহ উদ্দীন নিখোঁজ হন সেই রাতেই পোশাক পরিহিত র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ান-র্যাবের সদস্যরা উত্তরার রাজলক্ষীতে কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে ‘সড়ক-১৩/বি, সেক্টর ৩, উত্তরা’-এই ঠিকানার অবস্থান জানতে চেয়েছিলেন। ওই এলাকার বাসিন্দারা নিউএজকে আরও বলেন, ১৩/বি সড়কের ৭০ মিটার দক্ষিণের শেষ মাথায় তারা ‘ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ’ লেখা একটি ডাবল কেবিনের ভ্যান এবং একটি সাদা নোয়াহ মাইক্রোবাস পার্কিংরত অবস্থায় দেখেছিলেন। সালাহ উদ্দীনের স্ত্রী হাসিনা আহমদ অভিযোগ করেন, ১০ মার্চ রাত ১০টার দিকে ওই সড়কে অবস্থিত চারতলা ভবনের তৃতীয় তলা থেকে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নিখোঁজ হওয়ার সময় পর্যন্ত এই সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এই ঘটনার সাথে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে এবং এতে বলা হয়েছে তাদের কাস্টডিতে এই বিরোধী নেতা নেই। এর আগে, ওই ভবনের এক কেয়ারটেকার বলেছিলেন, সাদা পোশাকের কয়েকজন ব্যক্তি- যারা নিজেদেরকে ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চের (ডিবি) সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছিলেন-তারা একজনকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ধরে নিয়ে যান। গত সোমবার রাতে ডেপুটি কমিশনার শেখ নাজমূল আলমের নেতৃত্বে ডিবির একটি দল ভবনটির যেই ফ্ল্যাট থেকে সালাহ উদ্দীনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় সেটি পরিদর্শন করেন। উত্তরা ৩ কল্যাণ সমিতির নিরাপত্তা কমান্ডার খোরশেদ আলম সোমবার বলেন, কোন অপরাধী চক্র তাকে (সালাহ উদ্দীনকে) অপহরণ করলে বাড়ির প্রহরীরা তৎক্ষনাত আমাদের অবহিত করতো। স্থানীয় নিরাপত্তারক্ষী ও বাসিন্দাসহ ৭ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে নিউ এজের পক্ষ থেকে সাক্ষাতকার নেয়া হয়, যারা ১০ মার্চ রাতে ১৩/বি সড়কের ওই বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন। কল্যাণ সমিতিতে বহু বছর ধরে কাজ করেন মধ্য বয়সী এমন একজন নিরাপত্তা রক্ষী বলেন, ১০ মার্চ রাত ৯টা থেকে সোয়া ৯টা দিকে র্যাব সদস্যদের বহনকারী একটি প্যাট্রোল ভ্যান কল্যাণ সমিতি অফিসের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল। উল্লেখ্য, স্থানীয় এই কল্যাণ সমিতি উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১৮টি সড়কে এবং ২১টি প্রবেশ পথে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে থাকে। প্রতিদিন রাত ৯টার পর চারটি গেট ছাড়া অত্র এলাকার সব গেটই বন্ধ করে দেয়া হয়। এই চারটি গেটে ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীরা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। মধ্য বয়সী ওই নিরাপত্তা রক্ষী আরও বলেন, আমি তাদের (র্যাব সদস্যদের) অভ্যর্থনা জানাই এবং তাদের একজন আমাকে ১৩/বি সড়কের অবস্থান জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাদেরকে পথ দেখালাম এবং তারা সেদিকে চলে গেল। কালো পিকআপের পেছনের দিকে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় ৪/৫জন ছিলেন এবং সামনে ছিলেন দু’জন’। এই নিরাপত্তারক্ষী যা বলেছেন তা সঠিক বলে দাবি করেন আরও দু’জন নিরাপত্তারক্ষী। মঙ্গলবার এ ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার লেফট্যানেন্ট কর্নেল তুহিন মোহাম্মাদ মাসুদ নিউ এজকে বলেন, “আমি সেখানে (১৩/বি সড়কে) কাউকে পাঠাইনি”। এছাড়া, রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত ব্যাডমিন্টন খেলেন, এমন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ওই রাতে তারা অত্র এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের গাড়ি দেখেছেন। একজন বাসিন্দা বললেন, “সমিতির নিরাপত্তা রক্ষীদের একজন আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন, তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যান”। তিনি আরও বলেন, আমরা তার কথা মতো চলে গেলাম। পরক্ষণেই দেখতে পেলাম একটি সাদা গাড়ি সড়কের দক্ষিণের শেষ মাথায় চলে গেল এবং আরেকটি পুলিশ পিকআপ সড়কের উত্তর মাথায় চলে গেল। প্রত্যক্ষদর্শী ওই বাসিন্দা আরও বলেন, পিকআপটির এক পাশে লেখা ছিল-‘ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ’। অপর এক বাসিন্দা বলেন, “একজন নিরাপত্তারক্ষী আমাদের দিকে এসে বললেন, এখান থেকে চলে যান, এই জায়গা থেকে চলে যান… এখানে সমস্যা হতে পারে”। ওই ব্যাক্তি আরও বলেন, “সড়কে পার্ক করা গাড়ি থেকে আমি একজনকে বেরিয়ে আসতে দেখলাম। নোয়াহ মাইক্রোবাস থেকেও কয়েকজনকে নেমে আসতে দেখলাম যারা চিৎকার করছিলেন। একটি মটরসাইকেলও ছিল।” ওই প্রত্যক্ষদর্শী অবশ্য কাউকে ধরে নিয়ে যেতে দেখেননি। তবে, পরেরদিন বিকেল পর্যন্ত তিনি ওই সড়কে দুটি গাড়ি পার্ক করা অবস্থায় দেখেছেন বলে দাবি করেন। ১৩/বি সড়কের উত্তর কর্নারে থাকা তৃতীয় আরেক বাসিন্দা নিউ এজকে বলেন, ৩/৪জন ব্যাক্তি তার দিকে এগিয়ে এসে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ওই ভবনের নাম্বার ৪৯/বি কীনা। গত বছর নিউ এজের অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে শুধু ঢাকায় ১৯ বিএনপি কর্মীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরে নিয়ে যায় এবং তাদের কাউকেই আর পাওয়া যায়নি। কেবি
Wednesday, March 18, 2015
যেভাবে নিখোঁজ হলেন সালাহ উদ্দীন আহমদ:Time News
যেভাবে নিখোঁজ হলেন সালাহ উদ্দীন আহমদ মো: কামরুজ্জামান বাবলু টাইম নিউজ বিডি, ১৮ মার্চ, ২০১৫ ১৯:৫৪:০৫ বিএনপি নেতা ও সাবেক মন্ত্রী সালাহ উদ্দীন আহমদকে কারা ধরে নিয়ে গেছেন? এরই মধ্যে ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও তার কোন হদিস নেই। পুলিশের মহা-পরিদর্শকসহ (আইজিপি) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এক যোগে দাবি জানিয়ে আসছেন তাদের কেউ সালাহ উদ্দীনকে আটক করেননি। তাহলে কারা আটক করলো একটি বৃহত দলের একজন শীর্ষ নেতাকে
? ঘটনার পর থেকেই গণমাধ্যমে এ নিয়ে নানা ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। বিষয়টি যেন ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতরো রুপ ধারণ করছে। আজ (বুধবার-১৮ই মার্চ ২০১৫) বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী ইংরেজী দৈনিক দি নিউ এজ পত্রিকায় এ বিষয়ে রিপোর্টার মুক্তাদির রশিদের একটি অনুসন্ধানি প্রতিবেদন ছাপা হয়। “SALAH UDDIN DISAPPEARANCE: Wife worried, says law enforcers not cooperating” অর্থাৎ-“সালাহ উদ্দীন গুম; উদ্বিগ্ন স্ত্রী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসহযোগিতা”-এই শীরোনামে খবরটি প্রকাশিত হয়। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু আলামত তুলে ধরা হয়। টাইমনিউজবিডির পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটির হুবহু অনুবাদ তুলে ধরা হলো: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দীন আহমদের উদ্বিগ্ন স্ত্রী গত মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, গত ১০ই মার্চ থেকে অপহৃত স্বামীকে খুঁজে পেতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো তাকে কোন সহযোগিতা করছে না। “আমি প্রত্যেকটি মুহুর্ত এই আশায় অতিবাহিত করছি যে তিনি ফিরে আসবেন”, স্ত্রী হাসিনা আহমদ আবেগরুদ্ধ কন্ঠে বলেন। মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত শেষে হাসিনা আহমদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আমি দাবি জানিয়ে আসছি, হয় তাকে আদালতে তোলা হোক অথবা তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক। হাসিনা আহমদের এই অভিযোগের মাত্র একদিন আগে (সোমবার) হাইকোর্টের এক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী চার সংস্থা থেকে আদালতে উপস্থাপিত কোন প্রতিবেদনেই এমন কোন বিষয় প্রতিফলিত হয়নি যাতে প্রমাণিত হয় বিএনপি নেতাকে খুঁজে পেতে তারা পদক্ষেপ নিয়েছেন। এদিকে, প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্রে জানা যায়, যেই রাতে সালাহ উদ্দীন নিখোঁজ হন সেই রাতেই পোশাক পরিহিত র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ান-র্যাবের সদস্যরা উত্তরার রাজলক্ষীতে কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে ‘সড়ক-১৩/বি, সেক্টর ৩, উত্তরা’-এই ঠিকানার অবস্থান জানতে চেয়েছিলেন। ওই এলাকার বাসিন্দারা নিউএজকে আরও বলেন, ১৩/বি সড়কের ৭০ মিটার দক্ষিণের শেষ মাথায় তারা ‘ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ’ লেখা একটি ডাবল কেবিনের ভ্যান এবং একটি সাদা নোয়াহ মাইক্রোবাস পার্কিংরত অবস্থায় দেখেছিলেন। সালাহ উদ্দীনের স্ত্রী হাসিনা আহমদ অভিযোগ করেন, ১০ মার্চ রাত ১০টার দিকে ওই সড়কে অবস্থিত চারতলা ভবনের তৃতীয় তলা থেকে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নিখোঁজ হওয়ার সময় পর্যন্ত এই সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এই ঘটনার সাথে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে এবং এতে বলা হয়েছে তাদের কাস্টডিতে এই বিরোধী নেতা নেই। এর আগে, ওই ভবনের এক কেয়ারটেকার বলেছিলেন, সাদা পোশাকের কয়েকজন ব্যক্তি- যারা নিজেদেরকে ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চের (ডিবি) সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছিলেন-তারা একজনকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ধরে নিয়ে যান। গত সোমবার রাতে ডেপুটি কমিশনার শেখ নাজমূল আলমের নেতৃত্বে ডিবির একটি দল ভবনটির যেই ফ্ল্যাট থেকে সালাহ উদ্দীনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় সেটি পরিদর্শন করেন। উত্তরা ৩ কল্যাণ সমিতির নিরাপত্তা কমান্ডার খোরশেদ আলম সোমবার বলেন, কোন অপরাধী চক্র তাকে (সালাহ উদ্দীনকে) অপহরণ করলে বাড়ির প্রহরীরা তৎক্ষনাত আমাদের অবহিত করতো। স্থানীয় নিরাপত্তারক্ষী ও বাসিন্দাসহ ৭ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে নিউ এজের পক্ষ থেকে সাক্ষাতকার নেয়া হয়, যারা ১০ মার্চ রাতে ১৩/বি সড়কের ওই বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন। কল্যাণ সমিতিতে বহু বছর ধরে কাজ করেন মধ্য বয়সী এমন একজন নিরাপত্তা রক্ষী বলেন, ১০ মার্চ রাত ৯টা থেকে সোয়া ৯টা দিকে র্যাব সদস্যদের বহনকারী একটি প্যাট্রোল ভ্যান কল্যাণ সমিতি অফিসের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল। উল্লেখ্য, স্থানীয় এই কল্যাণ সমিতি উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১৮টি সড়কে এবং ২১টি প্রবেশ পথে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে থাকে। প্রতিদিন রাত ৯টার পর চারটি গেট ছাড়া অত্র এলাকার সব গেটই বন্ধ করে দেয়া হয়। এই চারটি গেটে ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীরা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। মধ্য বয়সী ওই নিরাপত্তা রক্ষী আরও বলেন, আমি তাদের (র্যাব সদস্যদের) অভ্যর্থনা জানাই এবং তাদের একজন আমাকে ১৩/বি সড়কের অবস্থান জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাদেরকে পথ দেখালাম এবং তারা সেদিকে চলে গেল। কালো পিকআপের পেছনের দিকে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় ৪/৫জন ছিলেন এবং সামনে ছিলেন দু’জন’। এই নিরাপত্তারক্ষী যা বলেছেন তা সঠিক বলে দাবি করেন আরও দু’জন নিরাপত্তারক্ষী। মঙ্গলবার এ ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার লেফট্যানেন্ট কর্নেল তুহিন মোহাম্মাদ মাসুদ নিউ এজকে বলেন, “আমি সেখানে (১৩/বি সড়কে) কাউকে পাঠাইনি”। এছাড়া, রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত ব্যাডমিন্টন খেলেন, এমন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ওই রাতে তারা অত্র এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের গাড়ি দেখেছেন। একজন বাসিন্দা বললেন, “সমিতির নিরাপত্তা রক্ষীদের একজন আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন, তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যান”। তিনি আরও বলেন, আমরা তার কথা মতো চলে গেলাম। পরক্ষণেই দেখতে পেলাম একটি সাদা গাড়ি সড়কের দক্ষিণের শেষ মাথায় চলে গেল এবং আরেকটি পুলিশ পিকআপ সড়কের উত্তর মাথায় চলে গেল। প্রত্যক্ষদর্শী ওই বাসিন্দা আরও বলেন, পিকআপটির এক পাশে লেখা ছিল-‘ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ’। অপর এক বাসিন্দা বলেন, “একজন নিরাপত্তারক্ষী আমাদের দিকে এসে বললেন, এখান থেকে চলে যান, এই জায়গা থেকে চলে যান… এখানে সমস্যা হতে পারে”। ওই ব্যাক্তি আরও বলেন, “সড়কে পার্ক করা গাড়ি থেকে আমি একজনকে বেরিয়ে আসতে দেখলাম। নোয়াহ মাইক্রোবাস থেকেও কয়েকজনকে নেমে আসতে দেখলাম যারা চিৎকার করছিলেন। একটি মটরসাইকেলও ছিল।” ওই প্রত্যক্ষদর্শী অবশ্য কাউকে ধরে নিয়ে যেতে দেখেননি। তবে, পরেরদিন বিকেল পর্যন্ত তিনি ওই সড়কে দুটি গাড়ি পার্ক করা অবস্থায় দেখেছেন বলে দাবি করেন। ১৩/বি সড়কের উত্তর কর্নারে থাকা তৃতীয় আরেক বাসিন্দা নিউ এজকে বলেন, ৩/৪জন ব্যাক্তি তার দিকে এগিয়ে এসে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ওই ভবনের নাম্বার ৪৯/বি কীনা। গত বছর নিউ এজের অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে শুধু ঢাকায় ১৯ বিএনপি কর্মীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরে নিয়ে যায় এবং তাদের কাউকেই আর পাওয়া যায়নি। কেবি
? ঘটনার পর থেকেই গণমাধ্যমে এ নিয়ে নানা ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। বিষয়টি যেন ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতরো রুপ ধারণ করছে। আজ (বুধবার-১৮ই মার্চ ২০১৫) বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী ইংরেজী দৈনিক দি নিউ এজ পত্রিকায় এ বিষয়ে রিপোর্টার মুক্তাদির রশিদের একটি অনুসন্ধানি প্রতিবেদন ছাপা হয়। “SALAH UDDIN DISAPPEARANCE: Wife worried, says law enforcers not cooperating” অর্থাৎ-“সালাহ উদ্দীন গুম; উদ্বিগ্ন স্ত্রী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসহযোগিতা”-এই শীরোনামে খবরটি প্রকাশিত হয়। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু আলামত তুলে ধরা হয়। টাইমনিউজবিডির পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটির হুবহু অনুবাদ তুলে ধরা হলো: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দীন আহমদের উদ্বিগ্ন স্ত্রী গত মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, গত ১০ই মার্চ থেকে অপহৃত স্বামীকে খুঁজে পেতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো তাকে কোন সহযোগিতা করছে না। “আমি প্রত্যেকটি মুহুর্ত এই আশায় অতিবাহিত করছি যে তিনি ফিরে আসবেন”, স্ত্রী হাসিনা আহমদ আবেগরুদ্ধ কন্ঠে বলেন। মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত শেষে হাসিনা আহমদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আমি দাবি জানিয়ে আসছি, হয় তাকে আদালতে তোলা হোক অথবা তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক। হাসিনা আহমদের এই অভিযোগের মাত্র একদিন আগে (সোমবার) হাইকোর্টের এক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী চার সংস্থা থেকে আদালতে উপস্থাপিত কোন প্রতিবেদনেই এমন কোন বিষয় প্রতিফলিত হয়নি যাতে প্রমাণিত হয় বিএনপি নেতাকে খুঁজে পেতে তারা পদক্ষেপ নিয়েছেন। এদিকে, প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্রে জানা যায়, যেই রাতে সালাহ উদ্দীন নিখোঁজ হন সেই রাতেই পোশাক পরিহিত র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ান-র্যাবের সদস্যরা উত্তরার রাজলক্ষীতে কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে ‘সড়ক-১৩/বি, সেক্টর ৩, উত্তরা’-এই ঠিকানার অবস্থান জানতে চেয়েছিলেন। ওই এলাকার বাসিন্দারা নিউএজকে আরও বলেন, ১৩/বি সড়কের ৭০ মিটার দক্ষিণের শেষ মাথায় তারা ‘ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ’ লেখা একটি ডাবল কেবিনের ভ্যান এবং একটি সাদা নোয়াহ মাইক্রোবাস পার্কিংরত অবস্থায় দেখেছিলেন। সালাহ উদ্দীনের স্ত্রী হাসিনা আহমদ অভিযোগ করেন, ১০ মার্চ রাত ১০টার দিকে ওই সড়কে অবস্থিত চারতলা ভবনের তৃতীয় তলা থেকে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নিখোঁজ হওয়ার সময় পর্যন্ত এই সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এই ঘটনার সাথে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে এবং এতে বলা হয়েছে তাদের কাস্টডিতে এই বিরোধী নেতা নেই। এর আগে, ওই ভবনের এক কেয়ারটেকার বলেছিলেন, সাদা পোশাকের কয়েকজন ব্যক্তি- যারা নিজেদেরকে ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চের (ডিবি) সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছিলেন-তারা একজনকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ধরে নিয়ে যান। গত সোমবার রাতে ডেপুটি কমিশনার শেখ নাজমূল আলমের নেতৃত্বে ডিবির একটি দল ভবনটির যেই ফ্ল্যাট থেকে সালাহ উদ্দীনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় সেটি পরিদর্শন করেন। উত্তরা ৩ কল্যাণ সমিতির নিরাপত্তা কমান্ডার খোরশেদ আলম সোমবার বলেন, কোন অপরাধী চক্র তাকে (সালাহ উদ্দীনকে) অপহরণ করলে বাড়ির প্রহরীরা তৎক্ষনাত আমাদের অবহিত করতো। স্থানীয় নিরাপত্তারক্ষী ও বাসিন্দাসহ ৭ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে নিউ এজের পক্ষ থেকে সাক্ষাতকার নেয়া হয়, যারা ১০ মার্চ রাতে ১৩/বি সড়কের ওই বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন। কল্যাণ সমিতিতে বহু বছর ধরে কাজ করেন মধ্য বয়সী এমন একজন নিরাপত্তা রক্ষী বলেন, ১০ মার্চ রাত ৯টা থেকে সোয়া ৯টা দিকে র্যাব সদস্যদের বহনকারী একটি প্যাট্রোল ভ্যান কল্যাণ সমিতি অফিসের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল। উল্লেখ্য, স্থানীয় এই কল্যাণ সমিতি উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১৮টি সড়কে এবং ২১টি প্রবেশ পথে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে থাকে। প্রতিদিন রাত ৯টার পর চারটি গেট ছাড়া অত্র এলাকার সব গেটই বন্ধ করে দেয়া হয়। এই চারটি গেটে ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীরা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। মধ্য বয়সী ওই নিরাপত্তা রক্ষী আরও বলেন, আমি তাদের (র্যাব সদস্যদের) অভ্যর্থনা জানাই এবং তাদের একজন আমাকে ১৩/বি সড়কের অবস্থান জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাদেরকে পথ দেখালাম এবং তারা সেদিকে চলে গেল। কালো পিকআপের পেছনের দিকে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় ৪/৫জন ছিলেন এবং সামনে ছিলেন দু’জন’। এই নিরাপত্তারক্ষী যা বলেছেন তা সঠিক বলে দাবি করেন আরও দু’জন নিরাপত্তারক্ষী। মঙ্গলবার এ ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার লেফট্যানেন্ট কর্নেল তুহিন মোহাম্মাদ মাসুদ নিউ এজকে বলেন, “আমি সেখানে (১৩/বি সড়কে) কাউকে পাঠাইনি”। এছাড়া, রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত ব্যাডমিন্টন খেলেন, এমন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ওই রাতে তারা অত্র এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের গাড়ি দেখেছেন। একজন বাসিন্দা বললেন, “সমিতির নিরাপত্তা রক্ষীদের একজন আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন, তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যান”। তিনি আরও বলেন, আমরা তার কথা মতো চলে গেলাম। পরক্ষণেই দেখতে পেলাম একটি সাদা গাড়ি সড়কের দক্ষিণের শেষ মাথায় চলে গেল এবং আরেকটি পুলিশ পিকআপ সড়কের উত্তর মাথায় চলে গেল। প্রত্যক্ষদর্শী ওই বাসিন্দা আরও বলেন, পিকআপটির এক পাশে লেখা ছিল-‘ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ’। অপর এক বাসিন্দা বলেন, “একজন নিরাপত্তারক্ষী আমাদের দিকে এসে বললেন, এখান থেকে চলে যান, এই জায়গা থেকে চলে যান… এখানে সমস্যা হতে পারে”। ওই ব্যাক্তি আরও বলেন, “সড়কে পার্ক করা গাড়ি থেকে আমি একজনকে বেরিয়ে আসতে দেখলাম। নোয়াহ মাইক্রোবাস থেকেও কয়েকজনকে নেমে আসতে দেখলাম যারা চিৎকার করছিলেন। একটি মটরসাইকেলও ছিল।” ওই প্রত্যক্ষদর্শী অবশ্য কাউকে ধরে নিয়ে যেতে দেখেননি। তবে, পরেরদিন বিকেল পর্যন্ত তিনি ওই সড়কে দুটি গাড়ি পার্ক করা অবস্থায় দেখেছেন বলে দাবি করেন। ১৩/বি সড়কের উত্তর কর্নারে থাকা তৃতীয় আরেক বাসিন্দা নিউ এজকে বলেন, ৩/৪জন ব্যাক্তি তার দিকে এগিয়ে এসে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ওই ভবনের নাম্বার ৪৯/বি কীনা। গত বছর নিউ এজের অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে শুধু ঢাকায় ১৯ বিএনপি কর্মীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরে নিয়ে যায় এবং তাদের কাউকেই আর পাওয়া যায়নি। কেবি
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment