Monday, March 16, 2015

সংকটের মূল কারণ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন:Time News

সংকটের মূল কারণ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন স্টাফ রিপোর্টার টাইম নিউজ বিডি, ১৫ মার্চ, ২০১৫ ১৭:০১:৪৬ বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ড হিটলার ও মুসোলিনকেও হার মানিয়েছে। দেশে সাধারণ মানুষের আজ কোনো নিরাপত্তা নেই পুলিশ বাহিনী দিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। সংবাদপত্র বন্ধ করে গণমাধ্যকর্মীদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ সিভিল রাইটস্ সোসা
ইটি আয়োজিত ‘চলমান পরিস্থিতি: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব অভিযোগ করেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। বক্তারা বলেন, চলমান সংকট একটি রাজনৈতিক সংকট। এর সমাধান রাজনৈতিকভাবেই হতে হবে। তাদের মতে, ৫ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন বর্তমান সংকেটর মূল কারণ। এই সংকট সমাধান না হলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে না। তারা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি সংকট সমাধানে জন্য কোনো উদ্যোগ না নেন তবে খুব শিগগিরই জাতীয় পর্যায়ে সংঘাত দেখা দিতে পারে যাতে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিলীন হতে পারে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমদ। বক্তব্য রাখেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রুহুল আমিন গাজী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদার, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ আযাদ, এডভোকেট হারুনুর রশিদ, জুস্না আক্তার বেবী, সাখাওয়াত ইবনে মঈন প্রমুখ। বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, আজ সাধারণ মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। পুলিশ বাহিনী দিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের কারো কোনো নিরাপত্তা নেই। সংবাদপত্র বন্ধ করে গণমাধ্যকর্মীদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সরকারের এসব কর্মকাণ্ড হিটলার ও মুসোলিনকেও হার মানিয়েছে। সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তারা কোনোভাবেই সরকারের এসব কর্মকাণ্ড মেনে নেবেন না। আজ হোক কাল হোক জনগণ জেগে উঠবে। আর তখন কী হবে তা বলা কঠিন। আওয়ামী লীগের মতো একটা সিনিয়র দল যদি এমন করে তাহলে ভবিষ্যতে তাদের ভাগ্যে কী আছে তা বলা কঠিন। তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশে কতজন মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন আর কতজন পেট্রোলবোমায় নিহত হয়েছেন তার তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি বলেই বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের মতো একজন নেতা নিখোঁজ হয়েছেন। রাজনীতি থেকে এমন একজন দৃঢ়চেতা মানুষ হারিয়ে যাবে তা মেনে নেয়া যায় না। খালেদা জিয়া তার দলের যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিনকে লুকিয়ে রেখেছেন- ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, এ ধরনের কথা কি জাতীয় সংসদে বলা যায়? এর মাধ্যমে সংসদকে অপমান করা হয়েছে। আর এ ধরনের সংসদ তৈরি হয়েছে গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর। পেট্রোলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যার রাজনীতি যেমন দেশের জনগণ পছন্দ করে না। আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কারা পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করছে তার একটি তালিকা তৈরি করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বদরুদ্দোজা চৌধুরী। সভায় এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি সংকট সমাধানে জন্য কোনো উদ্যোগ না নেন তবে খুব শিগগিরই জাতীয় পর্যায়ে সংঘাত দেখা দিতে পারে যাতে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিলীন হতে পারে। তিনি বলেন, চলমান সংকট একটি রাজনৈতিক সংকট। এর সমাধান রাজনৈতিকভাবেই হতে হবে। যদি তা না হয় তবে খুব বেশি দূরে নয়, কাছাকাছি সময়ে জাতীয় পর্যায়ে সংঘাতের আভাস পাচ্ছি। পাকিস্তান ও ভারতের স্বাধীনতার জন্য যে রকম মারামারি হয়েছিল সেই রকম একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিলিন হতে পারে। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ এবং গণতন্ত্র কোনোদিন একসঙ্গে যায়নি, যায়ও না। এটা হল আমাদের সব চেয়ে বড় দু:খ। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে অতীত ও বর্তমানের দিকে তাকিয়ে এবং আপনার আশপাশের লোকগুলোর কথা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিন। তারা কেউ আপনার পাশে থাকেনি। আগামীতেও থাকবে না। তিনি আরো বলেন, ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে দেখুন, মুসোলিনি কিভাবে মারা গেছে। তার মৃত্যুর খবর কেউ জানে না। হিটলারের পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে দেখেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো আলতু-ফালতু কোনো লোক নন। তিনি জাতিসংঘের অত্যন্ত প্রভাবশলী কর্মকর্তা। তারা লোক চিনতে করতে ভুল করেন না। তারানকো যদি বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর জন্য খারাপ বার্তা নিয়ে আসেন, তবে সেটা আমাদের জন্য ভাল হবে না। আমরা অর্থনৈতিকভাবে যতটুকু এগিয়ে গেছি, সেটা অব্যাহত থাকবে না। এসময় তিনি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়ে বলেন, এই সরকার ক্ষমতার ব্যবহার করতে পারেন তবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। তিনি বলেন, এভাবে দেশ চালানো যায় না, দেশ চালাতে অনেক বই পড়তে হয়। বিরোধী দলের নেতা সম্পর্কে বাজে কথা বলে জনগণকে কাছে রাখা যায় না। সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুস্থ থাকলে কিছু ভালো কথাও বলেন, তখন শুনতেও ভালো লাগে। কিন্তু মাঝেমধ্যে এমন কিছু কথা বলেন, তখন সমস্যার সৃষ্টি হয়। তিনিই বর্তমান সমস্যার সৃষ্টি করেছেন, তাকেই এর সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, দেশে যে হারে খুন-গুম-অপহরণ হচ্ছে তাতে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতকে আরো সক্রিয় হতে ও ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। সভায় রুহুল আমিন গাজী বলেন, ৫ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করে অবৈধ সরকার তাদের ইচ্ছামত দেশ চালাচ্ছে। বর্তমান সংকটের মূল কারণ হচ্ছে এই নির্বাচন। এই সংকট সমাধান না হলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে না। আর এর জন্য বিরোধীদল দীর্ঘদিন যাবত আন্দোলন করছে। তিনি বলেন, দেশ এক চরম সংকটকাল অতিক্রম করছে। গুম, খুন, অপহরণ, সহিংসতা, বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ডে মানুষ উদ্বিগ্ন ও ভীত সন্ত্রস্ত। গতকালও সিরাজগঞ্জে শত শত লোকের সামনে ২ জনকে গুলী করে আহত করেছে পুলিশ। এ অবস্থা চলতে দেওয়া যায়না। পেশাজীবী এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ হরতালে চ্যাম্পিয়ন। তারা অতীতে প্রথম দফায় ১৭০দিন এবং দ্বিতীয় দফায় ১৩০ দিন হরতাল করেছিলো। তিনি বলেন, আমরা যেমন ক্রসফায়ারের সমালোচনা করছি তেমনি পেট্রোল বোমা হামলারও সমালোচনা করি। সাংবাদিক এ নেতা বলেন, বিএনপির যুগ্ম মাহাসচিব সালাহ উদ্দিনের খোঁজ নেই। তাকে উঠিয়ে নিয়ে সরকার এখন অস্বীকার করছে। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমের মতই কি তাকে ভাগ্য বরণ করতে হবে? গণতন্ত্রের স্বার্থে সবাই মিলে অর্থবহ সংলাপের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হবে ততদিন এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। শওকত মাহমুদ বলেন, সকল মহল থেকে সংলাপের প্রস্তাব উঠলেও শেখ হাসিনা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে প্রমাণ করেছেন যে তার কাছে দেশ প্রেম নেই। তিনি বিডিআর বিদ্রোহের নায়কের সাথে আলোচনা করেছিলেন তা দেশের মানুষ জানে। আব্দুল হাই শিকদার বলেন, দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায় বিচার নেই। ১৯৭৫ সালেও একই অবস্থা হয়েছিলো। শেখ হাসিনার পিতা এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলেন। শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশ এক চরম সংকটকাল অতিক্রম করছে। বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ডে মানুষ উদ্বিগ্ন ও ভীত সন্ত্রস্ত। বাসা থেকে ধরে নিয়ে পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে। কেবি


No comments:

Post a Comment