
নির্যাতন, গুম-খুন, হামলা-মামলা চালানো হয়েছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘জঘণ্য ও উস্কানিমূলক ভাষায় আমাদেরকে ক্রমাগত আক্রমণ করা হয়েছে। তারপরেও আমরা বারবার একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আলোচনার আহ্বান জানিয়েছি।’ ‘আলোচনার ভিত্তি হিসেবে সাত দফা প্রস্তাব পেশ করেছি। তারা আমাদের আহ্বান ও প্রস্তাবকে তাৎক্ষণিকভাবে নাকচ করে দিয়ে অস্ত্রের ভাষায় সব দমিয়ে দেয়ার পথ বেছে নিয়েছে’ যোগ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সারা দেশে নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার করেছে। সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। মিছিলের ওপর গুলি করেছে। প্রতিবাদের নিয়মতান্ত্রিক সব পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।’ খালেদা জিয়া বলেন, ‘এ অবস্থায় আমরা বাধ্য হয়ে সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছি। কর্মসূচি চলছে এবং পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত তা চলতে থাকবে।’ তিনি দাবি করেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সম্পর্কে দেশে-বিদেশে বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীনরা নাশকতা ও অন্তর্ঘাতের পথ বেছে নিয়েছে। পুলিশী প্রহরার মধ্যে নারী,শিশু ও ছাত্র-ছাত্রীদের বহনকরী যানবাহনে পেট্রোল বোমা মেরে অনেক নিরপরাধ মানুষকে হতাহত ও দগ্ধ করা হয়েছে।’ এ সব পৈশাচিক বর্বরতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ২০-দলীয় জোট নেত্রী বলেন, ‘বিএনপি ও ২০ দল নিরীহ নিরপরাধ জনগণকে হত্যা ও তাদের ওপর আক্রমণ করা কিংবা তাদেরকে পুড়িয়ে মারার নৃশংস অপতৎপরতায় বিশ্বাস করে না।’ ‘মানুষের জীবনের বিনিময়ে আমরা রাজনীতি করতে চাই না,কখনো করিনি। অতীতে যাত্রীবাসে গান পাউডার দিয়ে আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারা,বোমা মেরে ও লগি বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে মানুষ হত্যা এবং পুলিশ খুনের অপরাজনীতি আওয়ামী লীগই করেছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস,এখনো তারাই সুপরিকল্পিতভাবে এসব নৃশংস ঘটনা ঘটাচ্ছে’ যোগ করেন তিনি। খালেদা জিয়া বলেন, এর মাধ্যমে বিএনপি ও ২০ দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা,গ্রেপ্তার ও অত্যাচারের পথ প্রশস্ত করছে সরকার। ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক বোমাবাজদের গ্রেপ্তার না করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ঘর-বাড়িতে হানা দিয়ে তাদের আটক করা হচ্ছে। মহিলাসহ পরিবারের সদস্যদের হেনস্তা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে বিভিন্ন জনপদে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হচ্ছে। এসব হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার জড়িতদের আগামীতে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘দেশের চলমান সংকট নিছক কোনো আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা নয়। এটি রাজনৈতিক সংকট। এর রাজনৈতিক সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা আবারো আহ্বান জানাচ্ছি।’ এ সময় সকল প্রতিকূলতার মধ্যে,নির্যাতন সয়ে অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার জন্য বিএনপিসহ ২০ দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি। শুভবুদ্ধি প্রণোদিত হয়ে কার্যালয় থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়ে থাকলে সরকারকে স্বাগত জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, তাদেরকে হিংসা ও নাশকতা, অন্তর্ঘাত ও জুলুমের পথ থেকে সরে আসুন। এ ছাড়া জনগণের ভোট দেয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিতে অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। গত ৫ জানুয়ারি অবরুদ্ধ অবস্থায় অবরোধ ডাকার পর এ প্রথম সাংবাদিকদের সামনে এলেন খালেদা জিয়া। সোমবার ভোররাতে ওই কার্যালয়ের চারপাশ থেকে পুলিশ ও ব্যারিকেড সরিয়ে নেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনের আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গণি, ড. মঈন খান, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও রফিকুল ইসলাম মিয়া, ব্রি. জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহসহ সিনিয়র কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করে খালেদা জিয়া। মন্তব্য
No comments:
Post a Comment