২ ছাত্রলীগ নেতা আটক, শতাধিক গাছ কেটে অবরোধ লক্ষীপুর করেসপন্ডেন্ট টাইম নিউজ বিডি, ২৭ নভেম্বর, ২০১৪ ০৯:৪২:৫২ লক্ষীপুরের রামগঞ্জে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে আটক করার কারনে শতাধিক গাছ কেটে দুই ঘণ্টা লক্ষীপুর-রামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।বুধবার বিকালে উত্তেজিত নেতাকর্মীরা শহরে কমপক্ষে ১৫টি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরও করে। আন্দোলনের মুখে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে প্রশাসনের কয়েক
দফা দেনদরবার করে সন্ধ্যায় ওই দুই নেতাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। স্থানীয়রা জানায়, বুধবার দুপুরে উপজেলার দাসপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (জেএসসি) পরীক্ষা পরির্দশনে যান রামগঞ্জ উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লা। এ সময় লামচর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা রৌশন আরা পপি অনুমুতি ছাড়া অবৈধভাবে ওই কেন্দ্রে অবস্থান নেন। ঘটনার সময় তাকে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যেতে বলেন সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। খবর পেয়ে রৌশন আরার ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান মাসুদ ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সহকারী শিক্ষা কর্মকতার সঙ্গে অসদাচরণ করেন। পরে খবর পেয়ে রামগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল হাসান ও রামগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোরশেদুল আমীন বাবুকে আটক করে। এর জের ধরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তারা রামগঞ্জ-লক্ষীপর সড়কের পানপাড়া এলাকায় শতাধিক গাছ কেটে বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপি সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে ওই রুটে চলাচলকারী যানবাহনের কয়েক শ’ যাত্রী দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে। একই সময়ে বিক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা শহরের কাঁচা বাজার, থানার সামনে, সোনাপুর চৌরাস্তা বাজার, পানিয়ালা কমার রোড ষ্টেশন কমপক্ষে ১৫টি দোকান ভাঙচুর করে। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রলীগ নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে ওসি’র অপসারণ দাবি করে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা। পরে সন্ধ্যায় আ’লীগ নেতাদের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও রামগঞ্জ থানায় কয়েক দফা বৈঠকের পর ওই দুই ছাত্রলীগ নেতাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রুহুল আমীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহজাহান বাবুল মোল্লা, পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র বেলাল আহমেদ, প্রমুখ। এ ব্যপারে উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে উপজেলার অপর সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, দায়িত্ব না থাকায় এক শিক্ষিকাকে কেন্দ্র থেকে বের হতে বলায় তার ভাইসহ ছাত্রলীগ নেতারা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ করেছে। শিক্ষিকা রৌশন আরা পপি জানান, দায়িত্ব না থাকলেও তার কয়েক শিক্ষার্থীর অসুস্থতার খবর শুনে তিনি কেন্দ্রে যান। এ সময় তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা। উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন জানান, পুলিশ অতি-উৎসাহী হয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে। এতে বিক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুর করে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। একপর্যায়ে আন্দোলনের মুখে পুলিশ তাদের নেতাদেরকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লোকমান হোসেন জানান, আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর আটক দুইজনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সড়কের প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। ইআর
No comments:
Post a Comment