Monday, June 15, 2015

নিজেদের নয় প্রতিবেশীদের কথাও ভাবতে হবে: প্রধানমন্ত্রী:টাইমনিউজ

নিজেদের নয় প্রতিবেশীদের কথাও ভাবতে হবে: প্রধানমন্ত্রী স্টাফ রিপোর্টার টাইম নিউজ বিডি, ১৫ জুন, ২০১৫ ০৯:১০:৩১ লন্ডনে নাগরিক সংবর্ধনায় প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে বাংলাদেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  রোববার স্থানীয় সময় বিকালে এই নাগরিক সংবর্ধনায় ভৌগলিক অবস্থার কারণে বাংলাদেশের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় ভৌগলিক অবস্থার যে গুর
ুত্ব রয়েছে, সে গুরুত্ব কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নতি করাই আমাদের লক্ষ্য।”  দারিদ্র্যকে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অভিন্ন শত্রু হিসাবে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, “শুধু নিজেদের কথা নয়। প্রতিবেশীদের কথাও ভাবতে হবে।” ভারতের সঙ্গে স্থলসীমা বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য শেখ হাসিনাকে দেশের বাইরে এই নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়।  লন্ডনের পার্ক লেইন শেরাটনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে টিউলিপ সিদ্দিকসহ উপস্থিত ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যদের অভিনন্দন জানানো হয়। পরে শেখ হাসিনা ইলফোর্ড সাউথে লেবার এমপি মাইক গ্যাপস, কার্ডিফ সেন্ট্রালের লেবার এমপি জো স্টেভেনস, ইলফোর্ড নর্থের লেবার এমপি অয়েস স্ট্রিটিং, সাটোন ও কিমের কনজারভেটিভ এমপি পল স্কালি রক্ষণশীল দলের এমপি পল স্কালির হাতে ফুলের তোড়া ও বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ইংরেজি সংস্করণ তুলে দেন।  সবশেষে শেখ হাসিনা তার ভাগনি টিউলিপের হাতের ফুলের তোড়া ও বই তুলে দিয়ে কপালে চুমু খান। অভিনন্দনে সিক্ত হয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যরা তাদের কথাও বলেন। নিজের নির্বাচনী এলাকা ও সব সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাইক গ্যাপস ১৯৯৫ সালে পিটার শ্যোরকে বাংলাদেশ সফরের যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনি তখন গৃহবন্দী অবস্থায় ছিলেন। আপনি অনেকদূর পথ পেড়িয়ে এসেছেন।” পিতার চাকরির সুবাদে মিয়ানমারে থাকার কথা উল্লেখ করে পল স্কালি বলেন, “আমি শুটকি খেতে পছন্দ করি।” জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় শেখ হাসিনার উদ্যোগের প্রশংসাও করেন রক্ষণশীল দলের এই সংসদ সদস্য। “জয় বাংলা” বলে নিজের বক্তব্য শেষ করেন স্কালি। আর সালাম দিয়ে বক্তব্য শুরু করে বাংলাদেশ সফরের আশা প্রকাশ করেন অয়েস ট্রিটিং। তিনিও জয় বাংলা বলে বক্তব্য শেষ করেন।  সব শেষে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে টিউলিপ বলেন, “আসলে কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি, নিজের খালার হাত থেকে ফুল পাব।” উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী বলেন, “আপনারা দোয়া করেছেন। আপনাদের সার্পোট ছাড়া আমি ব্রিটিশ এমপি হতে পারতাম না।”রুশনারা আলী ও রূপা হকের সদস্য হওয়ার কথা উল্লেখ করে টিউলিপ বলেন, “আমি খুব গর্বিত বাঙালি তিনজন এমপি হয়েছে।” আগামী ডিসেম্বরে বাংলাদেশ যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনার ভাগনি বলেন, “প্রথমে সিলেটে যাব। তারপর, ঢাকায়।” এক হাজার ভোটে জয়ী হওয়ার কথাও বলেন টিউলিপ। তিনি বলেন, “আমার এলাকায় এক হাজার বাঙালি ভোট রয়েছে।” অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার হাতে মানপত্র তুলে দেন কলাম লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী। এসময়, তিনি শেখ হাসিনার মাথায় হাত রাখেন।  শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে আবদুল গাফফার চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “যখনই বিপদ দেখেছি, সব সময় ওনার লেখনি সাহস জুগিয়েছে।” আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “মাঝে মধ্যে কষ্ট দিয়েছে। সেটাও ভালো। সেটা থেকে আমরা সতর্ক হওয়ার সুযোগ পেয়েছি।” মঞ্চে বসে থাকা গাফফার চৌধুরী এসময় মিটমিট করে হাসছিলেন।  শেখ হাসিনা বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে বলেন, “এতো প্রশংসা পাওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। আমার পরিচয়, আমি জাতির পিতার কন্যা।” “আমার বাবার অসমাপ্ত কাজ শেষ করাই আমার লক্ষ্য।” শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অনেক বাঁধা আসবে। সেই প্রতিকূলতা ঠেলেই এগিয়ে যেতে হবে।” শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করে আরও বলেন, “বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমার মিলে আমরা যৌথভাবে যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। তিন কোটি মেট্রিক টনের বেশি অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভূমিকম্পের পর নেপালে দশ হাজার মেট্রিক টন চাল পাঠানোর কথাও বলেন। তিনি বলেন, “নেপালের প্রয়োজন হলে আমরা এক লাখ মেট্রিক টন চাল পাঠানোর কথা বলেছি। আমরা এই সক্ষমতা অর্জন করেছি।” শেখ হাসিনা বলেন, “ভূটান, নেপাল, ভারত আর আমরা মিলে সহযোগিতার কথা বলেছি।” অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, “আমাদের স্বপ্ন অনেক বড়। দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।” যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও বক্তব্য রাখেন।  অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।  অনুষ্ঠানে শুরুতেই যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতারা শেখ হাসিনার হাতে ফুল তুলে দেন। এএইচ

No comments:

Post a Comment