দলীয় সমর্থন পেতে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে: টিআইবি নিজস্ব প্রতিবেদক আরটিএনএন ঢাকা: সদ্য শেষ হওয়া তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সমর্থন পেতে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা, দলীয় তহবিল এবং উর্ধ্বতন নেতা-উপদেষ্টাদেরকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে দিয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি)- এর নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সোমবা
র দুপুরে টিআইবির ধানমন্ডি অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. রেযাউল করিম ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন নিয়ে সংস্থাটির বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘প্রার্থীরা দলীয় সমর্থন পেতে রাজনৈতিক দলের তহবিলে, দলের উর্ধ্বতন নেতা-উপদেষ্টার সঙ্গে অর্থ লেনদেন করে দলীয় সমর্থন পেয়েছেন প্রার্থীরা। দলের সমর্থন পেতে চট্টগ্রাম সিটির মেয়র প্রার্থীদেরকে ২০ লাখ থেকে ৭ কোটি টাকা দিতে হয়েছে। তবে ঢাকায় এমন লেনদেনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে রেযাউল করিম দাবি করেন। ‘চট্ট্রগামে কাউন্সিলরদের দিতে হয়েছেদুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা। ঢাকার দুই সিটির কাউন্সিলরদের এক থেকে আট লাখ টাকা দিতে হয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি টাকা দিয়েছেন সরকার দলীয় প্রার্থীরা।’ টিআইবির গবেষক বলেন, এসব অর্থ নিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা। আর প্রার্থীদের পক্ষে এসব পরিশোধ করেছেন স্থানীয় ঠিকাদার, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের একাংশ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রার্থী নিজের পকেট থেকেও দিয়েছেন।’ ঢাকায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা অর্থ লেনদেন করেছেন গড়ে ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, আর চট্টগ্রামে করেছেন ৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থীরা ঢাকায় করেছেন ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, চট্টগ্রামে করেছেন ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ঢাকায় করেছেন ৮৩ লাখ টাকা আর চট্টগ্রামে করেছেন ৩৭ লাখ টাকা। ঢাকার নয়জন মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে মাত্র একজন নির্ধারিত অর্থ সীমার মধ্যে ব্যয় করেছেন। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণে নির্ধারিত সীমার চেয়ে ১১ গুণ বেশি অর্থ নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যয় করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ব্যায়সীমা ৫০ লাখ টাকা হলেও একজন ছাড়া সবাই অতিরিক্ত খরচ করেছেন। সরকার দলীয় প্রার্থী সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করেছেন। এখানে সর্বোচ্চ ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ টাকা। ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটিতে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় সীমা হলেও সব প্রার্থীই বেশি খরচ করেছেন। এক্ষেত্রেও সরকার দলীয় প্রার্থীরা এগিয়ে। ঢাকা দক্ষিণে সর্বোচ্চ ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আর চট্টগ্রামে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। কাউন্সিলর পর্যায়েও এ সংক্রান্ত ব্যাপক অনিয়ম ঘটেছে। চট্টগ্রামে একেকজন কাউন্সিলর প্রার্থী গড়ে ২৩ লাখ টাকা এবং ঢাকায় গড়ে ১৬ লাখ টাকা করে ব্যয় করেছেন। এছাড়া প্রতিপক্ষের প্রভাবশালী নেতাদের বসিয়ে দিতে বিরাট অংকের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে টিআইবির গবেষণায় উঠে এসেছে। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচনে সমর্থন লাভ এবং প্রচার প্রচারণার জন্য অর্থ ব্যয়, এই দুই ক্ষেত্রেই বড় ধরনের অনিয়ম পেয়েছে টিআইবি। মন্তব্য
No comments:
Post a Comment