গীর্জায় ভীড় নেই, জমজমাট নাইট ক্লাব, বার; সময়ের আবর্তনে কাঠমন্ডু মো: কামরুজ্জামান, কাঠমন্ডু থেকে টাইম নিউজ বিডি, ২১ নভেম্বর, ২০১৪ ২১:৫০:৪১ হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে একটি প্রেমময় পৃথিবী গড়ার যেই বারতা নিযে এই ভুবনে পদার্পণ করেছিলেন শান্তির অগ্রদূত শ্রী গৌতম বুদ্ধ তারই জন্মভূমি ও অনুসারীদের অন্যতম প্রধান দেশ নেপাল। দেশটির রাজধানী কাঠমন্ডু। চারদিকে ঘিরে থাকা হিমালয়ের বিশালতার মাঝে ছোট্ট নেপালকে বলা হয় হিমালয়
কন্যা। আর রাজধানী কাঠমন্ডুকে সেই হিসেবে কন্যার মাথার মুকুট বললে খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না। কিন্তু কাঠমন্ডু এখন আর নেপালীদের দখলে নেই। আকাশ সংস্কৃতির দোলায় যেন দুলছে কাঠমন্ডু। আর সেই দোলায় অনেকটাই হারিয়ে গেছে নেপালের তরুণ প্রজন্ম। কাঠমন্ডুর থামেলে একটি হোটেল কথা হচ্ছিল হাস্তা জসি নামের এক নেপালীর সাথে। জিজ্ঞাস করেছিলাম তোমাদের জাতীয় পোশাক কী? বড়ই আশ্চর্যের বিষয় সেই নেপালী তার জাতীয় পোশাকের কথা ঠিক মতো বলতে পারলো না। শুধু জানালো তাদের ঐতিহ্যবাহী টুপীর কথা। থামেলসহ কাঠমন্ডুর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক গীর্জা। বাধনাথ স্টুপা, স্বাম্ভুনাথ ও পাশুপাতিনাথসহ কত যে ছোট-বড় গীর্জা চোখে পড়লো তার হিসেব নেই। কিন্তু এসব গীর্জায় খুব কম নেপালীকেই যেতে দেখা যায়। নতুন প্রজন্ম যায় না বললেই চলে। তবে বেড়াতে আসা পর্যটকদের অনেকেই শুধুমাত্র পরিদর্শনের জন্য এসব টেম্পল বা গীর্জায় হরহামেশা গিয়ে থাকেন। এদিকে, নেপালের রাস্তায় রাস্তায় নাইটক্লাব ও বারের দোকান চোখে পড়লো। ইউরোপ-আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্ব থেকে ভ্রমনে আসা পর্যটকদের পাশপাশি নেপালের তরুন প্রজন্মের একটি বড় অংশই নিয়মিত যাতায়াত করে এসব ক্লাব ও বারে। পোশাক-আশাকে নেপালীদের মধ্যে নিজস্ব সংস্কৃতি বলতে মাথায় কারো কারো ঐতিহ্যবাহী টুপি, তবে তাও পঞ্চাশোর্ধদের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। বাকিরা সবাই পশ্চিমা ঢংয়ে চলাফেরা করে। তবে, শহরের মাঝে বেশকিছু জিমনেসিয়াম চোখে পড়লো। শারীরিক সৌন্দর্য ও ফিটনেসের ব্যাপারে নেপালীরা বেশ সচেতন হয়ে উঠেছে তারই প্রমান পাওয়া গেল এসব জিমনেসিয়ামে। উঠতি বয়সী তরুন-তরুনীদেরই দেখা গেল বেশি এসব জিমনেসিয়ামে। ইউরোপ-আমেরিকা থেকে আসা আধুনিক মানুষগুলোকে দেখে তাদের মতো হওয়ার চেষ্টায় কসরতের যেন শেষ নেই নেপালীদের। নেপালী যুবক জসিকে জিজ্ঞেস করলাম তোমরা কিভাবে তোমাদের নিজেদের সংস্কৃতিকে স্মরণ কর। তার জবাব, সারা বছর হাজার হাজার বিদেশী পর্যটক পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের টানে ভীড় করে নেপালে। আর নেপালের মূল অর্থনীতিই এই পর্যটন শিল্পকে ঘিরে। আমরা এসব বিদেশীদের কাছ থেকে কিভাবে আমাদের স্বার্থ আদায় করতে পারবো সেই কাজেই আমাদের সারা বছর কাটে। মেরিল নিউপ্যান নামে আরেক নেপালীর সাথে কথা হয় একই বিষয়ে। তার জবাবও অনেকটা জসির মতোই। তবে, নিজেদের ইতিহাস ঐতিহ্য ভুলে গেলে চলবে না বলে জানালেন নিউপ্যান। এদিকে, ১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তারা আসতে শুরু করেছেন নেপালে। এদিকে, কাঠমন্ডুর হোটেল রেডিসনে খোলা হয়েছে মিডিয়া সেন্টার। সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের খবর সংগ্রহ করতে আসা বিদেশী সাংবাদিকদের শুক্রবার দুপুর থেকে এক্রেডিটেশন কার্ড দেয়া হচ্ছে। শনিবার শুরু হতে যাচ্ছে সার্কের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। নেপালী পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয় সূত্র জানিয়েছে, সার্কের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে, সম্মেলনের কোন প্রভাবই যেন পড়েনি বিদেশী পর্যটকদের ওপর। নেপালের রাস্তায় বের হলেই চোখে পড়ে হাজার হাজার পর্যটক, যারা নিয়মিত নেপাল পরিদর্শনের অংশ হিসেবেই কাঠমন্ডুতে এসেছেন। অবশ্য সার্ক শীর্ষ সম্মেলনকে ঘিরে পুরো কাঠমন্ডুজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাস্তায় টহল পুলিশের সংখ্যা অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে। গাড়ি চলাচলেও নিয়ন্ত্রন বাড়ানো হয়েছে। কেবি
No comments:
Post a Comment