ফের উত্তপ্ত ফুলবাড়ী, চলছে অবরোধ দিনাজপুর করেসপন্ডেন্ট টাইম নিউজ বিডি, ২৭ নভেম্বর, ২০১৪ ০৮:৫১:৫৯ এশিয়া এনার্জির কান্ট্রিডিরেক্টর গ্যারি লাইয়ের এলাকায় আগমন ও সুবিধাভোগিদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করার প্রতিবাদে আবারও ফুঁসে উঠেছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীবাসী। তেল-গ্যাস,খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর জাতীয় রক্ষা কমিটি এবং ফুলবাড়ীবাসীসহ খনিবিরোধী বিক্ষুদ্ধ জনতা দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ
করে বুধবার দিনব্যাপী বিক্ষোভ করেছে। ভাংচুর করেছে এশিয়া এনার্জি’র অফিস। এরই প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘন্টা সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ডাক দিয়েছে। গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় স্থানীয় নিমতলা মোড়ে এক পথ সভায় এই কর্মসুচি ঘোষণা করেন তেলগ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদুৎবন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহবায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল। তেল-গ্যাস,খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর জাতীয় রক্ষা কমিটি এবং ফুলবাড়ীবাসী দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে বুধবার দিনব্যাপী বিক্ষোভ করেছে। ফুলবাড়ী এশিয়া এনার্জীর রাজরামপুর ফকিরপাড়া ওয়ার্কশপ এরিয়াতে এশিয়া এনার্জী করপোরেশনের গ্যারী লাই চীফ অপারেশন অফিসার ও এশিয়া এনার্জির অন্যান্য কর্মকর্তারা বিভিন্ন উপজেলার জনগনকে নিয়ে বুধবার সকাল ১০টায় মতবিনিময় সভা শুরু করে। এদিকে ফুলবাড়ী উপজেলা তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির ৬ থানার সমন্বয়ক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম বাবলু, ও তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটির সাবেক সদস্য সচিব সাবেক পৌর কমিশনার এস.এম নুরুজ্জামান সকাল সাড়ে ১১টায় তাদের মতবিনিময় সভায় গিয়ে তাদের কার্যক্রম দেখে ফিরে এসে ফুলবাড়ী পৌরশহরের নিমতলা মোড়ে রাস্তা অবরোধ করেন। এতে দূরপাল্লার শত শত যানবাহন রাস্তা’র দু’ধারে আটকা পড়ে। সেই সাথে লাঠিসোটা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ফুলবাড়ী তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটি। এদিকে ফুলবাড়ীর সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের আহবায়ক, পৌর মেয়র মুর্তুজা সরকার মানিক ফুলবাড়ী নিমতলা মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। স্থানীয় জনগন এশিয়া এনার্জীর অফিসের অভিমুখে রওনা হলে ফুলবাড়ী যমুনা ব্রিজের পাশ্বে পুলিশ ব্যারিকেট দিলে ব্যারিকেট ভেঙ্গে গিয়ে এশিয়া এনার্জীর অফিসে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর করে। পরে তেল-গ্যাস জাতীয় রক্ষা কমিটি এশিয়া এনার্জী গিয়ে হামলা ও ভাংচুর করেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন বাধা দিলেও তারা বাধা উপেক্ষা করে হামলা ও ভাংচুর শুরু করেন। এতে অফিসের ব্যাপক ক্ষতি এবং দুটি গাড়ী ভাংচুর করা হয়। অপরদিকে সড়ক অবরোধ অব্যাহত রয়েছে। এক পর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ জনতা এশিয়া এনার্জির অফিস, গাড়িসহ ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরুজ্জামান ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এবিএম রেজাউল ইসলাম শত চেষ্টা করেও বিক্ষুদ্ধ জনতাকে শান্ত করলে বেলা আড়াইটায় গ্যারি লাই প্রশাসনের সহায়তায় ফুলবাড়ি ত্যাগ করেন। পৌর মেয়র ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মুর্তুজা সরকার মানিক, তেল গ্যাস জাতীয় কমিটির আহবায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল, অন্যতম সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবলু, সদস্য সচিব জয় প্রকাশ গুপ্ত, সাবেক সদস্য সচিব এসএম নূরুজ্জামান জামান ও সঞ্জিত প্রসাদ জিতু। তারা বলেন, এশিয়া এনার্জির এই গ্যারি লাইদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ফুলবাড়ীর তিনজন যুবকের রক্ত ঝরছে। যাদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি। সরকারের সাথে সম্পাদিত ৬ দফা চুক্তিতে উল্লেখ আছে এশিয়া এনার্জি ফুলবাড়ীসহ বাংলাদেশের কোথাও কয়লাখনি নিয়ে কোন তৎপরতা চালাতে পারবে না। কিন্তু ফুলবাড়ীকে অশান্ত করার জন্য গ্যারি লাই ফুলবাড়ীতে এসেছিলেন। এ কারণে তার বিদায়টাও সেভাবেই ২০০৬ সালের মতাই দেয়া হলো। এশিয়া এনার্জির কান্ট্রিডিরেক্টর গ্যারি লাই বলেন, এটা আমার অফিস। আমি এখানে আসতেই পারি বলেই এসেছি। আমার ইচ্ছাতেই আবার চলে যাবো। কারো ইচ্ছা বা অনিচ্ছার ওপর আমার যাওয়া-আসা নির্ভর করে না। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এবিএম রেজাউল ইসলাম বলেন, গ্যারি লাই ফুলবাড়ীতে এসেছেন এমন তথ্য আমাদের কোন দপ্তর থেকে জানানো হয়নি বলেই আমরা তার আগমন নিয়ে কিছুই জানি না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গ্যারি লাই একজন বিদেশি। তিনি ফুলবাড়ীতে আসলে অবশ্যই প্রশাসনকে অবগত করা হতো। কিন্তু আমাদের কোন কিছুই জানানো হয়নি। এআর
No comments:
Post a Comment