Wednesday, May 13, 2015

আওয়ামী লীগ জাতীয়তাবাদ চুরি করেছে:খালেদা:টাইমনিউজ

আওয়ামী লীগ জাতীয়তাবাদ চুরি করেছে:খালেদা স্টাফ রিপাের্টার টাইম নিউজ বিডি, ১৩ মে, ২০১৫ ০১:০৩:১৩ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘বিএনপিই হল প্রকৃত জাতীয়তাবাদী শক্তি। আওয়ামী লীগ জাতীয়তাবাদ চুরি করেছে।’ গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার রাতে ‘বর্তমান রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এই ম
তবিনিময় সভার আয়োজন করে। খালেদা জিয়া বলেন, ‘যারা দেশের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করে, মানুষ খুন করে, গুম করে, জনগণের অধিকার কেড়ে নেয় তাদের মুখে জাতীয়তাবাদ মানায় না।’ বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে ‘অন্ধ’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার ও নির্বাচন কমিশন যদি পত্রিকা দেখে তাহলে তারা বলতে পারে না নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। এই যদি হয় সুষ্ঠু নির্বাচনের নমুনা তাহলে ভবিষতে কেউ নির্বাচনে অংশ নেবে না এবং সুষ্ঠু নির্বাচনও হবে না।’  বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘দেশ কঠিন অবস্থার থেকে বের হতে পারছে না। আমি একা দিক নির্দেশনা দিলে হবে না। তারা (আওয়ামী লীগ) সব জায়গায় অক্টোপাসের মতো আটকে ফেলেছে। আমাদের সকলে মিলে চিন্তা ভাবনা করে দেশকে এ অবস্থা থেকে বের করে আনতে হবে।’ খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। অশান্তি ও সহিংসতা চাই না। এ সরকার দেশকে একটা কারাগারে পরিণত করেছে। ২০ দলের এক লাখের কাছাকাছি নেতাকর্মী জেলে। বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে। অনেককে গুম করা হয়েছে। একটা দেশের মানুষের ওপর এত মামলা করলে সে দেশের উন্নতি হবে কী করে। সে দেশের কিছু থাকে? দলের অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার না হলেও হুলিয়া নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তারা আদালতে যেতে পারছেন না।’ বেগম জিয়া বলেন, ‘মানুষ জুলুম-অত্যাচার থেকে রেহায় চায়। জুলুম অত্যাচার থেকে মুক্তি পেলে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।’ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে উদ্দেশ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এরশাদ মুক্তিযোদ্ধাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছেন। বিএনপি হলো মুক্তিযোদ্ধাদের দল। আওয়ামী লীগ বলে তারা মুক্তিযোদ্ধের পক্ষের শক্তি। যারা মুক্তিযোদ্ধ করেনি তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলেই শান্তি পায়। কোথায় মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে তারা তা-ই দেখেনি।’ তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত লিস্ট হলে তাদের রিকশা চালাতে হতো না। ভিক্ষা করতে হতো না। পঙ্গু হয়েও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত থাকতে হতো না। তাদের জন্য হাসপাতাল করার প্লান ছিল। কিন্তু ৫ বছরে করা সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যতে অবশ্যই চেষ্টা করব। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে সরকারের লোকেরা নারীদের লাঞ্ছনা করেছে। এ কারণে তাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ। বরং প্রতিবাদকারী ছাত্রদের ওপর হামলা করছে পুলিশ। এই সরকারের লজ্জা নেই। তারা নিলজ্জ।’ তিনি বলেন, ‘দেশ পুলিশি রাষ্ট্র হয়ে গেছে। এরা মাথায় টার্গেট করে পায়ে গুলি করে, যাতে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যায়।’ খালেদা জিয়া বলেন, ‘পুলিশ ও র‌্যাব রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা মানুষ তুলে নিয়ে যাবে, খুন করবে, গুম করবে, লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেবে। আজকে কেউ নিরাপদ নয়। এক মাত্র আল্লাহ ছাড়া কারও ওপর ভরসা করার উপায় নেই। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করতে পারবেন।’ বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘সব পুলিশকে খারাপ বলব না। কয়েক জন আছে তাদের নাম মুখে নেওয়া যায় না। ৫ বছর ১০ বছর, ২০ বছর পর হলেও এদের কঠিন পরিণতি হবেই।’ এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি দেশ রক্ষার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার জনগণের সমর্থনে টিকে নেই, তারা র‌্যাব-পুলিশের ওপর ভর করে টিকে আছে। এ জন্যই তারা নিবার্চন দিতে ভয় পায়। জনগণ তাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই তারা নির্বাচনে কারচুপি করে জয়ী হয়। সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভয় পায়। যারা দেশ স্বাধীন করেছে তাদের ওপর হামলা করে। তাদের সম্মান দেয় না।’ তিনি বলেন, ‘সত্যের জয় হবেই হবে। ন্যায়ের জয় হবেই। হয়তো একটু সময় লাগবে।’ তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীসহ সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি জানান। এ ছাড়া সরকারের অপকর্ম জনগণের সামনে তুলে ধরতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। মতবিনিময়ে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজীজ উলফাৎ, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম শফিউজ্জামান খোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি সাদেক খান, মুক্তিযোদ্ধা ইসমাঈল হোসেন বেঙ্গল, মুহিউদ্দিন শাহজাহান, এম আফজাল হোসেন, মাহবুব হোসেনসহ ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা। এ ছাড়া কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিমও উপস্থিত ছিলেন। এমএইচ  

No comments:

Post a Comment