Sunday, May 17, 2015

ভোল পাল্টালেন আইজিপি; নারী লাঞ্ছনাকারীদের ধরিয়ে দিলে লাখ টাকা:টাইমনিউজ

ভোল পাল্টালেন আইজিপি; নারী লাঞ্ছনাকারীদের ধরিয়ে দিলে লাখ টাকা স্টাফ রিপোর্টার টাইম নিউজ বিডি, ১৭ মে, ২০১৫ ১৩:১৩:৫৬ পহেলা বৈশাখে নারী কেলেঙ্কারির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত যে কাউকে ধরিয়ে দিতে পারলে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশের মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) শহিদুল হক। এছাড়াও এ বিষয়ে যিনি তথ্য দিবেন তার পরিচয় গোপন রাখা হবে। আজ (রোববার)বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এক সাংবাদিক সম্ম
েলনে আইজিপি শহিদুল হক এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ইতিপূর্বে পহেলা বৈশাখের ওই নারী কেলেঙ্কারীর ফুটেজ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু কোন তথ্য আমরা পাইনি। সংবাদ সম্মেলনে শহীদুল হক বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা আট নারী লাঞ্ছনাকারীর ছবি গণমাধ্যমে দেওয়া হবে।প্রয়োজনে এজন্য আমরা ওই ফুটেজসহ সফট কপি গণমাধ্যমকে সরবরাহ করবো বলেও জানান আইজিপি। উল্লেখ্য, বাংলা নববর্ষের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন কয়েকজন নারী। ওই দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে এ ঘটনা ঘটে। নিপীড়নকারীদের ঠেকাতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি লিটন নন্দীর হাত ভেঙেছে। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে এই ঘটনা জানানো হলেও তাঁরা যথাসময়ে ব্যবস্থা নেননি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র ইউনিয়ন নেতা লিটন নন্দী বলেন, বাংলা নতুন বছর উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানুষের প্রচণ্ড ভিড় ছিল। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শাহবাগ থেকে টিএসসি আসার পথে তারা কয়েকজন দেখেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে ৩০-৩৫ জনের একদল যুবক বেশ কয়েকজন নারীর ‘শ্লীলতাহানি’ করছে। তারা কারও কারও শাড়ি ধরে টান দিচ্ছিল। কয়েকজনকে তারা প্রায় বিবস্ত্রও করে ফেলে। এ সময় তিনি সেখানে বাধা দিতে গেলে ওই যুবকদের ধাক্কায় পড়ে যান এবং হাতে ব্যথা পান। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে লিটন নন্দী বলেন, ‘এ দৃশ্য বর্ণনা করা যায় না। আমি আমার পাঞ্জাবি খুলে এক নারীকে দিয়েছিলাম। আরেকটি মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। ওই যুবকেরা ভিড়ের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ধরে এই ঘটনা ঘটায়। আমরা পুলিশ সদস্য ও প্রক্টরকে ঘটনা জানালেও তাঁরা কেউ যথাসময়ে আসেননি।’ এ ঘটনায় ১৬ এপ্রিল স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল দেয়হাইকোর্ট। ‘তিন-চারটা ছেলের দুষ্টামি’! এর আগে গত ১২ই মে পুলিশের আইজিপি বলেছিলেন, পহেলা বৈশাখে টিএসসির সামনে নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ‘তিন-চারটা ছেলের দুষ্টামি’।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লিটন নন্দী এ ঘটনা নিয়ে যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন তা সঠিক নয় বলেও দাবি করেন তিনি। পুলিশ সদর দপ্তরে কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিকদের দেয়া সাক্ষাৎকারে পুলিশের আইজিপি এমন মন্তব্য করেছিলেন যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। অনেকটা তাচ্ছিল্যের স্বরেই আইজিপি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে চার-পাঁচটি ছেলে দুই-তিনটা মেয়েকে শ্লীলতাহানি করলো। যাদের সামনে এই ঘটনা ঘটালো সেই পাবলিকরা তাদের কেন ধরল না? পাবলিকই তো তাদের শায়েস্তা করতে পারত। প্রত্যেক নাগরিকের আইনগত অধিকার আছে, তাদের সামনে অপরাধ ঘটলে তারাই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারবে। এতে পুলিশের গ্রেপ্তার করা লাগত না!’ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিপীড়নের শিকার এক মেয়েকে উদ্ধারকারী ছাত্র ইউনিয়নের নেতা লিটন নন্দীর কথা ঠিক নয় দাবি করে আইজিপি বলেন, ‘লিটন নন্দী একেক জায়গায় একেক ধরনের কথা বলেন। তবে লিটন নন্দীর কথা ধরে নিলেও দেখা যায়, পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। লিটন নন্দীর বক্তব্য, পুলিশ লাঠিপেটা করে দুটি মেয়েকে উদ্ধার করে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ভাড়া করে দিয়েছে।’ এরপর একেবারে আঞ্চলিক ভাষায় আইজিপি বলেন, ‘তিন-চারটা ছেলে দুষ্টামি করতাছে, মেয়েদের শ্লীলতাহানি করছে, কেউ আগায়া আসল না, বাকি লোক তাকিয়ে দেখল। একটা লোকও তো বলল না, এই লোকটাকে তারা চেনেন। তারা তাদের বাড়ির পাশের।’ গণমাধ্যমে পুলিশের পক্ষ থেকে সেদিনের ভিডিও ফুটেজ দেয়া হয়েছিল, যাতে দায়ীদের ধরতে জনগণ সহযোগিতা করে। কিন্তু একটি লোকও তথ্য দেয়নি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘এতে শুধু পুলিশকে দায়ী করলে হবে না।’ এমকে/এআর/কেবি

No comments:

Post a Comment