বাড্ডায় খুন: পুলিশের সোর্স ও দলীয় কোন্দল নিয়ে রহস্যের জট! মুন্নাফ রশিদ টাইম নিউজ বিডি, ১৯ মে, ২০১৫ ০৯:০৯:৪০ রাজধানীর মধ্যবাড্ডার কুমিল্লা পাড়া এলাকার নূর মসজিদ গলির ১৩৭/১ নং বাসার পাশে নৃসংশভাবে খুন হন পুলিশের সোর্স বলে পরিচিত দুলাল হোসেন। মাথা, ঘাড় এবং হাতে মোট ৪টি কোপ মেরে তাকে হত্যা করা হয়। গত শনিবার (১৬মে ’১৫) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে মাত্র দুই জন এ ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছ
ে সে ব্যাপারে কেউ মুখ না খুললেও পুলিশের দাবি দলীয় কোন্দলই এ হত্যার মূল কারণ। সোমবার সরেজমিনে জানা যায় মধ্য বাড্ডার কুমিল্লা পাড়ার নূর মসজিদ গলির ৯৩/১ নং ছয় তলা বাসার কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করেন তার বাবা দেলোয়ার হোসেন। দেলোয়ার হোসেনের গ্রাম চাঁদপুর জেলার বাবুর হাট। এই বাসা থেকে একটু সামনে গেলেই একটা মোড়। মোড়ের ডানে ৪ তালার একটি বাসা। বাসা নং ১৩৭/১। যেখানে তার ছোট বউ কাকলি তার মা, বড় ভাই এবং ছোট মেয়েসহ ৪ তালায় থাকেন। এই বাসার পাশেই দুলালকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। দুলালের বাবার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার ছেলেকে কারা এবং কেন হত্যা করেছে তার সঠিক বিচার আমি চাই। আমার ছেলের কারো সাথে কোন দন্দ্ব বা টাকা পয়সার লেনদেন ছিল না। আমি শুধু জানতাম দুলাল বাড্ডা থানা যুবলীগের সভাপতি কাউছার মাহমুদের সাথে চলা ফেরা করতো। তবে কখন কোথায় যাচ্ছে, কি করছে সে ব্যাপারে আমরা কিছু জানতাম না। সে যে দুইটা বিয়ে করছে তাও আমরা কেউ জানতাম না। দুলাল তার বড় স্ত্রী শিরিন এবং নয় বছরের মেয়ে দোলাকে নিয়ে বাড্ডার ময়নারবাগ এলাকায় থাকতেন। দ্বিতীয় কোন স্ত্রী আছে কিনা সে ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে পারে না। দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাপারে কাউকে সে কোন দিন কিছূ বলেনি। দুলালের বড় স্ত্রী শিরিন জানান, আমার স্বামী পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতো এবং বাড্ডা থানা যুবলীগের সভাপতি কাউছার মাহমুদের সাথে চলা ফেরা করতো। সব সময় তার সাথে থাকতো এবং গভীর রাত পর্যন্ত সে চলা ফেরা করতো। কিন্তু তার সাতে কোনদিন তার দন্দ্ব হয়নি। তবে সে কি কাজ করতো সে ব্যাপারে তার স্ত্রী কিছু বলতে পারেনি। তার দ্বিতীয় কোন স্ত্রী আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে আমার কাছে কোন দিন দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করেনি। আমি শুধু জানতাম কাকলি নামে ওই মেয়ের বাড়ি সে মাঝে মধ্যে যেত এবং কথা বার্তাও বলতো। কিন্তু আমার কাছে কোন দিন তাদের বিয়ে হয়েছে কিনা বলেনি। আমি জানতাম না তার দ্বিতীয় কোন বউ আছে কিনা। তবে সে মারা যাওয়ার পর কাকলি বলছে তাদের নাকি বিয়ে হয়েছিলো। বড় স্ত্রী শিরিন আরো বলেন, যখন এ ঘটনা ঘটে তার কিছুক্ষণ আগে কাকলি তাকে খাইতে আসতে বলে। তখন সে কাউছার মাহমুদের সাথেই ছিলো। কাউছার মাহমুদকে সে বলে আমি খাইতে যাচ্ছি। তাই বলে সে মটর সাইকেলে করে ৩-৪ মিনিটের মধ্যে কাকলির বাসার সামনে আসে। মটর সাইকেল থেকে নামতে না নামতেই তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তারা পালিয়ে যায়। কিন্তু সে যে ওই খানে আসবে তা ওই কাকলি ছাড়া আর কেউ জানতো না। দুলালের ছোট স্তী কাকলির সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমাদের বিয়ে হয় ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসের ৩ তারিখে। তবে তার সাথে আমার কোন দিন ঝগড়া হয়নি। ওইদিন আমি ফোন করার পর ও আমার এখানে খাইতে আসছিলো। আর এখানে আসার পরই এ ঘটনা ঘটে। তার চিৎকার শুনে আমি নিচে যেতে যেতেই খুনিরা পারিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা মোবাইল দোকানের মালিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান, দুলাল খুবই উশৃঙ্খল ধরনের লোক ছিলো। সে যুবলীগের নেতা কাউছারের বডিগার্ড ছিলো এবং দলের পাওয়ারে সে প্রায়ই মানুষের সাথে আগ বাড়িয়ে ঝগড়া করতো। চা বিক্রেতা লাল মিয়া জানান, আমি কিছু বলতে পারবো না। তবে সে একটু দলের দাপট দেখিয়ে এলাকায় চলা ফেরা করতো। আর কিছু বলতে পারবো না। বাড্ডা থানা যুবলীগের অহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং থানা যুবলীগের অহ্বায়ক কাউছার মাহমুদের ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম জানান, ওর সাথে কারো কোন দন্দ্ব ছিলো না। তবে দলীয় কন্দোলের কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না সে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতো না। এমনিতেই সে থানায় যাতায়াত করতো। ঘটনার দিন রাতে এ ব্যাপারে দুলালের বড় স্ত্রী শিরিন বাদি হয়ে বাড্ডা থানায় অজ্ঞাত ৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি। সে পুলিশের সোর্স ছিলো কিনা বলতে পারবো না। তবে তদন্ত চলছে আশা করছি মূল হত্যাকারী বেরিয়ে আসবে। এ ব্যাপারে বাড্ডা থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল টাইম নিউজ বিডিকে জানান, দুলাল বাড্ডা থানা যুবলীগের অহ্বায়ক কাউছার মাহমুদের বডিগার্ড ছিলো। তবে আমার ধারণা এ ঘটনা দলীয় কোন্দলের কারণেই ঘটেছে। ওসি আরো বলেন, মিল্কি হত্যা মামলার আসামী চঞ্চলই এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। কারণ তার সাথে কিছুদিন আগে ঘর ভাড়া নিয়ে দুলালের দন্দ্ব হয়েছিলো। তবে পুলিশের সোর্স ছিলো এমন দাবি তিনি অস্বিকার করে বলেন, না সে সোর্স ছিলো না। তবে মাঝে মধ্যে থানায় আসা যাওয়া করতো। এমআর, কেবি
No comments:
Post a Comment