
মামলার কোনো কোনোটিতে জামিনে থাকলেও বেশির ভাগ মামলায় রয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচন করতে চাইলে তাদেরকে আত্মগোপনে থেকেই অংশ নিতে হবে বলে তাদের আশঙ্কা। আর এতে ভোট চাওয়ার ক্ষেত্রে চরম বিপর্যয় হবে। গত সিটি নির্বাচনে রাজধানীর ৯০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭৫টিতেই ছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোটের কাউন্সিলর। আর সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের ৩০টির মধ্যে ২৪ টিতেই ছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোটের। সূত্র জানায়, গতবার যারা কাউন্সিলর ছিলেন এবারো তাদের বেশির ভাগই নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক। গতবারের কাউন্সিলরদের মধ্যে চারজন মারা গেছেন। একজন আওয়ামী লীগের সাথে মিশে গেছেন। চৌধুরী আলম দীর্ঘ দিন ধরে নিখোঁজ আছেন। বাকিরা রাজনীতিতে এখনো সক্রিয় এবং বিভিন্ন পর্যায়ে দলের দায়িত্ব পালন করছেন। কামরাঙ্গীরচরে তিনটি ওয়ার্ড বেড়েছে। ওই ওয়ার্ডগুলো নিয়ে আগে যে ইউনিয়ন পরিষদ ছিল সেখানকার চেয়ারম্যান মনির হোসেন দীর্ঘ দিন ধরে জেলেই আছেন। সূত্র জানায়- এ বি এম এনামুল হক, মামুনুর রহমান ফজু, গোলাম হোসেন, শামসুল হুদা, এ ডি এম মোস্তফা বাদশা, সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলু, আলহাজ মকবুল আহম্মেদ আকন্দ, হারুনুর রশীদ, মির্জা খোকন, সাজ্জাদ জহির, খন্দকার আব্দুর রব, মো: হারুন চৌধুরী, আবুল খায়ের বাবলু, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুল লতিফ, মোতাহার হোসেন জাহাঙ্গীর, আরিফুল ইসলাম, চৌধুরী আলম, খাজা হাবিবুল্লাহ হাবিব, মো: মজিবুর রহমান মজু, মোশারফ হোসেন খোকন, আলতাফ হোসেন, মীর আশরাফ আলী আজম, আনোয়ার পারভেজ বাদল শহিদুল ইসলাম, হুমায়ুন কবীর, আজিজ উল্লাহ, মো: রফিক, মো: মোহন, হাজী আহম্মদ হোসেন, হোসেন মোল্লা, শারিকা সরকার, এম এ সামাদ, কাজী আবুল বাশার, মোজাম্মেল হক, মকবুল ইসলাম খান টিপু, লিয়াকত আলী, মো: সেলিম, মো: আব্দুস সাহেদ মন্টু, হাজী লিয়াকত আলী, মো: আতিকুল্লাহ, বাদল সরদার, মোবারক হোসেন, আব্দুল রাশেদ, মীর হোসেন মীরু, মো: মোজাম্মেল হোসেন, ডাক্তার হাফিজুল ইসলাম কুসুম কাজী ইমাম আসাদ, মো: রফিকুল ইসলাম, আহসান উল্লাহ হাসান, মুন্সী বজলুর রশিদ আঞ্জু, মিসেস ফেরদৌসী আহম্মেদ মিষ্টি, মনোয়ার হোসেন ডিপজল, মাসুদ রানা, শামীম পারভেজ, রুনু আক্তার, মো: কাইউম খান, কাজী হযরত আলী, আনোয়ার হোসেন বীরপ্রতীক, আ ফ ম আব্দুল আলম নকী, আবুল কালাম আজাদ, এম এ কাইউম, আক্কেল আলী, রুহুল আমীন ভূঁইয়া, আনোয়ারুজ্জামান, আবু বকর সিদ্দিকী, আরজুদা বাসার লাকী, আতিকুল ইসলাম মতিন, আবু সাঈদ বেপারী, জসিম উদ্দিন মাহমুদ, শর্মিলা ইমাম, এম এ মজিদ গতবারের সাধারণ ওয়ার্ডের কমিশনার ছিলেন। এদের মধ্যে হাফিজুল ইসলাম কুসুমসহ দু’জনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ওয়ান-ইলেভেনের সময় জেলহাজতে মারা গেছেন কাইউম খান। চৌধুরী আলম দীর্ঘ দিন ধরে নিখোঁজ আছেন। আর আহমদ কমিশনারকে হত্যা করা হয়েছে। বাকিদের মধ্যে বেশির ভাগই এবারো সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন বলে সূত্র জানায়। এর মধ্যে আলতাফ, মোজাম্মেল হক মুক্তা, মকবুল ইসলাম টিপু খান এবং মীরু জেলে রয়েছেন বলে জানা গেছে। বাকিদের অনেকে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সময় জেল খেটেছেন। সূত্র জানায়, সাবেক এই কাউন্সিলরদের মধ্যে প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই গড়ে কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা আরো বেশি। বিএনপি-জামায়াত জোটের মহিলা কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক মামলা। তাদেরও অনেকে এখন আর প্রকাশ্যে নেই। বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছেন। অতীতে যারা কাউন্সিলর ছিলেন তাদের অনেকেই বিএনপি ও জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। বিশেষ করে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের নেতৃত্বে রয়েছেন তারা। এসব নেতার বিরুদ্ধে এখনো একের পর এক মামলা হচ্ছে। প্রায় প্রতি রাতেই কোথাও না কোথাও হানা দিচ্ছে পুলিশ। নির্বাচনেও এরা এলাকায় অবস্থান করতে পারবেন কি না আশঙ্কা রয়েছে। মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে এবং ওই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাইলে তাদেরকে গ্রেফতার করতে পারবে। একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী বলেছেন, তারা যে জামিনের জন্য আদালতে যাবেন সেখান থেকে যে গ্রেফতার হবেন না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। মনোনয়নপত্র কিনতে সরাসরি যাবেন তারও কোনো সুযোগ নেই। এই অবস্থায় কিভাবে নির্বাচনে অংশ নেবেন, কিভাবে প্রচারণা চালাবেন তা নিয়ে চরম জটিলতায় পড়েছেন তারা। সূত্র: নয়া দিগন্ত জেএ
No comments:
Post a Comment