্তু বাংলাদেশের মানুষ যেকোনো বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি রাখে এবং সে সাহসও বাঙালির আছে।’ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মতো যেকোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করা সম্ভব জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে সাহস নিয়ে, যে উদ্দীপনা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে ১৯৭১ সালে অস্ত্র তুলে নিয়ে এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল; মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছিল। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের দেশের মানুষ যেকোনো প্রতিবন্ধকতা দূর করে, মোকাবিলা করে আমাদের দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করবে এবং আমরা এগিয়ে যাব।’ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা প্রকল্পে বিশেষ অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র মানুষের টাকায় আপনাদের ফেলেশিপ দেয়া হচ্ছে। তাদের টাকাতে বিজ্ঞান গবেষণায় অনুদান দেয়া হয়। তাদের এই অবদানের কথা স্মরণ করে সর্বোচ্চ শ্রম ও দায়বোধ নিয়ে গবেষণা করুন। বিজ্ঞানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞানকে অস্বীকার করে বাস্তবে সম্ভব নয়। বিজ্ঞানের চর্চা ও গবেষণা ছাড়া কোন দেশকে এগিয়ে যেতে পারে না। শিক্ষা ছাড়া, শিক্ষিত জাতি ছাড়া কোন দেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করা সম্ভব নয়। আমাদের সম্পদ সীমিত। এই সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু, সাশ্রয়ী ও টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা অনেক অবদান রাখতে পারেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণায় বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের সফলতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পাটের জীবন রহস্য আবিস্কার করতে সক্ষম হয়েছি। জীব-প্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে খরা, লবণাক্ততা সহনশীল ও জলমগ্নতা সহনীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। বিজ্ঞানীরা পরিবেশ বান্ধব জীবাণু সার উদ্ভাবন করেছেন। তাঁদের প্রচেষ্টায় হিউম্যান ডিএনএ প্রোফাইলিং সুবিধা সৃষ্টি সম্ভব হয়েছে। বস্ত্র, চামড়া ও ডিটারজেন্ট শিল্পে ব্যবহারের জন্য এনজাইম তৈরি সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জ্ঞান-ভিত্তিক, বিজ্ঞান মনষ্ক জাতি গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ অন সাইন্স এন্ড আইসিটি’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।জাতীয় পর্যায়ে দক্ষ ও বিশেষ যোগ্যতা সম্পন্ন বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও গবেষক তৈরির কাজ করছি। ২০০৯-১০ অর্থ বছর থেকে ২০১৩-১৪ অর্থ বছর পর্যন্ত ৩ হাজার ৪৩৪ জন ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের মধ্যে ২৩ কোটি ৩০ লাখ ২৬ হাজার টাকা ফেলোশিপ প্রদান ও একই সময়ে ১ হাজার ১১৫ টি প্রকল্পের জন্য ৪৯ কোটি ৩০ লাখ ৩০ হাজার টাকা গবেষণায় অনুদান দেওয়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি অর্থ বছরে গবেষণা অনুদানের জন্য ১২ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে ৭ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। স্কুল পর্যায় থেকে তথ্য প্রযুক্তি পড়ানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারীরা বিজ্ঞান ও কারিগরি বিষয়ে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে উঠছে। তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর সমাজ গড়তে একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছি। এতে বিজ্ঞান, কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়তে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শুরু হওয়া হাইটেক পার্ক স্থাপন কাজের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে একটি আইসিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। আগামীতে সকল বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা সারা দেশে ২০ হাজার ৫০০টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম প্রতিষ্ঠা করার কথা তুলে ধরেন। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থাপন কাজের অগ্রগতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার পর আমরা দেশের দক্ষিনাঞ্চলে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবো। চলমান সহিংস রাজনীতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে কিছু আছে। বাংলাদেশের জনগণের যে কোন বাধা মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। সে সাহস ও শক্তি বাঙালির আছে।’ সহিংস রাজনীতির জন্য বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অগ্রগতি কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। জেআই
Thursday, March 19, 2015
'যে কোনো বাধা অতিক্রমের সাহস বাঙালির আছে':Time News
'যে কোনো বাধা অতিক্রমের সাহস বাঙালির আছে' স্টাফ রিপাের্টার টাইম নিউজ বিডি, ১৯ মার্চ, ২০১৫ ১৭:০৫:২৫ যে কোনো ধরণের বাধা অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি এবং সাহস বাংলাদেশের মানুষের আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে কিছু সমস্যা আমাদের আছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিতে পারছে না। একটি জোট বা দল হরতাল-অবরোধের নামে তা বাধাগ্রস্ত করছে। কিন
্তু বাংলাদেশের মানুষ যেকোনো বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি রাখে এবং সে সাহসও বাঙালির আছে।’ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মতো যেকোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করা সম্ভব জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে সাহস নিয়ে, যে উদ্দীপনা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে ১৯৭১ সালে অস্ত্র তুলে নিয়ে এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল; মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছিল। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের দেশের মানুষ যেকোনো প্রতিবন্ধকতা দূর করে, মোকাবিলা করে আমাদের দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করবে এবং আমরা এগিয়ে যাব।’ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা প্রকল্পে বিশেষ অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র মানুষের টাকায় আপনাদের ফেলেশিপ দেয়া হচ্ছে। তাদের টাকাতে বিজ্ঞান গবেষণায় অনুদান দেয়া হয়। তাদের এই অবদানের কথা স্মরণ করে সর্বোচ্চ শ্রম ও দায়বোধ নিয়ে গবেষণা করুন। বিজ্ঞানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞানকে অস্বীকার করে বাস্তবে সম্ভব নয়। বিজ্ঞানের চর্চা ও গবেষণা ছাড়া কোন দেশকে এগিয়ে যেতে পারে না। শিক্ষা ছাড়া, শিক্ষিত জাতি ছাড়া কোন দেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করা সম্ভব নয়। আমাদের সম্পদ সীমিত। এই সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু, সাশ্রয়ী ও টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা অনেক অবদান রাখতে পারেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণায় বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের সফলতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পাটের জীবন রহস্য আবিস্কার করতে সক্ষম হয়েছি। জীব-প্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে খরা, লবণাক্ততা সহনশীল ও জলমগ্নতা সহনীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। বিজ্ঞানীরা পরিবেশ বান্ধব জীবাণু সার উদ্ভাবন করেছেন। তাঁদের প্রচেষ্টায় হিউম্যান ডিএনএ প্রোফাইলিং সুবিধা সৃষ্টি সম্ভব হয়েছে। বস্ত্র, চামড়া ও ডিটারজেন্ট শিল্পে ব্যবহারের জন্য এনজাইম তৈরি সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জ্ঞান-ভিত্তিক, বিজ্ঞান মনষ্ক জাতি গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ অন সাইন্স এন্ড আইসিটি’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।জাতীয় পর্যায়ে দক্ষ ও বিশেষ যোগ্যতা সম্পন্ন বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও গবেষক তৈরির কাজ করছি। ২০০৯-১০ অর্থ বছর থেকে ২০১৩-১৪ অর্থ বছর পর্যন্ত ৩ হাজার ৪৩৪ জন ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের মধ্যে ২৩ কোটি ৩০ লাখ ২৬ হাজার টাকা ফেলোশিপ প্রদান ও একই সময়ে ১ হাজার ১১৫ টি প্রকল্পের জন্য ৪৯ কোটি ৩০ লাখ ৩০ হাজার টাকা গবেষণায় অনুদান দেওয়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি অর্থ বছরে গবেষণা অনুদানের জন্য ১২ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে ৭ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। স্কুল পর্যায় থেকে তথ্য প্রযুক্তি পড়ানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারীরা বিজ্ঞান ও কারিগরি বিষয়ে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে উঠছে। তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর সমাজ গড়তে একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছি। এতে বিজ্ঞান, কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়তে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শুরু হওয়া হাইটেক পার্ক স্থাপন কাজের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে একটি আইসিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। আগামীতে সকল বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা সারা দেশে ২০ হাজার ৫০০টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম প্রতিষ্ঠা করার কথা তুলে ধরেন। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থাপন কাজের অগ্রগতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার পর আমরা দেশের দক্ষিনাঞ্চলে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবো। চলমান সহিংস রাজনীতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে কিছু আছে। বাংলাদেশের জনগণের যে কোন বাধা মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। সে সাহস ও শক্তি বাঙালির আছে।’ সহিংস রাজনীতির জন্য বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অগ্রগতি কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। জেআই
্তু বাংলাদেশের মানুষ যেকোনো বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি রাখে এবং সে সাহসও বাঙালির আছে।’ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মতো যেকোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করা সম্ভব জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে সাহস নিয়ে, যে উদ্দীপনা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে ১৯৭১ সালে অস্ত্র তুলে নিয়ে এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল; মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছিল। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের দেশের মানুষ যেকোনো প্রতিবন্ধকতা দূর করে, মোকাবিলা করে আমাদের দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করবে এবং আমরা এগিয়ে যাব।’ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা প্রকল্পে বিশেষ অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র মানুষের টাকায় আপনাদের ফেলেশিপ দেয়া হচ্ছে। তাদের টাকাতে বিজ্ঞান গবেষণায় অনুদান দেয়া হয়। তাদের এই অবদানের কথা স্মরণ করে সর্বোচ্চ শ্রম ও দায়বোধ নিয়ে গবেষণা করুন। বিজ্ঞানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞানকে অস্বীকার করে বাস্তবে সম্ভব নয়। বিজ্ঞানের চর্চা ও গবেষণা ছাড়া কোন দেশকে এগিয়ে যেতে পারে না। শিক্ষা ছাড়া, শিক্ষিত জাতি ছাড়া কোন দেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করা সম্ভব নয়। আমাদের সম্পদ সীমিত। এই সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু, সাশ্রয়ী ও টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা অনেক অবদান রাখতে পারেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণায় বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের সফলতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পাটের জীবন রহস্য আবিস্কার করতে সক্ষম হয়েছি। জীব-প্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে খরা, লবণাক্ততা সহনশীল ও জলমগ্নতা সহনীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। বিজ্ঞানীরা পরিবেশ বান্ধব জীবাণু সার উদ্ভাবন করেছেন। তাঁদের প্রচেষ্টায় হিউম্যান ডিএনএ প্রোফাইলিং সুবিধা সৃষ্টি সম্ভব হয়েছে। বস্ত্র, চামড়া ও ডিটারজেন্ট শিল্পে ব্যবহারের জন্য এনজাইম তৈরি সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জ্ঞান-ভিত্তিক, বিজ্ঞান মনষ্ক জাতি গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ অন সাইন্স এন্ড আইসিটি’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।জাতীয় পর্যায়ে দক্ষ ও বিশেষ যোগ্যতা সম্পন্ন বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও গবেষক তৈরির কাজ করছি। ২০০৯-১০ অর্থ বছর থেকে ২০১৩-১৪ অর্থ বছর পর্যন্ত ৩ হাজার ৪৩৪ জন ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের মধ্যে ২৩ কোটি ৩০ লাখ ২৬ হাজার টাকা ফেলোশিপ প্রদান ও একই সময়ে ১ হাজার ১১৫ টি প্রকল্পের জন্য ৪৯ কোটি ৩০ লাখ ৩০ হাজার টাকা গবেষণায় অনুদান দেওয়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি অর্থ বছরে গবেষণা অনুদানের জন্য ১২ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে ৭ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। স্কুল পর্যায় থেকে তথ্য প্রযুক্তি পড়ানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারীরা বিজ্ঞান ও কারিগরি বিষয়ে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে উঠছে। তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর সমাজ গড়তে একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছি। এতে বিজ্ঞান, কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়তে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শুরু হওয়া হাইটেক পার্ক স্থাপন কাজের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে একটি আইসিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। আগামীতে সকল বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা সারা দেশে ২০ হাজার ৫০০টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম প্রতিষ্ঠা করার কথা তুলে ধরেন। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থাপন কাজের অগ্রগতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার পর আমরা দেশের দক্ষিনাঞ্চলে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবো। চলমান সহিংস রাজনীতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে কিছু আছে। বাংলাদেশের জনগণের যে কোন বাধা মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। সে সাহস ও শক্তি বাঙালির আছে।’ সহিংস রাজনীতির জন্য বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অগ্রগতি কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। জেআই
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment