Sunday, January 18, 2015

কোন ইস্যুতে অবরোধ বোধগম্য নয়: প্রধানমন্ত্রী:Time News

কোন ইস্যুতে অবরোধ বোধগম্য নয়: প্রধানমন্ত্রী স্টাফ রিপোর্টার টাইম নিউজ বিডি, ১৭ জানুয়ারি, ২০১৫ ১৮:২৫:৪৬ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা বোমা মেরে আগুন দিয়ে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারছে, তাদের হাত পুড়িয়ে দিলে বুঝবে পোড়ার কী যন্ত্রণা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের (এনএসআই) কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। এনএসআই’র বহুতল বিশিষ্ট প্রধা
ন কার্যালয় ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেই আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী তিনি বলেন, রাজনীতি জনগণের জন্য, জনগণকে পুড়িয়ে মারার জন্য নয়। অন্তঃস্বত্ত্বা নারী থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কেউই এখন তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। বিএনপি-জামায়াত জোট আন্দোলন করতে চাইলে মাঠে নেমে জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন করুক। বিএনপি-জামায়াত কোন ইসলামের সেবক আমার বোধগম্য নয়- এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩ সালে এরা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে আগুন দিয়ে পবিত্র কোরআন পুড়িয়েছে। এ বছর বিশ্ব ইজতেমা ও পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী চলাকালে হরতাল-অবরোধ ডেকেছে। কী কারণে- কোন ইস্যুতে আন্দোলন চলছে তা আমার বোধগম্য নয়- মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী, উন্নয়নের পথে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ যখন রোল মডেল হয়ে উঠেছে তখন বিএনপি-জামায়াত এই অপতৎপরতা শুরু করেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর দেশের উন্নয়ন হয়েছে, প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। তারপরও কেন আন্দোলন তার কোনো কারণ আমি খুঁজে পাই না। শেখ হাসিনা স্মরণ করে বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালেও যখন দাযিত্ব নেয় তখনও এমন অপতৎপরতা দেখেছি। আওয়ামী লীগের মতো এতো অল্প সময়ে এতো ভালো কাজ আর কেউ করেনি। গত ৬ বছরে দেশ যদি কোথাও একটু পিছিয়ে যেতো তাহলেও তাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা থাকতো। তাদের আসলে ইস্যুটা কী তা আমি নিজেই খুঁজে পাই না। আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নের সকল সূচকে এগিয়ে আছে দেখেই মনে হয় বিএনপি নেত্রীর মাথা খারাপে হয়ে গেছে। তার তো আবার পেয়ারে পাকিস্তান। সমালোচকদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমার বক্তব্যের সমালোচনা করেন, তাদের আহ্বান জানাবো বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখে ‍আসুন- কীভাবে পোড়ানো মানুষগুলো কষ্ট পাচ্ছে। তাদের কষ্ট দেখে আমার কষ্ট হয়, আমি সারাক্ষণ তাদের খোঁজখবর রাখি। চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সবধরনের নির্দেশনা দিই। অনুষ্ঠানে এনএসআইয়ের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন সময়ে দেশের প্রয়োজনে এনএসআই সবচেয়ে বেশি ও বৃহৎ পরিসরে তৎপরতা দেখিয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও এনএসআইসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। এনএসআইয়ের সামর্থ্য বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সকল গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান জরুরি বলে মত দেন। এছাড়া, প্রয়োজনে এনএসআই সফলতার সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পেরেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিমানবন্দরে আজ যে স্বর্ণ ধরা পড়ছে তা এনএসআই গোয়েন্দাদের তৎপরতার ফলেই সম্ভব হচ্ছে। তাদের তৎপরতায় মাদকদ্রব্যও ধরা পড়ছে। চোরাচালান ও চোরাকারবার বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করতে এনএসআই কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসবের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু তনয়া স্মরণ করেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা বিভিন্ন সময়ে এই সংস্থাটিকে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা স্থায়ী করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। ফলে, এই সংস্থার সুনাম ও মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। এনএসআই’র পেশাদারিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। প্রতিষ্ঠানটি জনগণের আস্থা হারায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছরের স্বৈরশাসন শেষে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর আমরা এনএসআইকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদ্যোগ নিই। এনএসআই ফিরে পায় তার হারানো গৌরব ও জনগণের আস্থা। এনএসআইকে শক্তিশালী করতে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরা এ সংস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে এবং এর গুণগত মান বাড়াতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করি। অবকাঠামো উন্নয়ন, যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ক্রয়, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেই। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় এসে আমাদের নেওয়া কর্মসূচিগুলো বন্ধ করে দেয়। শেখ হাসিনা আরও উল্লেখ করেন, আমরা এনএসআই’র সামর্থ্য বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করি। গত ছয় বছরে আমরা এনএসআইয়ের কাজের পরিধি ও ব্যাপ্তি বিবেচনায় এনে অনেক নতুন পদ সৃষ্টি করেছি। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকী, এনএসআই মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শামসুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত এনএসআই সদস্য আব্দুস সাত্তারের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এএইচ


No comments:

Post a Comment