দের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি তহবিল গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে ২০০৭-২০০৮ এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৯ শতাংশ সুদে আবাসন খাতের ক্রেতাদের ঋণ দিতে ৭০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। এরপর থেকে বরাদ্দ বন্ধ। তাই চলতি বছরের গোড়ার দিকে এ খাতের বিকাশে উদ্যোক্তারা সরকারের নীতি সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন তারা। এসব বিষয় নিয়ে আবাসন শিল্প মালিকদের সংগঠনটি অর্থমন্ত্রীর সহযোগিতাও চেয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের জুলাই মাসে আবাসন খাতের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। কিন্তু আবাসন খাতের উন্নয়নে রিহ্যাবের প্রস্তাব ও মন্ত্রীর সুপারিশেও তেমন কোনো কাজ হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে এলেও নতুন সরকার বিনিয়োগ আকর্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় আনতে পারেনি। সরকারের প্রতি আস্থাহীনতা থেকেই দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে না। যার কারণে বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। কোথায় বিনিয়োগ করবেন। কেমন হবে। তারা বলেন, “নানা ধরনের অনিশ্চয়তা থাকলেও বিনিয়োগকারীরা অন্তত পক্ষে বিনিয়োগ নিবন্ধন নিয়ে রাখেন। কারণ নিবন্ধন করে রাখলে দীর্ঘমেয়াদী ঋণসহ যাবতীয় কাজ পেতে সুবিধা হয়। গত বছর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সেই উৎসাহটুকুও দেখা যায়নি। ” এ শিল্পের ক্রেতা চাহিদাও দিন দিন কমে আসছে। বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। নানামুখী সমস্যায় পড়ে স্থবিরতা নেমে এসেছে এ শিল্পে। শিল্প রক্ষায় বর্তমানে ২৫ শতাংশ কম দামে ফ্ল্যাট বিক্রি করা হচ্ছে। তারপরেও সংকট কাটছে না। রিহ্যাবের তথ্য মতে, ২০১৪ সালে অবিক্রীত ফ্ল্যাটের হার ২৫০ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে ফ্ল্যাট বিক্রির হার কমেছে ২১ শতাংশ। আর এ কারণে ছোট অনেক আবাসন কোম্পানি ইতোমধ্যে তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। সম্প্রতি রিহ্যাব কর্তৃক ১৮৭টি প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের ওপর পরিচালিত এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রিহ্যাব সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে অবিক্রীত ফ্ল্যাটের পরিমাণ ১০ হাজার ৬০০। ২০১৩ সালে এ সংখ্যা ছিল চার হাজার ১২৪। ২০১২ সালে অবিক্রীত ফ্ল্যাটের সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৫৮৪। ২০১৪ সালে ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৪৭৭টি। ২০১৩ সালে এ সংখ্যা ছিল এক হাজার ৮৬৩। ২০১২ সালে আবাসন ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে পেরেছিলেন দুই হাজার ২৯৩টি ফ্ল্যাট। গত তিন বছরে ১৮৭টি প্রতিষ্ঠান মিলে ছয় হাজার ৩৭টি ফ্ল্যাট হস্তান্তরে সক্ষম হয়েছে। ২০১৪ সালে হস্তান্তর হয় এক হাজার ৭১৭টি ফ্ল্যাট। ২০১৩ সালে দুই হাজার ২৫৩ ও ২০১২ সালে হস্তান্তর হয় দুই হাজার ৬৭টি ফ্ল্যাট। মিশন গ্রুপের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, “সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান কিছু পলিছি নিয়েছিলেন যা ভুল ছিল। যার কারণে মানুষের মধ্যে কিছু নেতিবাচক ধারণা হয়েছে। এরপর শেয়ার মার্কেট বিপর্যয়, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্রেতারা বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে না। এক ধরনের তারা ভয় পায়। এছাড়া বিক্রি ও দাম কমে যাওয়া এ শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে পারছে না। মানুষের সঙ্গে দেয়া প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করতে পারেনি। এসব কারণেই আবাসন শিল্প একটি কঠিন সংকট পড়েছে।” তিনি বলেন, “রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে হবে, সবার অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন হলে মানুষের মধ্যে বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা থাকবে না। এজন্য সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।” রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি ও শেলটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. তৌফিক এম সেরাজ বলেন, “আমরা আবাসন শিল্প নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। আমাদের সদস্য নয় এমন কয়েক শ’ কোম্পানি ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। সমিতির অন্তর্ভুক্ত এমন অনেকের অবস্থাও ভালো না। কয়েক দফা দাম কমিয়েও আমরা ফ্ল্যাট বিক্রি করা যাচ্ছে না।” নতুন বার্তা/নিমা/এএস/জবা
Monday, December 8, 2014
রাজনৈতিক কারণেই গভীর সংকটে আবাসন খাত :Natun Barta
দের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি তহবিল গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে ২০০৭-২০০৮ এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৯ শতাংশ সুদে আবাসন খাতের ক্রেতাদের ঋণ দিতে ৭০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। এরপর থেকে বরাদ্দ বন্ধ। তাই চলতি বছরের গোড়ার দিকে এ খাতের বিকাশে উদ্যোক্তারা সরকারের নীতি সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন তারা। এসব বিষয় নিয়ে আবাসন শিল্প মালিকদের সংগঠনটি অর্থমন্ত্রীর সহযোগিতাও চেয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের জুলাই মাসে আবাসন খাতের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। কিন্তু আবাসন খাতের উন্নয়নে রিহ্যাবের প্রস্তাব ও মন্ত্রীর সুপারিশেও তেমন কোনো কাজ হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে এলেও নতুন সরকার বিনিয়োগ আকর্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় আনতে পারেনি। সরকারের প্রতি আস্থাহীনতা থেকেই দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে না। যার কারণে বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। কোথায় বিনিয়োগ করবেন। কেমন হবে। তারা বলেন, “নানা ধরনের অনিশ্চয়তা থাকলেও বিনিয়োগকারীরা অন্তত পক্ষে বিনিয়োগ নিবন্ধন নিয়ে রাখেন। কারণ নিবন্ধন করে রাখলে দীর্ঘমেয়াদী ঋণসহ যাবতীয় কাজ পেতে সুবিধা হয়। গত বছর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সেই উৎসাহটুকুও দেখা যায়নি। ” এ শিল্পের ক্রেতা চাহিদাও দিন দিন কমে আসছে। বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। নানামুখী সমস্যায় পড়ে স্থবিরতা নেমে এসেছে এ শিল্পে। শিল্প রক্ষায় বর্তমানে ২৫ শতাংশ কম দামে ফ্ল্যাট বিক্রি করা হচ্ছে। তারপরেও সংকট কাটছে না। রিহ্যাবের তথ্য মতে, ২০১৪ সালে অবিক্রীত ফ্ল্যাটের হার ২৫০ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে ফ্ল্যাট বিক্রির হার কমেছে ২১ শতাংশ। আর এ কারণে ছোট অনেক আবাসন কোম্পানি ইতোমধ্যে তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। সম্প্রতি রিহ্যাব কর্তৃক ১৮৭টি প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের ওপর পরিচালিত এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রিহ্যাব সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে অবিক্রীত ফ্ল্যাটের পরিমাণ ১০ হাজার ৬০০। ২০১৩ সালে এ সংখ্যা ছিল চার হাজার ১২৪। ২০১২ সালে অবিক্রীত ফ্ল্যাটের সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৫৮৪। ২০১৪ সালে ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৪৭৭টি। ২০১৩ সালে এ সংখ্যা ছিল এক হাজার ৮৬৩। ২০১২ সালে আবাসন ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে পেরেছিলেন দুই হাজার ২৯৩টি ফ্ল্যাট। গত তিন বছরে ১৮৭টি প্রতিষ্ঠান মিলে ছয় হাজার ৩৭টি ফ্ল্যাট হস্তান্তরে সক্ষম হয়েছে। ২০১৪ সালে হস্তান্তর হয় এক হাজার ৭১৭টি ফ্ল্যাট। ২০১৩ সালে দুই হাজার ২৫৩ ও ২০১২ সালে হস্তান্তর হয় দুই হাজার ৬৭টি ফ্ল্যাট। মিশন গ্রুপের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, “সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান কিছু পলিছি নিয়েছিলেন যা ভুল ছিল। যার কারণে মানুষের মধ্যে কিছু নেতিবাচক ধারণা হয়েছে। এরপর শেয়ার মার্কেট বিপর্যয়, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্রেতারা বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে না। এক ধরনের তারা ভয় পায়। এছাড়া বিক্রি ও দাম কমে যাওয়া এ শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে পারছে না। মানুষের সঙ্গে দেয়া প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করতে পারেনি। এসব কারণেই আবাসন শিল্প একটি কঠিন সংকট পড়েছে।” তিনি বলেন, “রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে হবে, সবার অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন হলে মানুষের মধ্যে বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা থাকবে না। এজন্য সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।” রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি ও শেলটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. তৌফিক এম সেরাজ বলেন, “আমরা আবাসন শিল্প নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। আমাদের সদস্য নয় এমন কয়েক শ’ কোম্পানি ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। সমিতির অন্তর্ভুক্ত এমন অনেকের অবস্থাও ভালো না। কয়েক দফা দাম কমিয়েও আমরা ফ্ল্যাট বিক্রি করা যাচ্ছে না।” নতুন বার্তা/নিমা/এএস/জবা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment