তাধিক। বাংলাদেশ সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, অনেক শ্রমিকই এখনো কর্মক্ষমতা ফিরে পাননি। কর্মক্ষম করে তোলার মতো দীর্ঘমেয়াদি কোনো উদ্যোগও সেভাবে নেয়া হয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের কল্যাণে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডের পর যখনই ক্ষতিগ্রস্ত কোনো শ্রমিককে শনাক্ত করা গেছে, আমরা তাদের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। এখনো যদি কেউ আসেন, তাদের জন্যও একই পদক্ষেপ নেয়া হবে।’ জানা যায়, তাজরীনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ১১০ শ্রমিকের পরিবারকে দেয়া হয়েছে ৭ লাখ টাকা করে। আহত ৯০ জন শ্রমিক পেয়েছেন ১ লাখ টাকা করে। তবে এসব সহায়তা দেশের আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা হয়নি। তবে এ অর্থসহায়তা ক্ষতিপূরণ নয় বলে দাবি শ্রমিক নেতাদের। তারা বলছেন, এ ৭ লাখ টাকার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এসেছে ২ লাখ। এছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, সিঅ্যান্ডএ, লিঅ্যান্ডফাং ও বিজিএমইএ দিয়েছে ১ লাখ টাকা করে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পুরো বিষয়টি সমন্বয় করে। কিন্তু তাজরীনের মালিক দেলোয়ার হোসেন কোনো অর্থ দেননি বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ। শ্রম আইন, ২০০৬ সংসদে পাস হওয়ার আগে শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ লাখ টাকা করে দেয়ার দাবি জানানো হয়। এর পরিবর্তে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ টাকা। গত বছর শ্রম আইন সংশোধনের সময় দাবিটি আবার উত্থাপন হলেও এ নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। গত বছরের মধ্য জুলাইয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন), ২০১৩ সংসদে পাস হয়। শ্রমিক নেতা আমিরুল হক ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় চারদিকে হইচই পড়ে যাওয়ায় বিজিএমইএ আইনের চেয়ে বেশি অর্থসহায়তা দেয়ার তত্পরতা দেখিয়েছে। যদিও অবস্থান ছিল আইনিভাবে ক্ষতিপূরণ না বাড়ানোর পক্ষে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘যে কোনো শিল্পে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্তদের আইনসিদ্ধ একটি ক্ষতিপূরণও দিতে হবে। এটা সব খাতের জন্যই প্রযোজ্য। আর তাজরীনের ঘটনায় দেয়া অর্থসহায়তাকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা প্রয়োজন। এটা আমরাও চাই, তবে এর দায়িত্ব সরকারের।’ তবে খুব দ্রুতই শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা হবে বলে জানান শ্রম সচিব মিকাইল শিপার। তাজরীন দুর্ঘটনার পরও অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতে মালিকদের মানসিকতায় পুরোপুরি পরিবর্তন আসেনি। সরকারের হালনাগাদ হিসাবে অগ্নি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে দেশের ৭২ শতাংশ কারখানায়। এ হিসাবে ২৮ শতাংশ কারখানায় এখনো অগ্নি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। থেমে নেই পোশাক কারখানায় আগুন লাগার ঘটনাও। আমেরিকান সলিডারিটি সেন্টারের হিসাবে, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পোশাক কারখানায় মোট ৬২টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মারা গেছেন ২৭ জন। আহত হয়েছেন আরো আট শতাধিক। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গেছে দুই বছর আগে তাজরীনের আগুন। কর্মহীন করে দিয়েছে এর অনেক শ্রমিককে। তাজরীনের সুইং অপারেটরদের হেলপার রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আগুন লাগার পর ওপর থেকে লাফিয়ে পড়ি। তাত্ক্ষণিকভাবে ক্ষতিটা সেভাবে বুঝতে পারিনি। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। বুকে ব্যথাসহ নানা ব্যাধি ভর করেছে।’ তাজরীনে অগ্নিকাণ্ডের দিন তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে বাঁ পা ভেঙে যায় দীপার। তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে জীবন বাঁচলেও আমার বাঁ পা ভেঙে যায়। এর পর তিন মাস পা প্লাস্টার করা ছিল। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজ করার মতো কোনো অবস্থায় ফিরতে পারিনি। তাই বেকার ঘরে বসে থাকতে হয়। স্বামীর একার পরিশ্রমে সংসার চালাতে গিয়ে জীবন নির্বাহ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।’ মন্তব্য pay per click
Monday, November 24, 2014
তাজরীন হত্যাকাণ্ডের দুই বছর, আজো অনিশ্চিত শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ:RTNN
তাধিক। বাংলাদেশ সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, অনেক শ্রমিকই এখনো কর্মক্ষমতা ফিরে পাননি। কর্মক্ষম করে তোলার মতো দীর্ঘমেয়াদি কোনো উদ্যোগও সেভাবে নেয়া হয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের কল্যাণে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডের পর যখনই ক্ষতিগ্রস্ত কোনো শ্রমিককে শনাক্ত করা গেছে, আমরা তাদের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। এখনো যদি কেউ আসেন, তাদের জন্যও একই পদক্ষেপ নেয়া হবে।’ জানা যায়, তাজরীনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ১১০ শ্রমিকের পরিবারকে দেয়া হয়েছে ৭ লাখ টাকা করে। আহত ৯০ জন শ্রমিক পেয়েছেন ১ লাখ টাকা করে। তবে এসব সহায়তা দেশের আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা হয়নি। তবে এ অর্থসহায়তা ক্ষতিপূরণ নয় বলে দাবি শ্রমিক নেতাদের। তারা বলছেন, এ ৭ লাখ টাকার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এসেছে ২ লাখ। এছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, সিঅ্যান্ডএ, লিঅ্যান্ডফাং ও বিজিএমইএ দিয়েছে ১ লাখ টাকা করে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পুরো বিষয়টি সমন্বয় করে। কিন্তু তাজরীনের মালিক দেলোয়ার হোসেন কোনো অর্থ দেননি বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ। শ্রম আইন, ২০০৬ সংসদে পাস হওয়ার আগে শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ লাখ টাকা করে দেয়ার দাবি জানানো হয়। এর পরিবর্তে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ টাকা। গত বছর শ্রম আইন সংশোধনের সময় দাবিটি আবার উত্থাপন হলেও এ নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। গত বছরের মধ্য জুলাইয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন), ২০১৩ সংসদে পাস হয়। শ্রমিক নেতা আমিরুল হক ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় চারদিকে হইচই পড়ে যাওয়ায় বিজিএমইএ আইনের চেয়ে বেশি অর্থসহায়তা দেয়ার তত্পরতা দেখিয়েছে। যদিও অবস্থান ছিল আইনিভাবে ক্ষতিপূরণ না বাড়ানোর পক্ষে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘যে কোনো শিল্পে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্তদের আইনসিদ্ধ একটি ক্ষতিপূরণও দিতে হবে। এটা সব খাতের জন্যই প্রযোজ্য। আর তাজরীনের ঘটনায় দেয়া অর্থসহায়তাকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা প্রয়োজন। এটা আমরাও চাই, তবে এর দায়িত্ব সরকারের।’ তবে খুব দ্রুতই শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা হবে বলে জানান শ্রম সচিব মিকাইল শিপার। তাজরীন দুর্ঘটনার পরও অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতে মালিকদের মানসিকতায় পুরোপুরি পরিবর্তন আসেনি। সরকারের হালনাগাদ হিসাবে অগ্নি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে দেশের ৭২ শতাংশ কারখানায়। এ হিসাবে ২৮ শতাংশ কারখানায় এখনো অগ্নি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। থেমে নেই পোশাক কারখানায় আগুন লাগার ঘটনাও। আমেরিকান সলিডারিটি সেন্টারের হিসাবে, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পোশাক কারখানায় মোট ৬২টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মারা গেছেন ২৭ জন। আহত হয়েছেন আরো আট শতাধিক। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গেছে দুই বছর আগে তাজরীনের আগুন। কর্মহীন করে দিয়েছে এর অনেক শ্রমিককে। তাজরীনের সুইং অপারেটরদের হেলপার রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আগুন লাগার পর ওপর থেকে লাফিয়ে পড়ি। তাত্ক্ষণিকভাবে ক্ষতিটা সেভাবে বুঝতে পারিনি। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। বুকে ব্যথাসহ নানা ব্যাধি ভর করেছে।’ তাজরীনে অগ্নিকাণ্ডের দিন তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে বাঁ পা ভেঙে যায় দীপার। তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে জীবন বাঁচলেও আমার বাঁ পা ভেঙে যায়। এর পর তিন মাস পা প্লাস্টার করা ছিল। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজ করার মতো কোনো অবস্থায় ফিরতে পারিনি। তাই বেকার ঘরে বসে থাকতে হয়। স্বামীর একার পরিশ্রমে সংসার চালাতে গিয়ে জীবন নির্বাহ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।’ মন্তব্য pay per click
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment