Thursday, December 25, 2014

পাষন্ড স্বামীর কারণে চোখ হারালো সানজিদা:Time News

পাষন্ড স্বামীর কারণে চোখ হারালো সানজিদা স্টাফ করেসপন্ডেন্ট টাইম নিউজ বিডি, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৪ ২০:১৭:১১ অকর্মন্য স্বামীর কারণে টানাপোড়েন সানজিদার ১০ বছরের সংসারে। নিরবে চোখের জল ফেলেছেন। সহ্য করেছেন স্বামীর শত অত্যাচার। শুধু দুই বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে সংসারের হাল ছাড়েননি। কিন্তু পাষন্ড স্বামী বিদ্যুত মিনার তা গুরুত্ব দেন নি। সানজিদার চোখে যে জল ঝরছিল এতোদিন ধরে, তা আজ ঝড়ছে রক্ত হয়ে। ৮০ হাজার টাকা
র চাহিদা পূরণ না করায় গত ২২ ডিসেম্বর স্ত্রী সানজিদার এক চোখ নষ্ট করে দেন রাজধানীর দক্ষিণখানের পাষন্ড স্বামী বিদ্যুৎ মিনা। এঘটনায় সানজিদার বড় ভাই শহিদুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ মিনাকে ঘটনা দিন রাতেই গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন সংশ্লিষ্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভাই শহিদুল। সানজিদার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাদারিপুরের শিবচর থানার বদরসুন মাতবরখানি গ্রামের মৃত ইস্কান শেখের মেয়ে সানজিদা। ১০ বছর আগে একই গ্রামের সিরাজ মিনার ছেলে বিদ্যুৎ মিনার সাথে বিয়ে হয় সানজিদার। স্বামীর সাথে দুই বাচ্চা নিয়ে উত্তরার দক্ষিণখানের দক্ষিণপাড়ার ১১১ নাম্বার বাসায় বসবাস করছিলেন সানজিদা। দুই সন্তানের জন্মের পর থেকে শুরু হয় টানাপোড়েন। উত্তরায় একটি গার্মেন্টেসে চাকুরিও করেন সানজিদা। কয়েকদিন থেকে স্বামী বিদ্যুত মিনা সানজিদার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা দাবি করে আসছিলেন। এ নিয়ে মারধরের শিকারও হন সানজিদা। গত ২২ ডিসেম্বর স্ত্রীর কাছে টাকা দাবি করেন বিদ্যুত মিনা। কিন্তু কাছে টাকা নেই বলে জানায় স্ত্রী সানজিদা। একথায় উত্তেজিত হয়ে স্ত্রী সানজিদার হাত পা বেঁধে মারধর করেন। এরপর বৈদ্যুতিক টেস্টার দিয়ে সানজিদার দুচোখে আঘাত করেন। এতে সানজিদার ডান চোখ বেড়িয়ে যায়। আরেক চোখ মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে বাড়িওয়ালা আব্দুল হালিম এসে সানজিদাকে উদ্ধার করে উত্তরার ১১ সেক্টরের ১৭ নাম্বার রোডের রিজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে থেকে রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ভর্তি করা হয় সানজিদাকে। বুধবার ‍দুপুরে হাসপাতালের ৫৩৯ নাম্বার কক্ষের ১৪ নাম্বার বেডে শুয়ে চোখ হারানোর যন্ত্রনায় দগ্ধ সানজিদা বলেন, “সংসার তো আর সম্ভব না! আমি শুধু আমার স্বামীকে দেখতে চাই কিভাবে আমারে মারতে পারলো! এমন পাষন্ড স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমি।” এসময় তিনি মেয়ে যুথি আর ছেলে অনিককে ফেরত চান তিনি। সানজিদার বড় ভাই শহিদুল ইসলাম বলেন, সানজিদার স্বামী অকর্মা। কোনো কাজ করে না। সানজিদা গার্মেন্টেসে চাকুরি করে যা পায় তাই দিয়ে সংসার চলে। জুয়া আর মদের নেশা নিবারণে সানজিদার কাছ থেকে প্রায়ই জোর করে টাকা নিতো। সম্প্রতি সে ৮০ হাজার টাকা দাবি করে বসে। সানজিদা বা আমাদের কারও এক সাথে এতো টাকা দেয়ার স্বামর্থ্য নেই বলে জানান। ঘটনার সানজিদার শশুড়-শাশুড়ি তার ছেলেমেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করেন সানজিদার দুলাভাই লিখন মোল্লা। সানজিদার কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা: জালাল আহমেদ বলেন, সানজিদার এক চোখ বাঁচানো সম্ভব নয়। আরেকটিও মারাত্মক জখম। চোখটি যাতে ড্যামেজ না হয় আমরা সে চেষ্টাই করছি। উত্তরার দক্ষিণখান থানার ওসি শামীম অর রশিদ তালুকদার বলেন, স্বামী বিদ্যুত গ্রেফতারের পর জি্‌জ্ঞাসাবাসে স্ত্রী সানজিদাকে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন। বড় ভাইয়ের দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বিদ্যুতকে গ্রেফতার করে বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। এসএইচ


No comments:

Post a Comment