Monday, June 22, 2015

ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়:আরটিএনএন

ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় খেলা প্রতিবেদক আরটিএনএন ঢাকা: এই প্রথম ভারতের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে দাপটের সঙ্গে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয় ঐতিহাসিক। একই সঙ্গে অনেক অর্জনের। প্রথম ম্যাচের জয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচের জয়ে সেই উন্নতিতে বাংলাদেশ এখন ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করল। জয়ের জন্য ২০০ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়ে ৫৪ বল
থাকতে পৌঁছে যায়। সাকিব ৫১ এবং সাব্বির রহমান ২২ রানে অপরাজিত থেকে ৪৮ রানের জুটি গড়ে জয় নিশ্চিত করেন। এ নিয়ে বাংলাদেশ দেশের মাটিতে সর্বশেষ ১০টি ম্যাচে টানা জয় পেল। এর মধ্যে ভারতের আগে মাশরাফিরা পাকিস্তানকে তিন ম্যাচে আর জিম্বাবুয়েবে পাঁচ ম্যাচে ধবল ধোলাই করে। তবে রবিবার মিরপুরে ভারতের দেয়া ২০০ রানের জয়ের লক্ষ্যে শুরুটা এদিন তেমন ভালো করতে পারেননি তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। দলীয় ৩৪ রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম ইকবাল। ধাওয়াল কুলকার্নির বলে ধাওয়ানের হাতে ধরা পড়ার আগে তিনি ২১ বলে ৩ চারে করেন ১৩ রান। এরপর সৌম্য সরকার ও লিটন কুমার দাস দ্বিতীয় উইকেটে তোলেন মূল্যবান ৫২ রান। এই জুটির রানে জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে থাকে স্বাগতিকরা। তবে দলীয় ৮৬ রানে সৌম্য সরকারকে ফেরান রবীচন্দ্রন অশ্বিন। তার বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে সৌম্য করেন ৪২ বলে দুই বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৩৪ রান। এরপর দলীয় ৯৮ রানে লিটন কুমার দাস ফিরে গেলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। লিটন ৪১ বলে ৫ চারে ৩৬ রান করে অক্ষর প্যাটেলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। ৫৪ রানের এই জুটিতে জয়ের পথ সংহত হয় স্বাগতিকদের। কিন্তু দলীয় ১৫২ রানে মুশফিকুর রহিম দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হলে কিছুটা চাপ বাড়ে। তবে একপ্রান্ত আগলে থাকা সাকিব সাব্বির রহমানকে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। তাদের দুজনের ৪৮ রানের জুটি দলকে ৬ উইকেটের বিশাল জয় ছিনিয়ে আনতে সাহায্য করে। সাকিব অর্ধশতকের পথে ৬২ বলে ৫ চারে ৫১ এবং সাব্বির ২৩ বলে ৩ চারে ২২ রান করে অপরাজিত থাকেন। এ নিয়ে সাকিব টানা দুই ম্যাচে ফিফটি পেলেন। ৩২ রানে এক উইকেট নিয়ে ভারতের পক্ষে সফল বোলার রবীচন্দন অশ্বিন। এছাড়া ধাওয়াল কুলকার্নি ও অক্ষর প্যাটেল একটি করে উইকেট নেন, তবে সমানে তারা টাইগারদের পিটুনি কান। এর আগে টস জিতে ভারত ৪৫ ওভারে মাত্র ২০০ রানে গুটিয়ে যায়। বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্যও দাঁড়ায় ২০০ রান। বাংলাদেশের বাম-হাতি পেস বিস্ময় মুস্তাফিজুর রহমান ৪৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে একাই ভারতীয় শিবির ধসিয়ে দেন। এছাড়া রুবেল হোসেন ও নাসির হোসেন দুটি করে বাকি চারটি উইকেট তুলে নেন। প্রথম ম্যাচেও মুস্তাফিজ ৫০ রানে নিয়েছিলেন ভারতের ৫ উইকেট। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ৫টির বেশি উইকেট নিয়ে তিনি রেকর্ডের খাতায় নাম লেখালেন। তার আগে শুধুমাত্র জিম্বাবুয়ের ব্রায়েন ভিট্টরি অভিষেকের পর টানা দুই ম্যাচে ৫টি করে উইকেট পেয়েছেন। সঙ্গত কারণেই এই ম্যাচের সেরা বেছে নিতে একদম কষ্ট হয়নি। টানা দুই ম্যাচে সেরা হন ১৯ বছর বয়সী পেস বিস্ময় মুস্তাফিজুর রহমান। পুরস্কার হাতে নিয়ে তিনি নিজের খুশি প্রকাশ করে বলেন, ভালো করতে আমার সতীর্থ সবাই সহযোগিতা করেছেন। বৃষ্টির মধ্যে কষ্ট করে খেলা দেখায় দর্শকদের ধন্যবাদ জানান মুস্তাফিজ। একই সঙ্গে ভারতের জন্য তিনি হুঁশিয়ারি রাখেন, এই বলে যে, আমি তৃতীয় ওয়ানডেতে এই দুই ম্যাচের চেয়েও ভালো বল করার চেষ্টা করব। পরাজয়ের পেছনে ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি স্কোরবোর্ডে কম রান উঠাকেই দায়ী করলেন। তিনি বলেন, আমি বোলারদের দায়ী করব না। আমরা ব্যাটসম্যানরা ভালো করতে পারিনি। কেউই দু-তিনটা ভালো বল খেলতে পারেনি। বিপক্ষে বাংলাদেশ তাদের বোলিং ইউনিটে অসাধারণ বল করেছে। ধোনি বিগত দুই ম্যাচের ভুল শুধরে আগামী ম্যাচে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বিজয়ী অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা নিশ্চিত হওয়ায় আল্লাহকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আজকের এই সিরিজ জয় আমাদের জন্য বিশাল অর্জন। আমার ছেলেরা সব সময় এমনটিই চেয়ে আসছে। মুস্তাফিজ অসাধারণ বল করছে, এই জয় দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। সামনে আরো অনেক সিরিজ আসছে, আমরা সেখানে এই পারফমেন্সের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই। মন্তব্য      

No comments:

Post a Comment