রবীন্দ্রনাথের জন্মজয়ন্তীতে কুষ্টিয়ায় ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান কুষ্টিয়া করেসপন্ডেন্ট টাইম নিউজ বিডি, ০৭ মে, ২০১৫ ১২:০৯:০৫ চির নূতনেরে দিল ডাক, পঁচিশে বৈশাখ।’বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের দীপ্যমান প্রাণপুরুষ কবীন্দ্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৪তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার। জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ৮, ৯ ও ১০ মেকুষ্টিয়ার কুঠিবাড়ীতে ব্যাপক প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বর্ণাঢ্য এসব অনুষ্ঠান। সংস্কৃতি বিষয়ক
মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন। বাংলার মাটিতে রবীন্দ্রনাথের আবির্ভাবের মধ্য দিয়েই এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে বাঙালির সাহিত্য, সংস্কৃতি শিল্প এবং মননশীলতার ক্ষেত্রে। চির নূতনের অভিসারি এই মহান পুরুষ তার অনন্য প্রতিভার দীপ্তিতে সার্ধশত বর্ষ ধরে উদ্ভাসিত করে রেখেছেন বাঙালির জীবন, মন ও মানসকে। রবীন্দ্রনাথের জন্ম দিনটি বহুকাল ধরে সমগ্র বাঙালির জীবনে এক আনন্দময় উৎসবের দিন হিসেবে পরিগণিত হয়ে এসেছে। এ দিনে উচ্চারিত হবে তারই গান, ‘ওই মহামানব আসেঃ’এ বছর জাতীয় জীবনের নানা প্রতিক‚লতার মধ্যেও বাঙালি তার প্রিয় কবিকে প্রাণের অর্ঘ্য দিয়ে স্মরণ করতে ভুল করবে না। প্রায় একক প্রচেষ্টায় রবি ঠাকুর তার জ্যোতির্ময় কিরণে বাংলাভাষা ও সাহিত্যকে বিশ্বসভায় এক অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছিলেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার স্বীকৃতি আসে ১৯১৩ সালে তার গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জনের মধ্য দিয়ে। সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী প্রথম বাঙালি এবং প্রথম এশীয় তিনিই। রবীন্দ্রনাথের সৃজনশীল প্রতিভার পরিমাপ করতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে যেতে হয়। বাংলা কবিতা, কথাসাহিত্য, নাটক, প্রবন্ধ ও সঙ্গীতের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করে সমৃদ্ধির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছেন। শিল্পকলায় রেখেছেন স্বকীয় নৈপুণ্যের ছাপ। সৃজনশীল সব কর্মকান্ডের সমান্তরালে ধর্ম, দর্শন, রাজনীতি, সমাজ উন্নয়ন, পরিবেশ, কৃষি, সমবায় ও শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি যে অবদান রেখে গেছেন-তার সুদূর প্রসারী তাৎপর্য আজও প্রাসঙ্গিক হয়ে আছে। পঁচিশে বৈশাখ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শুক্রবার থেকে কুষ্টিয়ায় তিন দিনব্যাপী রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলাইদহের কুঠিবাড়ী সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। রাস্তা-ঘাট পরিষ্কার, নতুন রঙে রঙিন করা স্টেইজ, গেট ও প্যান্ডেলের জায়গা বাড়ানোসহ বিভিন্ন কাজ সমাপ্ত করেছে রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটি। তিন দিনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে বিশ্বকবিকে নিয়ে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক ও নাট্যানুষ্ঠান এবং আবহমান কালের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ মেলা। উল্লেখ্য, ১৮৯৯ সালে জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলাইদহের আসেন। ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সময়ে এই শিলাইদহের পদ্মা পাড়েই সর্ব প্রথম মস্তবড় নীলকুঠি তৈরী করেন। যখন নীলের ব্যবসা গুটিয়ে সাহেবরা চলে যায় তখন তিন তলার কুঠিরের নীচতলায় জমিদারী খাজনা গ্রহণের কাচারী প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অপর দুই তলা বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। নীলকুঠির প্রমত্তা পদ্মার গর্ভে বিলিন হবে এমন আশংকায় ভেঙ্গে ফেলা হয়। এরপর নতুন করে ১৮৯২ সালে নির্মান করা হয় বর্তমানের স্মৃতিধন্য এই শিলাইদহ কুঠিবাড়ী। এআর
No comments:
Post a Comment