সেনা অভ্যুত্থানে সরকার পতন, সাধারণ মানুষের উল্লাস ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক টাইম নিউজ বিডি, ১৩ মে, ২০১৫ ২১:১২:০৭ সেনা অভ্যুত্থানে বুরুন্ডির প্রেসিডেন্ট পিইরি কুরুনজিজাকে ক্ষমতাচ্যূত করা হয়েছে এবং তার সরকারের পতন হয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল গোডিফ্রোইড নিউমবারেচ প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যূত করার ঘোষণা দিয়ে স্যালভাশন কমিটি গঠন করেছেন বলে জানিয়েছেন। এই ঘোষণার পর আফ্রিকান দেশটির হাজার হাজার মানুষ আন
ন্দ উল্লাস করছেন। প্রেসিডেন্ট কুরুনজিজা তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা দিলে দেশটিতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেন। এতে ২০ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। সেনা অভ্যুত্থানের সময় প্রেসিডেন্ট কুরুনজিজা তানজানিয়ায় অবস্থান করছেন। সেখানে পূর্ব আফ্রিকান দেশগুলোর সঙ্গে বুরুন্ডির সমস্যা সমাধানের বিষয় আলোচনায় বসেছেন। প্রেসিডেন্টের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে সেনা অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। সেনা অভ্যুত্থানকে একটা 'উপহাস' বলে মন্তব্য করা হয়েছে। বেশ কয়েটি টুইটার বার্তায় প্রথম দিকে প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে অবস্থা এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনো সেনা অভ্যুত্থান হয়নি। তারা অভ্যুত্থানের যে চেষ্টা করেছিলেন তা ব্যর্থ হয়েছে। বিবিসি'র প্রতিনিধি মুয়াদ জুলিয়েন বুরুন্ডির রাজধানী বুজুম্বুরা থেকে জানিয়েছেন যে বিক্ষোভকারীরা যেখানে উল্লাস করছেন সেখানে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। তিনি আরো বলেন, "কমপক্ষে তিনি জন মানুষ রাজধানী কাবুন্দু জেলায় নিহত হয়েছেন। তবে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে তা এখনও অস্পষ্ট থেকে গেছে। জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্র রক্ষা করতে রাষ্ট্রপতির প্রতি অনুগত সৈন্যরা বেশ কয়েকটি গুলি ছুঁড়েছে।" এদিকে আল জাজিরা'র সাংবাদিক ম্যালকোম ওয়েব জানিয়েছে যে সম্প্রচার কেন্দ্রটির প্রবেশ পথে প্রায় ২০ জন সৈনিক মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, "রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং সাংবাদিকদেরকে অফিসের মধ্যে থাকতে বলা হয়েছে। সরকারি রেডিও ও টিভি এখনও সম্প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।" তিনি আরো জানান যে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানো হয়েছে, নাকি আনন্দ উদযাপন করেছেন সেটা স্পষ্ট না। আল জাজিরার প্রতিনিধি আরো জানিয়েছেন যে সেনাবাহিনী সরকারি সম্প্রচার কেন্দ্র ও ভবনগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারিতে জেনারেল নিউবারেচকে গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একটি বিবৃতি পড়ে শোনান এবং বলেন যে কুরুনজিজা সংবিধান লঙ্ঘন করে তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছে। তার নেতৃত্ব মেনে নেয়া যাচ্ছে না। একটি প্রাইভেট রেডিও স্টেশন জানিয়েছে যে জেনারেল নিওমবারেচ বলেন, "বুরুন্ডিতে যে অসাংবিধানিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করতে জনগণ নিজেদের ভাগ্য নিজেদের হাতে তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।" "জনগণ অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে ও দৃঢ়ভাবে প্রেসিডেন্ট কুরুনজাজির তৃতীয়বার ক্ষমতা যাওয়ার চেষ্টাকে প্রত্যাখান করেছেন। প্রেসিডেন্ট পিয়েরি কুরুনজিজাকে তার ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তার সরকারকে উৎখাত করা হয়েছে।" পাঁচ জন সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে জেনারেল নিউমবারেচের স্যালভেশন কমিটি গঠন করেছেন। জাতীয় ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্টার জন্য এই কমিটি কাজ করবে এবং শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কাজ করবে। গত ২৬ এপ্রিল দেশটি অস্থিরতা শুরু হয়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট কুরুনজিজা আগামী মাসের নির্বাচন স্থগিত করার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। ৫১ বছর বয়সী সাবেক বিদ্রোহী নেতা যুক্তি দেখান যে তিনি তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন, কারণ ২০০৫ সালে আইন পরিষদ তাকে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট মনোনীত করেছিল। তবে, দেশটির সংবিধানে বলা হয়েছে যে একজন প্রেসিডেন্ট দু'বারের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপে দেশব্যাপী ব্যাপক গণ অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। জেডআই, কেবি
No comments:
Post a Comment