'এই মেয়েকে দেশে আনার কি দরকার' ইয়াছিন রানা টাইম নিউজ বিডি, ১৯ মে, ২০১৫ ১০:৩৩:১৮ ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর স্বামী-সন্তানসহ ছয় বছর বিদেশে কাটিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দেশে ফিরে আসেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর দেশে ফেরার আগে শেখ হাসিনা সম্পর্কে শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে এমন কথা বলেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহম
ান। এ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ১৯৭৯ সালের নির্বাচনের পর সংসদ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি সভা-সমাবেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। দলের স্বার্থে, দলের ঐক্যের স্বার্থে ১৯৮১ সালে বিদেশে থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত হলে এই দাবি এবং প্রচারণা আরো জোরদার হয়। ঠিক সে সময় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আমাকে (শেখ ফজলুল করিম সেলিম) ডেকে বলেন, এই মেয়েকে দেশে আনার দরকার কি? এই মেয়েকে দেশে না আনলেই ভাল হয়। এই মেয়েকে দেশে আনলে তো সমস্যা হবে। প্রতুত্তরে শেখ সেলিম বলেন, তখন আমি বল্লাম, বাবার কবর জিয়ারত করার অধিকারও কি তার নেই, কেনো সে আসতে পারবে না ? এরপর অনেক ঝড়-ঝাপটা, ঝুঁকি পারি দিয়ে আসলো সেই কাঙ্খিত ১৭ মে। সকাল থেকেই হচ্ছিল কাল বৈশাখী ঝড়। ৬৫ কিলো মিটার ছিল ঝড়ের গতি। এরপরও তেজগাঁওয়ের এয়ারপোর্টে নেমে আসে শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মাদ নাসিম বলেন, সে দিন ঢাকা শহর লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল। তেজগাঁও থেকে ধানমন্ডি পর্যন্ত পুরো রাস্তায় ছিল মানুয়ের ঢল। সে দিন শেখ হাসিনা ধানমন্ডির বাসভবনে ঢুকতে চাইলেও তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, ১৭ মে এক সমাবেশে শেখ হাসিনাকে বক্তব্য দিতে বলা হলে কিছুই বলতে পারেন নি কান্না জড়িত শেখ হাসিনা। শুধু একটা কথাই বলেছিলেন, আমি আপনাদের বোন, আমি আপনাদের মেয়ে, আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে, আমি এর বিচার চাই, এর প্রতিশোধ নিতে চাই, আমার বাবার স্বপ্ন আমি পূরণ করতে চাই। শেখ হাসিনা তার দুই শিশু সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ছোট বোন শেখ রেহানার কাছে লন্ডনে রেখে এদেশে গণতন্ত্র আর প্রগতিশীলতার রাজনীতি ফেরাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে আসেন তিনি। দেশে আসার পর থেকে নানা ধরণের ঝড়-ঝাপটার মুখোমুখি হতে হয়েছে শেখ হাসিনার। দেশে আসার ৩৪ বছরে মোট ১৭ বার হত্যা চেষ্টার শিকার হয়েছেন তিনি, হয়েছেন ৩ বারের মত প্রধানমন্ত্রী, হয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী নারীদের একজন। ঢাকা উত্তরের নতুন মেয়র আনিসুল হক বলেন, শেখ হাসিনা এক বিস্ময়ের নাম কারণ এত কষ্ট বুকে নিয়ে, এত ঝুকি নিয়ে কোন একজন সাধারণ মহিলা বা নারীর পক্ষে এত দৃঢ়তার সাথে দেশ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। শেখ হাসিনার দৃঢ়তা প্রসঙ্গে অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, বাঘে ধরলে ছেড়ে দেয় কিন্তু হাসিনা ধরলে ছাড়েনা। আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, শেখ হাসিনা যদি আগামী ১০ বছর দৃঢ়তার সাথে দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারেন তাহলে এই দেশ বিশ্বের বুকে উন্নত জাতি হিসেবে মাথা উচু করে দাড়াবে, বাঙ্গালী জাতি হবে বিশ্বে মধ্যে উন্নত এবং সমৃদ্ধ একটি জাতি। লেখক: সাংবাদিক মেইল: ইআর/এসএইচ/এমকে
No comments:
Post a Comment