
ই সাহসী পাইলটের জীবন। বুধবার (১ এপ্রিল) রাজশাহীর শাহ মাখদুম বিমান বন্দরের রানওয়েতে প্রশিক্ষণকালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন প্রশিক্ষণার্থী পাইলট তামান্না। ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। এ ঘটনায় প্রশিক্ষক সাইদ কামাল দগ্ধ হয়েছেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সামরিক পাইলট হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে ইতিহাস গড়া দুই নারী কর্মকর্তার অন্যতম ছিলেন ফ্লাইং অফিসার তামান্না-ই-লুৎফী। ইতিহাস গড়া অপর নারী পাইলট লেফটেন্যান্ট নাইমা হক। স্কুল থেকে স্নাতকোত্তর শিক্ষা পর্যন্ত মেধাবী হিসেবে এই দুই নারী কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। শৈশবে তারা দেশ রক্ষা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে জীবনের বাজি রেখে চ্যালেঞ্জিং ও দু:সাহসিক কাজে মানুষের সেবা করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। পুরুষের পাশাপাশি আকাশপথে বিমানে দু:সাহসিক কাজেও মানুষের সেবা করার ব্রত ছিলো তাদের। গত ১৭ ডিসেম্বর যশোরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান সলো টেস্টের সফলতার মাধ্যমে দুই নারী কর্মকর্তা সামরিক পাইলট হিসেবে স্বীকৃতি পান। সলো টেস্ট সমাপ্তির পর পরই সামরিক দুই নারী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সাংবাদিকদের সাথে শেয়ার করেছিলেন নিজেদের স্বপ্নের কথা। সেদিন তামান্না বলেছিলেন, আমার ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিলো আমি দেশ রক্ষা ও মানুষের সেবায় দু:সাহসিক ভূমিকা রাখব। আজ আমার এ স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এই দু:সাহসিক কাজের পেছনে আল্লাহপাকের পরে রয়েছেন পিতা-মাতা, বিমান বাহিনীর প্রধান ও অন্য কর্মকর্তাদের উত্সাহ ও প্রেরণা। তামান্না আনন্দচিত্তে সেদিন আরও বলেছিলেন, আমি আজ খুব আনন্দিত যে সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করতে পেরেছি। আমি নারী সমাজের একজন গর্বিত সদস্য। তামান্না-ই-লুৎফী ১৯৯৩ সালের ৫ জুন যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা লুত্ফর রহমান বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন ছিলেন। তার মাতা আয়েশা সিদ্দিকী একজন গৃহিনী। বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তামান্না। পরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস থেকে বিএসসি (অ্যারো) থেকে ফার্স্ট ক্লাস পান। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর কমিশন লাভ করেন তিনি। বিমান বাহিনীর বেল-২০৬ হেলিকপ্টারে ৬৫ ঘণ্টা ল্যান্ডিং ও উড্ডয়নসহ প্রশিক্ষণ প্রাথমিক ধাপে সফলভাবে সম্পন্ন করেন তামান্না-ই-লুৎফী। উল্লেখ্য, ২০০০ সালে প্রথম বিমান বাহিনীতে নারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া শুরু হয়। পরবর্তীতে এ সকল নারী কর্মকর্তা বিমান বাহিনী ছাড়াও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমান বিমান বাহিনীর প্রধান গত বছর সামরিক পাইলট হিসেবে নারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। প্রথম ধাপে নারী কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে চারজনকে বাছাই করে সামরিক পাইলটের মত চ্যালেঞ্জিং ও ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নির্বাচিত করা হয়। এদের মধ্যে সামরিক পাইলট হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন তামান্না। কেএইচ
No comments:
Post a Comment