Thursday, April 2, 2015

ই-মেইল ব্যবহারের নির্দেশ মানছে না মাঠপ্রশাসন:Time News

ই-মেইল ব্যবহারের নির্দেশ মানছে না মাঠপ্রশাসন টাইম ডেস্ক টাইম নিউজ বিডি, ০২ এপ্রিল, ২০১৫ ১৪:২২:৫৯ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে জনপ্রশাসনে ই-গভর্নমেন্ট পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু বারবার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও মাঠপ্রশাসন ই-মেইল ব্যবহারের নির্দেশ মানছে না। প্রশাসনের কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ই-মেইল ব্যবহারে আগেই নির্দেশ দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সরকারি
যোগাযোগের ক্ষেত্রে ই-মেইল ব্যবহারের জন্য সচিবালয় নির্দেশমালা-২০১৪তে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য দিকে জনপ্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ সচিবালয়ে এখনো চালু হয়নি বহুল প্রত্যাশিত ডিজিটাল ফাইল-নথি। এখনো সেই সনাতন পদ্ধতিতেই চলছে সচিবালয়ের ফাইল চালাচালি। কর্মকর্তারা জানান, জেলাপ্রশাসনে কিছু কার্যক্রম ডিজিটাল করা হলেও সচিবালয়সহ বিভাগ ও অধিদফতর এ কার্যক্রম থেকে এখনো অনেকটাই পিছিয়ে আছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ই-গভর্নেন্সের আওতায় ডিজিটাল ফাইল-নথি চালু হওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। মহাজোট সরকারের প্রথম আমলেই ই-গভর্নেন্স বাস্তবায়নের জন্য কয়েক কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। টাকা ব্যয় হলেও প্রকল্প এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। মহাজোট সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ডিজিটাল বাংলাদেশ এর জন্য বেশ কয়েকটি অসমাপ্ত প্রকল্পের কাজ ফের শুরু করলেও ই-গভর্নেন্সের কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে আবারো ই-মেইল ব্যবহারের জন্য তাগাদাপত্র দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি যোগাযোগের ক্ষেত্রে ই-মেইল ব্যবহারের বিষয়ে সচিবালয় নির্দেশমালা, ২০১৪ এর ১৫(৩) নম্বর অনুচ্ছেদে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এ নির্দেশনার যথাযথ অনুসরণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গত ৬ জানুয়ারি একটি স্মারক জারি করা হয়েছে। কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে, কোনো কোনো উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন করছেন না। এ পরিস্থিতিতে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে ই-মেইল চেক করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় মেইলগুলোর প্রিন্ট নিয়ে সংশ্লিষ্ট নথিতে কার্যক্রম গ্রহণ এবং কম্পিউটারেও এ বিষয়ে একটি ফাইল খুলে সেখানে সংরক্ষণ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় মেইল বিলোপ করে সম্ভাব্য ন্যূনতম সময়ে প্রতিটি সরকারি মেইলের প্রাপ্তি স্বীকার করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, সরকারের ডিজিটাল প্রশাসনের মূল পরিকল্পনা ছিল ডিজিটাল পদ্ধতিতে ‘অফিস নোট’ চালাচালি করা। এ ক্ষেত্রে কাগজের ফাইল চালাচালি অনেকাংশে বন্ধের পাশাপাশি সময়ক্ষেপণ কমে আসত। কম্পিউটারে নোট লেখা এবং পাঠানোর বিষয়টি সময় উল্লেখ থাকলে তা পাঠাতে আর কোনো কর্মকর্তা দেরি করতে পারতেন না। এতে পুরো প্রশাসনই গতিশীল হয়ে উঠতো। সরকারের ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের পৃথক কোড নম্বর থাকবে। ফাইলগুলোতেও পৃথক কোড নম্বর ব্যবহার করার কথা। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের জন্য পৃথক পৃথক সফটওয়্যার থাকবে। এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে একটি বিষয়ে ফাইল খুলে নোট লেখা হবে। সার্ভারের মাধ্যমে নোটটি সহকারী সচিব বা সিনিয়র সহকারী সচিবের কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে উপসচিব, যুগ্মসচিব হয়ে সচিব পর্যন্ত যাবে। প্রত্যেকের স্বাক্ষর আগেই স্ক্যানিং করে নিজ নিজ কম্পিউারে সংরক্ষিত থাকবে। নির্দিষ্ট কোড নম্বর ব্যবহার করে ‘কপি’ ও ‘পেস্ট’ করে প্রত্যেক কর্মকর্তা স্বাক্ষর ব্যবহার করবেন। সচিব বা অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা আগের কোনো ফাইল খুঁজতে চাইলে সফটওয়্যারের ফাইল ট্র্যাকার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কোড নম্বর অনুযায়ী বের করতে পারবেন। সরকারের ডিজিটাল প্রশাসন গড়ার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা দিয়ে ২০১০ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্রও জারি করা হয়। কর্মকর্তারা জানান, ডিজিটাল নথি চালু করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো মন্ত্রণালয় এ নথি চালু করতে পারেনি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে কয়েকটি বিভাগে শুধু পরীক্ষামূলকভাবে এ পদ্ধতি চালু করা হয়। স্বচ্ছ ও গতিশীল প্রশাসনের সাথে সচিবালয় নির্দেশমালায় ২০০৮ এর নির্দেশ ৪১(৭) অনুসারে ইতোমধ্যে সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগসহ অন্যান্য সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে একই ধরনের ডিজিটাল পদ্ধতির নথি ব্যবহার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল প্রশাসন গড়তে ২০১০ এর ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১১ -এর জুন পর্যন্ত বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কম্পিউটার সার্ভার ও ল্যাব স্থাপনের জন্য ৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এ ছাড়া সরকারের ই-সেবা নিশ্চিত করতে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল তৈরির লক্ষ্যে বিপিএটিসিতে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণ কর্মসূচিতে ২০১১-এর জানুয়ারি থেকে ওই বছর জুন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়। বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ইলেকট্রনিক নথি ব্যবস্থাপনার ব্যবহারের জন্য সরকারি দফতরগুলোতে ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত ২০ হাজার সরকারি কর্মকর্তার মধ্যে সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এ ছাড়া ৬৪ জেলায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে আইসিটি প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। নয়াদিগন্ত। ইআর  


No comments:

Post a Comment