Saturday, March 14, 2015

বৃটেনে বাংলাদেশীদের জিন গবেষণা:Time News

বৃটেনে বাংলাদেশীদের জিন গবেষণা টাইম ডেক্স টাইম নিউজ বিডি, ১৪ মার্চ, ২০১৫ ১৪:০৮:৩৫ লন্ডনের বাংলাদেশী এবং পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত নাগরিকদের স্বাস্থ্যগত উন্নয়ন, বংশগত বিভিন্ন রোগের কারণ নির্ণয় ও যথাযথ প্রতিষেধক আবিষ্কারের লক্ষ্যে জিন গবেষণা শুরু হয়েছে। এই গবেষণায় এক লাখ স্থানীয় বাসিন্দার জিন পরীক্ষা করে হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগের চিকিৎসার কার্যকর উন্নয়নে প্রতিষেধক তৈরিতে সহায়তা করবে। ৪ মিলিয়ন পাউন
্ড ব্যয়ে শুরু হওয়া ‘ইস্ট লন্ডন জিন্স অ্যান্ড হেলথ’ শীর্ষক এই গবেষণা কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেবে কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি লন্ডন। গবেষকরা স্থানীয় দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মানুষদের জেনেটিক কোড এবং মেডিক্যাল রেকর্ড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে জিন এবং পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলোর প্রভাব নির্ণয় করবেন। বৃহস্পতিবার পূর্ব লন্ডনের কুইন মেরি ইনোভেশন সেন্টারের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন হেলথ বিভাগের ভাইস প্রিন্সিপাল ও মেডিক্যাল জেনেটিক্সের প্রফেসর রিচার্ড ট্রিম্বাথ, জেনিটিক্স বিভাগের প্রফেসর ডেভিড ভেন হিল ও সোসিয়েল অ্যাকশন ফর হেলথের চিফ এক্সিকিউটিভ এলিজাবেথ বেইলিস। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বার্টস হেলথ এনএইচএস ট্রাস্ট ইনক্লিউশন অ্যান্ড কমিউনিটি এনগেজমেন্ট ম্যানেজার খসরুজ্জামান । সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ব্রিটেনের মধ্যে পূর্ব লন্ডনের বারাগুলোতে, বিশেষ করে বাংলাদেশী এবং পাকিস্তানি কমিউনিটির লোকদের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল স্বাস্থ্য লক্ষণীয়। পকিস্তানি বংশোদ্ভূত পুরুষদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বৃটেনের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং দক্ষিণ এশিয়ান সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে হৃদরোগের কারণে কম বয়সে মৃত্যুর ঘটনা সাধারণ জনগোষ্ঠীর তুলনায় দ্বিগুণ। দক্ষিণ এশিয়ার বংশোদ্ভূত লোকদের মধ্যে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সাধারণ জনগোষ্ঠীর তুলনায় পাঁচগুণ বেশি। লন্ডনের বারাগুলোর মধ্যে টাওয়ার হ্যামলেটস এবং নিউহামে মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে কম। কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের এই গবেষণার সহ-নেতৃত্বদাতা অধ্যাপক ডেভিড বেন হিল বলেন, ‘ইস্ট লন্ডন জিন্স অ্যান্ড হেলথের সামগ্রিক লক্ষ্যই হলো স্থানীয় মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতিসাধন। শুধু এমন নয় যে, যুক্তরাজ্যে দক্ষিণ এশিয়ান বংশোদ্ভূত মানুষদের মধ্যে দুর্বল স্বাস্থ্যের হার সবচেয়ে বেশি; চিকিৎসা গবেষণায়ও এরা উল্লেখযোগ্যভাবে অবহেলিত। যে কারণে জিনগত জ্ঞান ভবিষ্যৎ চিকিৎসার মূলমন্ত্র হয়ে উঠলেও এসব কমিউনিটির তা থেকে উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আমরা এমন প্রবণতার পরিবর্তন করতে চাই এবং তা করার জন্য আমাদের প্রয়োজন স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা’। ‘স্থানীয়ভাবে এক লাখ লোকের জিনগত নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভাল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমরা পূর্ব লন্ডনের বাসিন্দাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দিচ্ছি। পাশাপাশি বিশেষ কিছু লোক কেন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সেই বিষয়ে আমাদের ধারণাগত উন্নতি ঘটাতে পারবো এবং এর উন্নত চিকিৎসা ও প্রতিষেধক উদ্ভাবন করতে পারবো’। কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির হেলথ বিভাগের ভাইস প্রিন্সিপাল ও মেডিক্যাল জেনেটিক্সের প্রফেসর রিচার্ড ট্রিম্বাথ বলেন, ‘আমরা প্রতিদিনই পূর্ব লন্ডনে নবায়নের (রিজেনারেশনের) ইতিবাচক দিকগুলো দেখতে পাচ্ছি, যেমন ২০১২ সালের অলিম্পিক কিংবা ক্রসরেইল উন্নয়ন। কিন্তু জরুরি ভিত্তিতে আমাদের পূর্ব লন্ডনের স্বাস্থ্যের রিজেনারেশন প্রয়োজন। ইস্ট লন্ডন জিনস অ্যান্ড হেলথ প্রকল্পটি শুরু করা কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের জন্য একটি মাইলফলক। কিন্তু আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এই প্রকল্পটির ভাগিদার শুধু আমরা নই; বরং এটা পূর্ব লন্ডনের সকল কমিউনিটির।’ তিনি বলেন, এই প্রথমবারের মতো স্বতন্ত্র দুটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর বিশাল মাপের জিনগত গবেষণা শুরু হয়েছে। এসব সম্প্রদায়ের মধ্যে অধিকতর স্বাস্থ্যগত উদ্বেগ রয়েছে এবং এদের জিনগত গঠনে উল্লেখযোগ্য তারতম্যের সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের বিশ্বাস শুধু এটুকুতে সীমাবদ্ধ নয় যে, এই গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে ব্রিটেনের বাকি জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যগত অসাম্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে; বরং আমরা আশা করছি, এই গবেষণা মানুষের জিন এবং প্রচলিত রোগের মধ্যে সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ দিক উন্মোচন করবে; যা স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। ইস্ট লন্ডন জিন্স অ্যান্ড হেলথ গবেষণাটি দুই ধাপে সম্পাদিত হবে। প্রথম ধাপ চলবে আগামী চার বছর। এই সময়ে এক লাখ অংশগ্রহণকারীর নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এরপর দ্বিতীয় ধাপ চলবে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত। এই পর্যায়ে সংগৃহীত উপাত্তগুলোকে স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চিকিৎসা গবেষণায় সহায়তার কাজে ব্যবহার করা হবে। এই ধাপে প্রয়োজনে কিছু নমুনা সরবরাহকারীকে আরও গবেষণার জন্য ডাকা হবে। ইআর


No comments:

Post a Comment