Sunday, March 8, 2015

লোকসান গুনছে নৌ-রুটের রাষ্ট্রীয় জাহাজ ’বাঙালি’:Time News

লোকসান গুনছে নৌ-রুটের রাষ্ট্রীয় জাহাজ ’বাঙালি’ মাসুদ রানা টাইম নিউজ বিডি, ০৮ মার্চ, ২০১৫ ১৬:০৬:০৯ নির্মান কাঠামোর জটিলতার কারনে যাত্রী উঠছে না ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটে চলাচলকারী রাষ্ট্রীয় নৌপরিবহন সংস্থা বিআইডব্লি¬উটিসির যাত্রীবাহী এমভি বাঙালি জাহাজে । ফলে প্রতি ট্রিপে গড়ে প্রায় ২ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষের। এদিকে এসব সমস্যার সমাধানে বিআইডব্লি¬উটিসির তেমন উদ্যোগ না থাকায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে
২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জাহাজটির ভবিষ্যৎ। জানা যায়,ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটের যাত্রীদের চাপ সামলাতে এবং কম খরচে পারাপার করতে অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে ২০১৪ সালের মার্চ মাসে যাত্রা শুরু করে বাঙালি জাহাজ। কিন্তু নির্মান কাঠামোর ত্রুটির কারনে উদ্বোধনী ট্রিপেই ঘটেছিল বিপত্তি। জাহাজের অভ্যন্তরে ডেক শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য থাকার জায়গা বদ্ধ পরিবেশ এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর কেবিনের চারপাশে কোনো জায়গা না থাকায় স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসে দারুণভাবে কষ্ট হচ্ছে যাত্রীদের। যার দরুণ,সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে। বর্তমানে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর কেবিনে কিছু যাত্রী থাকলেও ডেক শ্রেণীতে জাহাজটি যাত্রী পাচ্ছে না বললেই চলে। সর্বশেষ গত সপ্তাহে বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়ার সময় ১ হাজার ৫০০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এ জাহাজের ডেকে যাত্রী গেছেন মাত্র ১৫০ জন। এ ছাড়া ২টি ভিআইপি এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী মিলিয়ে খালি ছিল মোট ১৭টি কেবিন। জাহাজের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, প্রতি রাউন্ড ট্রিপে এটির জ্বালানি হিসেবে ডিজেল লাগে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ লিটার। যার দাম ২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। এর সঙ্গে লুব অয়েল এবং কর্মীদের দৈনিক বেতন যোগ করলে ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় পৌনে ৪ লাখ টাকা। কিন্তু বর্তমানে যে সংখ্যক যাত্রী হচ্ছে তাতে দেড় থেকে পৌনে ২ লাখ টাকার বেশি কখনোই আয় করতে পারছে না বাঙালি। ফলে প্রতি ট্রিপে গড়ে প্রায় ২ লাখ টাকা পরিমাণ লোকসান হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেসরকারি এক লঞ্চ মালিক বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী ব্যক্তি মালিকানাধীন বিলাসবহুল লঞ্চগুলোর একেকটি নির্মাণে ব্যায় হয় সর্বোচ্চ ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা। অথচ এর চেয়ে প্রায় ৯ কোটি টাকা বেশি ব্যয়ে নির্মিত হলেও যাত্রীসেবার কাঠামোগত ব্যবস্থার দিক দিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে সরকারি জাহাজ বাঙালি। বাইরে থেকে সুন্দর দেখা গেলেও ভেতরে যাত্রীদের দম ফেলার অবস্থা থাকে না।’ সরেজমিনে বাঙালি ঘুরে দেখা মেলে এর প্রমাণ। ডেক শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য যে জায়গাটি রাখা হয়েছে সেখানে আলো-বাতাস ঢোকা বা বেরুনোর তেমন সুযোগ নেই বললেই চলে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর কেবিনের যাত্রীদের নেই চলাচলের সুব্যবস্থা। এই জাহাজে করে বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়া আনিসুর রহমান নামে এক যাত্রী বলেন, ‘বেসরকারি বিলাসবহুল লঞ্চগুলোতে যেখানে সারা বছর সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা সেখানে বাঙালির ভাড়া ট্যাক্স মিলিয়ে ১ হাজার ৩০০ টাকা। তা ছাড়া বেসরকারি লঞ্চে রয়েছে কেবিনবয়সহ নানা সার্ভিস। এই জাহাজে তা খুব একটা মেলে না। জাহাজটি ঢাকা এবং বরিশাল থেকে ছাড়ে বেসরকারি লঞ্চের প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা আগে। এসব কারণেও এই জাহাজে চড়তে খুব একটা আগ্রহ দেখান না সাধারণ যাত্রীরা।’ ঘণ্টায় প্রায় ২২ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন বাঙালি জাহাজের এসব সমস্যা নিয়ে কথা হয় বিআইডবি-উটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক গোপাল চন্দ্র মজুমদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাঙালি সপ্তাহে ৩ দিন বরিশাল এবং ৩ দিন ঢাকা থেকে চলাচল করছে। ভেতরের অবস্থাটা খোলামেলা না থাকার বিষয়ে যাত্রীরা যা বলছেন তা একেবারে ভুল নয়। আমাদের আরেকটি জাহাজ মধুমতি বর্তমানে নির্মাণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সেটি সার্ভিসে এলে এটিকে বসিয়ে এসব সমস্যার সমাধান করার কথা রয়েছে। এসএইচ


No comments:

Post a Comment