
ঢাকা: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি দলের বেপরোয়া ক্যাডারদের ভয়াল তাণ্ডবে দেশবাসী বিমূঢ়, হতভম্ব ও আতঙ্কিত। অবৈধ ক্ষমতাসীনদের বন্য প্রতিহিংসার এমন ভয়াবহ চিত্র অন্য কোনো দেশে বিরাজমান আছে কী না সন্দেহ। বিরোধী দলের আন্দোলন ঠেকাতে আবারো তাদের হত্যার নেশায় পেয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আবারো কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে আন্দোলনরত বিরোধী দল
ের নেতা-কর্মীদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করছে। এরই মধ্যে দশের অধিক বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যার সংবাদ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।” বুধবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রিজভী এসব কথা বলেন। ঢাকা ও খুলনা বিভাগে ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল সফল করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।

রিজভী বলেন, “গত বছরের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন পূর্বাপর বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকে বাসা থেকে কিংবা অন্য কোনো জায়গা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে চিরদিনের জন্য গায়েব করেছে। কয়েকদিন পর তার ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বর্তমান চলমান আন্দোলনে আবার সেটারই পুনরাবৃত্তি দেখা যাচ্ছে।” তিনি বলেন, “বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করছে পুলিশ-র্যা ব, যাকেই পাওয়া যাচ্ছে তাকেই সেখান থেকে তুলে নিয়ে হয়তোবা সেখানেই অথবা অন্য কোনো অজ্ঞাত স্থানে গুলি করে হত্যা করার পর লাশ উদ্ধার দেখাচ্ছে।” রিজভী বলেন, “গত পরশু রাতে রাজধানীতে সরকারের গোয়েন্দা রাহিনী ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনিকে তার মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে তাকে হত্যা করে। এছাড়াও নড়াইল পৌর কমিশনারের লাশ ঢাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। শুধু বিরোধী দলের আন্দোলনকে দমানোর জন্য সরকারি বাহিনীগুলোকে মানবতাবিরোধী গুম, গুপ্তহত্যার অবাধ লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এই অবৈধ সরকার দেশকে হত্যা ও লাশের মহামারীর দেশে পরিণত করার জন্য পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করছে।” তিনি বলেন, “এই ভোটারবিহীন সরকার এজেন্টদের দিয়ে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নাশকতা সৃষ্টি করে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপাতে হরদম মিডিয়াতে প্রচার চালাচ্ছে। অধিকাংশ গণমাধ্যমকে ভয় দেখিয়ে কব্জা করে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কুৎসা আর অপপ্রচারের ধুম চালানো হচ্ছে।” আওয়ামী লীগ যা বলে এবং প্রচার চালায় ঠিক তার উল্টোটাই জনগণ বিশ্বাস করে দাবি করে রিজভী বলেন, “সুতরাং জনগণের দাবি হচ্ছে, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ঘোষণা করা। বর্তমান সংকট নিরসন করতে হলে সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।” রিজভী বলেন, “চলমান অবরোধের পাশাপাশি র্যাব-পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকে হত্যা, গুপ্তহত্যা ও বীভৎস দলন-পীড়নের প্রতিবাদে আজ থেকে শুরু হওয়া ঢাকা মহানগরীসহ ঢাকা বিভাগ ও খুলনা বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল সফল করার জন্য ২০ দলীয় জোটের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও দেশের সর্বস্তরের জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি।” নতুন বার্তা/জবা
No comments:
Post a Comment