ালন করা হয়। বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশেও বিভিন্ন অনুষ্ঠান-বক্তব্য-সেমিনার-র্যালির মাধ্যমে দিবসটি পালিত হচ্ছে। মানবাধিকার সর্বজনীন। এটি কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি, গোষ্ঠী, জাতি বা ধর্মের মানুষের জন্যে নয়। দেশে দেশে মানবাধিকার আজ চরম অবজ্ঞার সম্মুখীন। একজন মানুষের 'মানুষ' হিসেবে যে অধিকার পাবার কথা, তা তো পাচ্ছেই না, বরং মৌলিক যে অধিকারগুলো রয়েছে তাই পাচ্ছে না আজ বিশ্বের কোটি মানুষ। একজন মানুষ 'মানুষ' হিসেবে জন্ম নেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার মানবাধিকার নিয়ে জন্মায়। এটি তার জন্মগত অধিকার। এটি তার পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার। তবে, দুঃখের বিষয়, মানবের এ অধিকারকে আমরা যুগে যুগে মাটিতে মিশে যেতে দেখেছি। মানুষের এ অধিকার কেড়ে নেয় আরেকজন মানুষই। মানুষের অধিকার নিয়ে এ খেলা পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকেই দেখে আসতে দুনিয়াবাসী। যুগে যুগে মানুষের এ অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা কী এখনো চলছে না? চারদিকে একটু চোখ বুলালে এই প্রশ্নটার উত্তর খুব সহজেই আমরা পেতে পারি। আমরা এখন অনেক আধুনিক হয়েছি, হয়েছে ব্যাপক প্রাযুক্তিক উন্নয়ন; হয়ে গেছে অনেকক্ষেত্রেই অর্থনৈতিক উন্নয়নও। কিন্তু, তারপরও কী আমরা বলতে পারবো, মানবাধিকারের সুরক্ষা হচ্ছে? এক কথায় আমরা বলে দিতে পারি সুরক্ষা তো হচ্ছেই না, বরং আজ চরম অসহায় হয়ে পড়েছে মানবাধিকার। আজও আমরা বর্ণবাদী সংঘাত দেখতে পাই বিশ্বের আনাচে-কানাচে। আমেরিকার মতো সুসভ্য বলে পরিচিত ও অত্যাধুনিক একটি দেশেও সাদার হাতে কালোকে প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করতে দেখি। আবার দেখি, সেই সাদারই কোন বিচার ছাড়াই পার পেয়ে যেতে। মানবাধিকারকে আমরা লুণ্ঠিত দেখি, যখন আমরা দেখতে পাই দিল্লির ট্যাক্সিক্যাবে গণধর্ষিত হয় নারী। মানবাধিকারকে আমরা ধূলায় মিশতে দেখি, যখন লিমনের মতো নিরীহ শান্ত একটি ছেলেকে গুলি করে পঙ্গু করে দেয়া হয়। মানবাধিকার লজ্জায় মুখ লুকায়, যখন আমাদের রাজধানী শহরের রাজপথে বিশ্বজিতের মতো নিরীহ যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়; আবার সেই হত্যাকারীরা সমাজে খোলামেলা ঘুরে বেড়ায় প্রশাসন-পুলিশের নাকের ডগার উপর দিয়েই। অথচ এই শহরেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নেতাদেরকে ফেরারী পালিয়ে বেড়াতে হয়, গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের মতো কথিত সব মামলায়। মানবাধিকারকে আমরা মুখ লুকিয়ে হাসতে দেখি যখন, এই শহরেরই কোথাও না কোথাও প্রতিরাতে কোন না যুবককে গুলি করে, জবাই করে বস্তাবন্দী করে লাশ ডাস্টবিনে বা ডোবায় ফেলে রাখা হয়। মানবাধিকারকে আমরা মুখ ভেংচাতে দেখি যখন গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরা হয়। যখন, শহীদ মিনার ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে সেখানে কার লাশ যাবে বা যাবে না তার ঘোষণা দেয়া হয়। মানবাধিকার লজ্জায় মুখ লুকানোর পথ পায় না, যখন শিক্ষকের হাতে ছাত্রী ধর্ষিত হয়। যখন, মানবাধিকার দিবসের রাতে (১০ ডিসেম্বর) ঢাকার ফুটপাতে তীব্র শীতে কাতরাতে দেখি ফুটফুটে ছোট শিশুগুলোকে। যখন, পেটের দায়ে আমাদের সমাজেরই কোন কিশোরীকে গভীর রাতের ঢাকার পথচারী হতে। আসলে মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্যে যে মৌলিক ভিত্তিটা দরকার, সেটা না থাকলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবেই। এর কোন ব্যত্যয় ঘটবে না। মানবাধিকারের মৌলিক রক্ষাকবচ হচ্ছে সুশাসন, গণতন্ত্র আর সুশাসক। একজন সুশাসকই পারেন মানবাধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে। আর সুশাসকটি নির্ধারিত হবেন জনগণের দ্বারাই। যেখানে অন্যায় থাকবে না, সেখানেই আমরা সুশাসন দেখতে পাবো। তবে, যে শাসকের শাসক হওয়ার প্রক্রিয়াটিই অন্যায়, তার কাছ থেকে সুশাসন আশা করাটাও বোকামি। আর সুশাসন না থাকলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবেই। যুগে যুগে আমরা দেখেছি, স্বৈরাচার ও উগ্রবাদের হাতে মানবাধিকারকে পদদলিত হতে। সেটি কী এখনো হচ্ছে না দেশে দেশে, অঞ্চলে অঞ্চলে?
Wednesday, December 10, 2014
ধূলায় লুণ্ঠিত যে মানবাধিকার:Time News
ালন করা হয়। বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশেও বিভিন্ন অনুষ্ঠান-বক্তব্য-সেমিনার-র্যালির মাধ্যমে দিবসটি পালিত হচ্ছে। মানবাধিকার সর্বজনীন। এটি কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি, গোষ্ঠী, জাতি বা ধর্মের মানুষের জন্যে নয়। দেশে দেশে মানবাধিকার আজ চরম অবজ্ঞার সম্মুখীন। একজন মানুষের 'মানুষ' হিসেবে যে অধিকার পাবার কথা, তা তো পাচ্ছেই না, বরং মৌলিক যে অধিকারগুলো রয়েছে তাই পাচ্ছে না আজ বিশ্বের কোটি মানুষ। একজন মানুষ 'মানুষ' হিসেবে জন্ম নেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার মানবাধিকার নিয়ে জন্মায়। এটি তার জন্মগত অধিকার। এটি তার পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার। তবে, দুঃখের বিষয়, মানবের এ অধিকারকে আমরা যুগে যুগে মাটিতে মিশে যেতে দেখেছি। মানুষের এ অধিকার কেড়ে নেয় আরেকজন মানুষই। মানুষের অধিকার নিয়ে এ খেলা পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকেই দেখে আসতে দুনিয়াবাসী। যুগে যুগে মানুষের এ অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা কী এখনো চলছে না? চারদিকে একটু চোখ বুলালে এই প্রশ্নটার উত্তর খুব সহজেই আমরা পেতে পারি। আমরা এখন অনেক আধুনিক হয়েছি, হয়েছে ব্যাপক প্রাযুক্তিক উন্নয়ন; হয়ে গেছে অনেকক্ষেত্রেই অর্থনৈতিক উন্নয়নও। কিন্তু, তারপরও কী আমরা বলতে পারবো, মানবাধিকারের সুরক্ষা হচ্ছে? এক কথায় আমরা বলে দিতে পারি সুরক্ষা তো হচ্ছেই না, বরং আজ চরম অসহায় হয়ে পড়েছে মানবাধিকার। আজও আমরা বর্ণবাদী সংঘাত দেখতে পাই বিশ্বের আনাচে-কানাচে। আমেরিকার মতো সুসভ্য বলে পরিচিত ও অত্যাধুনিক একটি দেশেও সাদার হাতে কালোকে প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করতে দেখি। আবার দেখি, সেই সাদারই কোন বিচার ছাড়াই পার পেয়ে যেতে। মানবাধিকারকে আমরা লুণ্ঠিত দেখি, যখন আমরা দেখতে পাই দিল্লির ট্যাক্সিক্যাবে গণধর্ষিত হয় নারী। মানবাধিকারকে আমরা ধূলায় মিশতে দেখি, যখন লিমনের মতো নিরীহ শান্ত একটি ছেলেকে গুলি করে পঙ্গু করে দেয়া হয়। মানবাধিকার লজ্জায় মুখ লুকায়, যখন আমাদের রাজধানী শহরের রাজপথে বিশ্বজিতের মতো নিরীহ যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়; আবার সেই হত্যাকারীরা সমাজে খোলামেলা ঘুরে বেড়ায় প্রশাসন-পুলিশের নাকের ডগার উপর দিয়েই। অথচ এই শহরেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নেতাদেরকে ফেরারী পালিয়ে বেড়াতে হয়, গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের মতো কথিত সব মামলায়। মানবাধিকারকে আমরা মুখ লুকিয়ে হাসতে দেখি যখন, এই শহরেরই কোথাও না কোথাও প্রতিরাতে কোন না যুবককে গুলি করে, জবাই করে বস্তাবন্দী করে লাশ ডাস্টবিনে বা ডোবায় ফেলে রাখা হয়। মানবাধিকারকে আমরা মুখ ভেংচাতে দেখি যখন গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরা হয়। যখন, শহীদ মিনার ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে সেখানে কার লাশ যাবে বা যাবে না তার ঘোষণা দেয়া হয়। মানবাধিকার লজ্জায় মুখ লুকানোর পথ পায় না, যখন শিক্ষকের হাতে ছাত্রী ধর্ষিত হয়। যখন, মানবাধিকার দিবসের রাতে (১০ ডিসেম্বর) ঢাকার ফুটপাতে তীব্র শীতে কাতরাতে দেখি ফুটফুটে ছোট শিশুগুলোকে। যখন, পেটের দায়ে আমাদের সমাজেরই কোন কিশোরীকে গভীর রাতের ঢাকার পথচারী হতে। আসলে মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্যে যে মৌলিক ভিত্তিটা দরকার, সেটা না থাকলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবেই। এর কোন ব্যত্যয় ঘটবে না। মানবাধিকারের মৌলিক রক্ষাকবচ হচ্ছে সুশাসন, গণতন্ত্র আর সুশাসক। একজন সুশাসকই পারেন মানবাধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে। আর সুশাসকটি নির্ধারিত হবেন জনগণের দ্বারাই। যেখানে অন্যায় থাকবে না, সেখানেই আমরা সুশাসন দেখতে পাবো। তবে, যে শাসকের শাসক হওয়ার প্রক্রিয়াটিই অন্যায়, তার কাছ থেকে সুশাসন আশা করাটাও বোকামি। আর সুশাসন না থাকলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবেই। যুগে যুগে আমরা দেখেছি, স্বৈরাচার ও উগ্রবাদের হাতে মানবাধিকারকে পদদলিত হতে। সেটি কী এখনো হচ্ছে না দেশে দেশে, অঞ্চলে অঞ্চলে?
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment