তুলা চাষ করেছেন। গত বছর ১ বিঘায় ৩০ হাজার টাকা লাভ করে এবার তুলা চাষে জমি’র পরিমান বাড়িয়েছেন। তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ জিল্লর রহমান জানান, চলতি বছরে রংপুর অঞ্চলে ৭ হাজার ৬শ' ৭২ চাষি ২ হাজার ২শ' ৮০ হেক্টরে তুলা চাষ করেছেন। ২০১২-১৩ মওসুমে ৩ হাজার ৫শ' ৮ কৃষক ১ হাজার ৬শ' ৩ হেক্টরে এবং ২০১৩-১৪ মওসুমে ৫ হাজার ৮শ' ৮৪ কৃষক ১ হাজার ৮শ' ১৩ হেক্টর জমিতে তুলা আবাদ করেন। তিনি বলেন, তুলা একটি অর্থকরী ফসল। দেশের জলবায়ু ও মাটি তুলা চাষের উপযোগী হওয়ায় সারাদেশে তুলা চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের দেশে কার্পাস তুলা চাষ হয়। রংপুর অঞ্চলের চাষিরা তামাককে অর্থকরী ফসল হিসেবে জানলেও তামাক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক এবং অনেক সময় ক্ষতির আশঙ্কাও থাকে। কিন্তু তুলা বাজারজাতকরণে সুবিধাজনক দিক হলো তুলা বোর্ড কর্তৃক তুলার একটি নির্দিষ্ট মূল্য রয়েছে সবখানে। কৃষকরা যখন-তখন নগদ মূল্যে তুলা বিক্রি করতে পারেন। একজন কৃষক ৩৩ শতকে প্রতি বিঘা আবাদ করে ১২ মণ তুলা পায়, যা খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ২৫ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। তুলা চাষ করে একদিকে আর্থিক লাভবান, অন্যদিকে দেশের বস্ত্রের অভাব দূর হচ্ছে। চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান, বৃষ্টির পানি বা বন্যার পানি জমে না এবং গাছের ছায়া পড়ে এরূপ উঁচু দোআঁশ, এটেল, এটেল দোআঁশ মাটি তুলা চাষের জন্য উপযোগী। ২৫ আষাঢ় থেকে ২৫ শ্রাবণ তুলা চাষের জন্য উপযুক্ত সময়। তুলা ৬ মাসে আবাদ করে ঘরে তোলা যায়। তুলা ফসলের পাতা মাটিতে পড়ে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। এদিকে অধিক ফলনের জন্য তুলা চাষে আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণের লক্ষ্যে কৃষকের দ্বারপ্রান্তে তুলাচাষি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কৃষি খাতে উন্নয়ন ঘটিয়ে সরকার বস্ত্র খাতের দিকে ঝুঁকেছে। আর এ কারণে সম্প্রসারিত তুলা চাষ প্রকল্প ক্লেজ-১ নামক প্রকল্পের তুলা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী ৪ বছরের জন্য ১০৫ কোটি টাকা একনেকের বৈঠকে অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে রংপুর জোনে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে তুলা আবাদের মাধ্যমে ৪-৫ লাখ বেল তুলা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কর্মসূচির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিশেষ করে যেখানে ধানের উৎপাদন কম হয় ওইসব লবণাক্ত ও খরা জমিতে তুলা উৎপাদনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বর্তমানে যেখানে ৪২ লাখ বেল তুলা প্রয়োজন, সেখানে তুলা উৎপাদন হচ্ছে দেড় লাখ বেল। এতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে তুলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। অন্যদিকে তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, মানুষের মৌলিক চাহিদার জন্য বস্ত্র অন্যতম। একসময় এ দেশে মসলিন কাপড়ের সুনাম ছিল। বস্ত্রশিল্পের কাঁচামাল তুলা। ১৯৭২ সালে তুলা উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে ১৯৭৪-৭৫ সালে মাঠপর্যায়ে পরীক্ষামূলক তুলা চাষ শুরু হয়। চলতি ২০১৪-১৫ মওসুমে বরেন্দ্র এলাকায় শস্য বহুমুখীকরণে তুলা চাষ সম্প্রসারণ কর্মসূচির আওতায় চাষি পর্যায়ে ১৭ হেক্টর জমিতে প্রত্যাশিত মানের বীজ উৎপাদন ব্লক ও ১০ বিঘা জমিতে জাতভিত্তিক প্রদর্শনী ক্ষেত্র বোর্ডের গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় ৬ বিঘা জমিতে তুলার পার্টিসিপটরি রিসার্স প্লট স্থাপন করা হয়েছে। যার কৃষি উপকরণসমূহ চাষিদের মধ্যে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। উপকরণ সরবরাহ ছাড়াও প্রান্তিক চাষিদের মধ্যে বিভাগীয় ও জিনার কর্তৃক ঋণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রকল্প কর্মসূচি অর্থায়নে ৬৩০ জন এবং বোর্ডের প্রশিক্ষণ খামারে ২৫ জন তুলাচাষিকে চাষে আধুনিক প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। উচ্চফলনশীল জাত সিবি-১২ ও সিবি-১৪ চাষ করে বিঘাপ্রতি ১০ মণ ও হাইব্রিড তুলা চাষ করে ১৫ মণ ফলন পাওয়া যায়। তুলার বীজ থেকে উন্নতমানের ভোজ্য তেল, গো-খাদ্য, মাছের খাদ্য, জৈব সার ও সাবান তৈরির উপজাত পাওয়া যায় বলে তুলা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। এআর
Monday, December 8, 2014
উত্তরাঞ্চলে তুলা চাষ বাড়ছে:Time News
তুলা চাষ করেছেন। গত বছর ১ বিঘায় ৩০ হাজার টাকা লাভ করে এবার তুলা চাষে জমি’র পরিমান বাড়িয়েছেন। তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ জিল্লর রহমান জানান, চলতি বছরে রংপুর অঞ্চলে ৭ হাজার ৬শ' ৭২ চাষি ২ হাজার ২শ' ৮০ হেক্টরে তুলা চাষ করেছেন। ২০১২-১৩ মওসুমে ৩ হাজার ৫শ' ৮ কৃষক ১ হাজার ৬শ' ৩ হেক্টরে এবং ২০১৩-১৪ মওসুমে ৫ হাজার ৮শ' ৮৪ কৃষক ১ হাজার ৮শ' ১৩ হেক্টর জমিতে তুলা আবাদ করেন। তিনি বলেন, তুলা একটি অর্থকরী ফসল। দেশের জলবায়ু ও মাটি তুলা চাষের উপযোগী হওয়ায় সারাদেশে তুলা চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের দেশে কার্পাস তুলা চাষ হয়। রংপুর অঞ্চলের চাষিরা তামাককে অর্থকরী ফসল হিসেবে জানলেও তামাক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক এবং অনেক সময় ক্ষতির আশঙ্কাও থাকে। কিন্তু তুলা বাজারজাতকরণে সুবিধাজনক দিক হলো তুলা বোর্ড কর্তৃক তুলার একটি নির্দিষ্ট মূল্য রয়েছে সবখানে। কৃষকরা যখন-তখন নগদ মূল্যে তুলা বিক্রি করতে পারেন। একজন কৃষক ৩৩ শতকে প্রতি বিঘা আবাদ করে ১২ মণ তুলা পায়, যা খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ২৫ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। তুলা চাষ করে একদিকে আর্থিক লাভবান, অন্যদিকে দেশের বস্ত্রের অভাব দূর হচ্ছে। চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান, বৃষ্টির পানি বা বন্যার পানি জমে না এবং গাছের ছায়া পড়ে এরূপ উঁচু দোআঁশ, এটেল, এটেল দোআঁশ মাটি তুলা চাষের জন্য উপযোগী। ২৫ আষাঢ় থেকে ২৫ শ্রাবণ তুলা চাষের জন্য উপযুক্ত সময়। তুলা ৬ মাসে আবাদ করে ঘরে তোলা যায়। তুলা ফসলের পাতা মাটিতে পড়ে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। এদিকে অধিক ফলনের জন্য তুলা চাষে আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণের লক্ষ্যে কৃষকের দ্বারপ্রান্তে তুলাচাষি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কৃষি খাতে উন্নয়ন ঘটিয়ে সরকার বস্ত্র খাতের দিকে ঝুঁকেছে। আর এ কারণে সম্প্রসারিত তুলা চাষ প্রকল্প ক্লেজ-১ নামক প্রকল্পের তুলা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী ৪ বছরের জন্য ১০৫ কোটি টাকা একনেকের বৈঠকে অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে রংপুর জোনে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে তুলা আবাদের মাধ্যমে ৪-৫ লাখ বেল তুলা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কর্মসূচির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিশেষ করে যেখানে ধানের উৎপাদন কম হয় ওইসব লবণাক্ত ও খরা জমিতে তুলা উৎপাদনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বর্তমানে যেখানে ৪২ লাখ বেল তুলা প্রয়োজন, সেখানে তুলা উৎপাদন হচ্ছে দেড় লাখ বেল। এতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে তুলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। অন্যদিকে তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, মানুষের মৌলিক চাহিদার জন্য বস্ত্র অন্যতম। একসময় এ দেশে মসলিন কাপড়ের সুনাম ছিল। বস্ত্রশিল্পের কাঁচামাল তুলা। ১৯৭২ সালে তুলা উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে ১৯৭৪-৭৫ সালে মাঠপর্যায়ে পরীক্ষামূলক তুলা চাষ শুরু হয়। চলতি ২০১৪-১৫ মওসুমে বরেন্দ্র এলাকায় শস্য বহুমুখীকরণে তুলা চাষ সম্প্রসারণ কর্মসূচির আওতায় চাষি পর্যায়ে ১৭ হেক্টর জমিতে প্রত্যাশিত মানের বীজ উৎপাদন ব্লক ও ১০ বিঘা জমিতে জাতভিত্তিক প্রদর্শনী ক্ষেত্র বোর্ডের গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় ৬ বিঘা জমিতে তুলার পার্টিসিপটরি রিসার্স প্লট স্থাপন করা হয়েছে। যার কৃষি উপকরণসমূহ চাষিদের মধ্যে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। উপকরণ সরবরাহ ছাড়াও প্রান্তিক চাষিদের মধ্যে বিভাগীয় ও জিনার কর্তৃক ঋণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রকল্প কর্মসূচি অর্থায়নে ৬৩০ জন এবং বোর্ডের প্রশিক্ষণ খামারে ২৫ জন তুলাচাষিকে চাষে আধুনিক প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। উচ্চফলনশীল জাত সিবি-১২ ও সিবি-১৪ চাষ করে বিঘাপ্রতি ১০ মণ ও হাইব্রিড তুলা চাষ করে ১৫ মণ ফলন পাওয়া যায়। তুলার বীজ থেকে উন্নতমানের ভোজ্য তেল, গো-খাদ্য, মাছের খাদ্য, জৈব সার ও সাবান তৈরির উপজাত পাওয়া যায় বলে তুলা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। এআর
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment