তরের এই দিনটিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন আরেকটি ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা হয়েছিল। বাঙালির মনোবলে আঘাত হানতে বঙ্গোপসাগরের দিকে যাত্রা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইয়াহিয়ার চেষ্টা-তদবিরের কারণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের পরামর্শে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন সপ্তম নৌবহরকে যাত্রার নির্দেশ দেন। এতেও মুক্তিসংগ্রামে লিপ্ত বাঙালি মুক্তিসেনাদের মনোবল একটুও ভাঙেনি। অত্যন্ত দাপটের সঙ্গে লড়াই অব্যাহত রেখেই চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলার মুক্তিকামীরা। মুক্তিযুদ্ধের দিন যতই এগিয়ে আসছিল, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যুদস্ত হয়ে পড়ছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধারাও একের পর এক মুক্ত করে চলছিলেন অবরুদ্ধ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। একাত্তরের এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর প্রায় তিন শতাধিক সেনা শহীদ হন। আশুগঞ্জ শত্রুমুক্ত হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে মিত্রবাহিনী আশুগঞ্জ দখলের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আশুগঞ্জে তখনো পাকিস্তানি বাহিনীর অন্তত তিনটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন অবস্থান করছিল। ৯ ডিসেম্বর দুপুরের পর মিত্রবাহিনী আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা দেয়ালের ৫০ গজের মধ্যে এসে পড়ে। এ সময় পাকিস্তানি বাহিনীর দুটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন মিত্রবাহিনীর ওপর আকস্মিক আক্রমণ চালায়। বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন সোহাগপুর গ্রামে একপেশে হামলার শিকার হয় মিত্রবাহিনী। অল্প সময়ের মধ্যে চার সেনা কর্মকর্তাসহ মিত্রবাহিনীর তিন শতাধিক সেনা শহীদ হয়। এ সময় পাকিস্তানি বাহিনী মিত্রবাহিনীকে ধাওয়া করলে উপজেলার দুর্গাপুর এলাকায় দুই পক্ষে প্রচণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। মিত্রবাহিনীর আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। গ্রামবাসীও লাঠিসোঁটা নিয়ে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয়। ওই দিন সন্ধ্যার মধ্যেই মিত্রবাহিনীর বিমান হামলায় পাকিস্তানি বাহিনী সম্পূর্ণ পর্যদুস্ত হয়। এই যুদ্ধে শতাধিক পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। ৯ ডিসেম্বর নিয়াজি বার্তা পাঠালেন রাওয়ালপিন্ডিতে। এতে নিয়াজির বক্তব্য ছিল- আকাশে শত্রুদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পলায়নরত সেনাদের এখন কোনোভাবেই সংগঠিত করা সম্ভব নয়। শত্রুসেনা কামান ও ট্যাংক থেকে অবিরাম গোলা নিক্ষেপ চলছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটাপন্ন। বাঙালির কাছে বিধ্বস্ত ও পরাজিত হয়ে শেষ পর্যন্ত মাথা নিচু করেই তাদের বিদায় নিতে হয়েছে এ দেশের পবিত্র মাটি থেকে। যুদ্ধও তখন প্রায় শেষপর্যায়ে চলে গিয়েছিল। চলছিল শুধু দখলদার হানাদার বাহিনীকে বাংলার মাটি থেকে তাড়ানোর চেষ্টা। এমআর/ এআর
Tuesday, December 9, 2014
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরেকটি ষড়যন্ত্র:Time News
তরের এই দিনটিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন আরেকটি ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা হয়েছিল। বাঙালির মনোবলে আঘাত হানতে বঙ্গোপসাগরের দিকে যাত্রা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইয়াহিয়ার চেষ্টা-তদবিরের কারণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের পরামর্শে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন সপ্তম নৌবহরকে যাত্রার নির্দেশ দেন। এতেও মুক্তিসংগ্রামে লিপ্ত বাঙালি মুক্তিসেনাদের মনোবল একটুও ভাঙেনি। অত্যন্ত দাপটের সঙ্গে লড়াই অব্যাহত রেখেই চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলার মুক্তিকামীরা। মুক্তিযুদ্ধের দিন যতই এগিয়ে আসছিল, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যুদস্ত হয়ে পড়ছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধারাও একের পর এক মুক্ত করে চলছিলেন অবরুদ্ধ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। একাত্তরের এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর প্রায় তিন শতাধিক সেনা শহীদ হন। আশুগঞ্জ শত্রুমুক্ত হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে মিত্রবাহিনী আশুগঞ্জ দখলের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আশুগঞ্জে তখনো পাকিস্তানি বাহিনীর অন্তত তিনটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন অবস্থান করছিল। ৯ ডিসেম্বর দুপুরের পর মিত্রবাহিনী আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা দেয়ালের ৫০ গজের মধ্যে এসে পড়ে। এ সময় পাকিস্তানি বাহিনীর দুটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন মিত্রবাহিনীর ওপর আকস্মিক আক্রমণ চালায়। বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন সোহাগপুর গ্রামে একপেশে হামলার শিকার হয় মিত্রবাহিনী। অল্প সময়ের মধ্যে চার সেনা কর্মকর্তাসহ মিত্রবাহিনীর তিন শতাধিক সেনা শহীদ হয়। এ সময় পাকিস্তানি বাহিনী মিত্রবাহিনীকে ধাওয়া করলে উপজেলার দুর্গাপুর এলাকায় দুই পক্ষে প্রচণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। মিত্রবাহিনীর আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। গ্রামবাসীও লাঠিসোঁটা নিয়ে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয়। ওই দিন সন্ধ্যার মধ্যেই মিত্রবাহিনীর বিমান হামলায় পাকিস্তানি বাহিনী সম্পূর্ণ পর্যদুস্ত হয়। এই যুদ্ধে শতাধিক পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। ৯ ডিসেম্বর নিয়াজি বার্তা পাঠালেন রাওয়ালপিন্ডিতে। এতে নিয়াজির বক্তব্য ছিল- আকাশে শত্রুদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পলায়নরত সেনাদের এখন কোনোভাবেই সংগঠিত করা সম্ভব নয়। শত্রুসেনা কামান ও ট্যাংক থেকে অবিরাম গোলা নিক্ষেপ চলছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটাপন্ন। বাঙালির কাছে বিধ্বস্ত ও পরাজিত হয়ে শেষ পর্যন্ত মাথা নিচু করেই তাদের বিদায় নিতে হয়েছে এ দেশের পবিত্র মাটি থেকে। যুদ্ধও তখন প্রায় শেষপর্যায়ে চলে গিয়েছিল। চলছিল শুধু দখলদার হানাদার বাহিনীকে বাংলার মাটি থেকে তাড়ানোর চেষ্টা। এমআর/ এআর
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment