কার্যকরের অনুরোধ করছি।' করুণ কণ্ঠে এমনটাই দাবি জানান বিশ্বজিতের বড় ভাই উত্তম কুমার দাস। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর তৎকালীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ চলাকালে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে দর্জি বিশ্বজিৎ দাসকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। আলোচিত এ মামলার রায়ে ছাত্রলীগের গ্রেফতারকৃত ৮ নেতাকর্মীর ফাঁসি ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে এদের মধ্যে ১৩ জন এখনও পলাতক রয়েছে। এর মধ্যে ফাসিঁর আসামি রাজন তালুকদার ও মীর মোহাম্মদ নূরে আলম ওরফে লিমন পলাতক রয়েছেন, বাকিরা কারাগারে। রাজন তালুকদার এখন কলকাতায় অবস্থান করছেন। ইমরান, পাভেল ও আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন দয়াগঞ্জ এলাকায় বসবাস করছেন। বিশ্বজিতের পরিবার জানান, মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত ১৩ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের অনেকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাঝেমধ্যে তাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আশপাশেও দেখা যায়। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা আরো জানান, হত্যার রায় ঘোষণার প্রায় এক বছর পার হতে চললেও সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ১৩ আসামিকে পুলিশ ইচ্ছা করেই গ্রেফতার করছে না। আসামিরা সরকারি দলের হওয়ায় তাদের অনেকটা এড়িয়ে চলা হচ্ছে। আদালত তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও তাদের গ্রেফতারে পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। অবশ্য, পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়টি পুলিশের নজরে আছে বলে দাবি করেন একটি গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আসামিদের ধরতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো সচেষ্ট রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থান সম্পর্কে আমরা মোটামুটি নিশ্চিত। শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। আর এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি এফ এম শরিফুর ইসলাম বলেন, ‘আমার ছত্রচ্ছায়ায় আসামিরা ঘুরে বেড়ান, এ কথা যারা বলেছেন, তারা হয়তো আমাকেই চেনেন না। ঘটনার পর আসামিদের সঙ্গে আমার কোনো প্রকার যোগাযোগ হয়নি। বর্তমানে তারা কে কোথায় আছেন, তাও জানি না আমি। এর আগে, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। অজ্ঞাত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল আহমেদ। পরবর্তী সময়ে মামলাটি অধিকতর তদন্ত ও আসামিদের গ্রেফতারের জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাস ২৪ দিন তদন্তের পর ২০১৩ সালের ৫ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ছাত্রলীগকর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর তাজুল ইসলাম। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন-ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, মীর নূরে আলম লিমন, আল-আমিন শেখ, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক, এ এইচ এম কিবরিয়া, মনোয়ারুল হক পাভেল, তারেক বিন জোহর ওরফে তমাল, গোলাম মোস্তাফা, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন, আলাউদ্দিন, ওবায়দুল কাদের, রফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম শাকিল, রাজন তালুকদার, খন্দকার ইউনুস আলী, সাইফুল ইসলাম, কাইউম মিয়া টিপু, কামরুল হাসান ও মোশারফ হোসেন। চার্জশিট আমলে নিয়ে ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ৮ জন হলেন- রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন, কাইউম মিয়া টিপু, সাইফুল ইসলাম, রাজন তালুকদার ও মীর মো. নূরে আলম লিমন। যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত হচ্ছেন মো. ওবায়দুল কাদের ওরফে তাহসিন, ইমরান হোসেন ওরফে ইমরান, মো. আলাউদ্দিন, মনিরুল হক ওরফে পাভেল, আজিজুর রহমান ওরফে আজিজ, আল আমিন শেখ, রফিকুল ইসলাম, খন্দকার মো. ইউনুস আলী ওরফে ইউনুস, তারিক বিন জহুর ওরফে তমাল, গোলাম মোস্তফা, কিবরিয়া, মোহম্মদ কামরুল হাসান ও মোশাররফ হোসেন ওরফে মোশারফ। এদের মধ্যে কেবল গোলাম মোস্তফা ও কিবরিয়া ছাড়া বাকিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীরা নির্মমভাবে পেটায় ও কোপান। বাঁচার জন্য দৌঁড় দিলে তিনি শাঁখারীবাজারের রাস্তার মুখে পড়ে যান। রিকশাচালক রিপন তাঁকে রিকশায় তুলে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বিশ্বজিৎকে মৃত ঘোষণা করেন। ইআর
Tuesday, December 9, 2014
হত্যাকাণ্ডের ২ বছর: রায় কার্যকরের দাবি বিশ্বজিৎ পরিবারের:Time News
কার্যকরের অনুরোধ করছি।' করুণ কণ্ঠে এমনটাই দাবি জানান বিশ্বজিতের বড় ভাই উত্তম কুমার দাস। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর তৎকালীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ চলাকালে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে দর্জি বিশ্বজিৎ দাসকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। আলোচিত এ মামলার রায়ে ছাত্রলীগের গ্রেফতারকৃত ৮ নেতাকর্মীর ফাঁসি ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে এদের মধ্যে ১৩ জন এখনও পলাতক রয়েছে। এর মধ্যে ফাসিঁর আসামি রাজন তালুকদার ও মীর মোহাম্মদ নূরে আলম ওরফে লিমন পলাতক রয়েছেন, বাকিরা কারাগারে। রাজন তালুকদার এখন কলকাতায় অবস্থান করছেন। ইমরান, পাভেল ও আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন দয়াগঞ্জ এলাকায় বসবাস করছেন। বিশ্বজিতের পরিবার জানান, মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত ১৩ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের অনেকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাঝেমধ্যে তাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আশপাশেও দেখা যায়। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা আরো জানান, হত্যার রায় ঘোষণার প্রায় এক বছর পার হতে চললেও সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ১৩ আসামিকে পুলিশ ইচ্ছা করেই গ্রেফতার করছে না। আসামিরা সরকারি দলের হওয়ায় তাদের অনেকটা এড়িয়ে চলা হচ্ছে। আদালত তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও তাদের গ্রেফতারে পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। অবশ্য, পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়টি পুলিশের নজরে আছে বলে দাবি করেন একটি গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আসামিদের ধরতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো সচেষ্ট রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থান সম্পর্কে আমরা মোটামুটি নিশ্চিত। শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। আর এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি এফ এম শরিফুর ইসলাম বলেন, ‘আমার ছত্রচ্ছায়ায় আসামিরা ঘুরে বেড়ান, এ কথা যারা বলেছেন, তারা হয়তো আমাকেই চেনেন না। ঘটনার পর আসামিদের সঙ্গে আমার কোনো প্রকার যোগাযোগ হয়নি। বর্তমানে তারা কে কোথায় আছেন, তাও জানি না আমি। এর আগে, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। অজ্ঞাত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল আহমেদ। পরবর্তী সময়ে মামলাটি অধিকতর তদন্ত ও আসামিদের গ্রেফতারের জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাস ২৪ দিন তদন্তের পর ২০১৩ সালের ৫ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ছাত্রলীগকর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর তাজুল ইসলাম। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন-ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, মীর নূরে আলম লিমন, আল-আমিন শেখ, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক, এ এইচ এম কিবরিয়া, মনোয়ারুল হক পাভেল, তারেক বিন জোহর ওরফে তমাল, গোলাম মোস্তাফা, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন, আলাউদ্দিন, ওবায়দুল কাদের, রফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম শাকিল, রাজন তালুকদার, খন্দকার ইউনুস আলী, সাইফুল ইসলাম, কাইউম মিয়া টিপু, কামরুল হাসান ও মোশারফ হোসেন। চার্জশিট আমলে নিয়ে ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ৮ জন হলেন- রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন, কাইউম মিয়া টিপু, সাইফুল ইসলাম, রাজন তালুকদার ও মীর মো. নূরে আলম লিমন। যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত হচ্ছেন মো. ওবায়দুল কাদের ওরফে তাহসিন, ইমরান হোসেন ওরফে ইমরান, মো. আলাউদ্দিন, মনিরুল হক ওরফে পাভেল, আজিজুর রহমান ওরফে আজিজ, আল আমিন শেখ, রফিকুল ইসলাম, খন্দকার মো. ইউনুস আলী ওরফে ইউনুস, তারিক বিন জহুর ওরফে তমাল, গোলাম মোস্তফা, কিবরিয়া, মোহম্মদ কামরুল হাসান ও মোশাররফ হোসেন ওরফে মোশারফ। এদের মধ্যে কেবল গোলাম মোস্তফা ও কিবরিয়া ছাড়া বাকিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীরা নির্মমভাবে পেটায় ও কোপান। বাঁচার জন্য দৌঁড় দিলে তিনি শাঁখারীবাজারের রাস্তার মুখে পড়ে যান। রিকশাচালক রিপন তাঁকে রিকশায় তুলে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বিশ্বজিৎকে মৃত ঘোষণা করেন। ইআর
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment