িজেরা কেঁদেছেন, কাঁদিয়েছেন উপস্থিত সবাইকে। তাদের একেকজনের বিবরণে ভারী হয়ে উঠছিল পরিবেশ। ‘মানবাধিকার হরণ: এ কী পরিস্থিতিতে দেশ’ শিরোনামের এই আলোচনার আয়োজন করে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি। সকালে শুরু হওয়া আলোচনার প্রথম পর্বে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতার বিবরণ দেন। পরের পর্বের দেশের বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য দেন। সবুজবাগ থানা ছাত্রদল নেতা মাহবুব হাসানের স্ত্রী তানজিনা আক্তারের অভিযোগ, এক বছর আগে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিচয় দেওয়া লোকজন। তিনি বলেন, ‘দুই সন্তান নিয়ে আমাদের দিনগুলো কীভাবে কাটছে, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।’ নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের মো. রফিক বলেন, ২০০০ সালের ২৩ অক্টোবর সেনাবাহিনী ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় তার ছেলে জামাল নিহত হন। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকি। আজ এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছি। বাড়িতে ফিরে আমার কী পরিস্থিতি হবে— তা ভাবতেও পারি না।’ রাজধানীর মিরপুর কালশি বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দা শহীদ আলী বাহাদুর অভিযোগ করে বলেন, ‘ক্যাম্প দখল করার জন্য নয়জনকে হত্যা করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে একজনকে পিটিয়ে মেরেছে পুলিশ। এর এক মাস আগে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে জাবেদ নামের একজনকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত আমাদের ক্যাম্প দখলের চেষ্টা হচ্ছে।’ যশোরের মালোপাড়ার বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘হামলার শিকার হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী আমাদের তিনটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। একটাও পূরণ হয়নি। পুলিশ আসামি ধরে। ১০-১২ দিন পরে আসামির জামিন হয়ে যায়।’ এভাবে বেলা পৌনে ১১টা থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের প্রায় ২০ জন সদস্য তাদের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। পরে দ্বিতীয় পর্বে শুরু হয় বিশিষ্টজনদের বক্তৃতা। এ পর্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে বিচার বিভাগীয় দুটি কমিশন গঠনের দাবি জানান বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, গুম-খুন-অপহরণের ঘটনায় একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশন হবে। বিচার বিভাগীয় অপর কমিশনটি হবে আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির আগে এই কমিশন দুটি গঠন করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব অভিযোগ তদন্তের দাবি জানান শাহদীন মালিক। অনুষ্ঠানে র্যা বের ‘ক্রসফায়ার’ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এসবের পেছনে রয়েছে দেশের সংঘাতময় রাজনীতি। সংঘাতের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি। আলোচনায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এদেশের সবচেয়ে বড় মানবাধিকার হরণের ঘটনা ঘটেছে ৫ জানুয়ারি। ওইদিন দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সংবিধান রক্ষার জন্য এ নির্বাচন করা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন পার হওয়ার পর এখন তিনি পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা বলছেন। মান্না বলেন, আমরা দুর্নীতিকে যেভাবে না বলব, ঠিক ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে একইভাবে না বলব। আলোচনায় আরো অংশ নেন- আইনজীবী সারা হোসেন, মানবাধিকারকর্মী শাহনাজ হুদা প্রমুখ। আলোচনা শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়। মন্তব্য
Wednesday, December 10, 2014
‘তারা কাঁদলেন, কাঁদালেন সবাইকে’:RTNN
‘তারা কাঁদলেন, কাঁদালেন সবাইকে’ নিজস্ব প্রতিবেদক আরটিএনএন ঢাকা: মঞ্চে এসে কেউ শোনাচ্ছেন তার স্বামীকে তুলে নেওয়া থেকে না পাওয়ার দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা। কারো বর্ণনায় ভারী হয়ে আসছে পরিবেশ, কেউ অঝোরে চোখের পানি ফেলে বলে চলেছেন, সন্তান হারানোর মর্মস্পশী অভিজ্ঞতা। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নানাভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এভাবেই তাদের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন। তারা ন
িজেরা কেঁদেছেন, কাঁদিয়েছেন উপস্থিত সবাইকে। তাদের একেকজনের বিবরণে ভারী হয়ে উঠছিল পরিবেশ। ‘মানবাধিকার হরণ: এ কী পরিস্থিতিতে দেশ’ শিরোনামের এই আলোচনার আয়োজন করে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি। সকালে শুরু হওয়া আলোচনার প্রথম পর্বে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতার বিবরণ দেন। পরের পর্বের দেশের বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য দেন। সবুজবাগ থানা ছাত্রদল নেতা মাহবুব হাসানের স্ত্রী তানজিনা আক্তারের অভিযোগ, এক বছর আগে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিচয় দেওয়া লোকজন। তিনি বলেন, ‘দুই সন্তান নিয়ে আমাদের দিনগুলো কীভাবে কাটছে, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।’ নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের মো. রফিক বলেন, ২০০০ সালের ২৩ অক্টোবর সেনাবাহিনী ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় তার ছেলে জামাল নিহত হন। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকি। আজ এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছি। বাড়িতে ফিরে আমার কী পরিস্থিতি হবে— তা ভাবতেও পারি না।’ রাজধানীর মিরপুর কালশি বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দা শহীদ আলী বাহাদুর অভিযোগ করে বলেন, ‘ক্যাম্প দখল করার জন্য নয়জনকে হত্যা করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে একজনকে পিটিয়ে মেরেছে পুলিশ। এর এক মাস আগে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে জাবেদ নামের একজনকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত আমাদের ক্যাম্প দখলের চেষ্টা হচ্ছে।’ যশোরের মালোপাড়ার বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘হামলার শিকার হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী আমাদের তিনটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। একটাও পূরণ হয়নি। পুলিশ আসামি ধরে। ১০-১২ দিন পরে আসামির জামিন হয়ে যায়।’ এভাবে বেলা পৌনে ১১টা থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের প্রায় ২০ জন সদস্য তাদের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। পরে দ্বিতীয় পর্বে শুরু হয় বিশিষ্টজনদের বক্তৃতা। এ পর্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে বিচার বিভাগীয় দুটি কমিশন গঠনের দাবি জানান বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, গুম-খুন-অপহরণের ঘটনায় একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশন হবে। বিচার বিভাগীয় অপর কমিশনটি হবে আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির আগে এই কমিশন দুটি গঠন করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব অভিযোগ তদন্তের দাবি জানান শাহদীন মালিক। অনুষ্ঠানে র্যা বের ‘ক্রসফায়ার’ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এসবের পেছনে রয়েছে দেশের সংঘাতময় রাজনীতি। সংঘাতের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি। আলোচনায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এদেশের সবচেয়ে বড় মানবাধিকার হরণের ঘটনা ঘটেছে ৫ জানুয়ারি। ওইদিন দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সংবিধান রক্ষার জন্য এ নির্বাচন করা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন পার হওয়ার পর এখন তিনি পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা বলছেন। মান্না বলেন, আমরা দুর্নীতিকে যেভাবে না বলব, ঠিক ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে একইভাবে না বলব। আলোচনায় আরো অংশ নেন- আইনজীবী সারা হোসেন, মানবাধিকারকর্মী শাহনাজ হুদা প্রমুখ। আলোচনা শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়। মন্তব্য
িজেরা কেঁদেছেন, কাঁদিয়েছেন উপস্থিত সবাইকে। তাদের একেকজনের বিবরণে ভারী হয়ে উঠছিল পরিবেশ। ‘মানবাধিকার হরণ: এ কী পরিস্থিতিতে দেশ’ শিরোনামের এই আলোচনার আয়োজন করে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি। সকালে শুরু হওয়া আলোচনার প্রথম পর্বে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতার বিবরণ দেন। পরের পর্বের দেশের বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য দেন। সবুজবাগ থানা ছাত্রদল নেতা মাহবুব হাসানের স্ত্রী তানজিনা আক্তারের অভিযোগ, এক বছর আগে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিচয় দেওয়া লোকজন। তিনি বলেন, ‘দুই সন্তান নিয়ে আমাদের দিনগুলো কীভাবে কাটছে, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।’ নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের মো. রফিক বলেন, ২০০০ সালের ২৩ অক্টোবর সেনাবাহিনী ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় তার ছেলে জামাল নিহত হন। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকি। আজ এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছি। বাড়িতে ফিরে আমার কী পরিস্থিতি হবে— তা ভাবতেও পারি না।’ রাজধানীর মিরপুর কালশি বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দা শহীদ আলী বাহাদুর অভিযোগ করে বলেন, ‘ক্যাম্প দখল করার জন্য নয়জনকে হত্যা করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে একজনকে পিটিয়ে মেরেছে পুলিশ। এর এক মাস আগে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে জাবেদ নামের একজনকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত আমাদের ক্যাম্প দখলের চেষ্টা হচ্ছে।’ যশোরের মালোপাড়ার বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘হামলার শিকার হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী আমাদের তিনটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। একটাও পূরণ হয়নি। পুলিশ আসামি ধরে। ১০-১২ দিন পরে আসামির জামিন হয়ে যায়।’ এভাবে বেলা পৌনে ১১টা থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের প্রায় ২০ জন সদস্য তাদের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। পরে দ্বিতীয় পর্বে শুরু হয় বিশিষ্টজনদের বক্তৃতা। এ পর্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে বিচার বিভাগীয় দুটি কমিশন গঠনের দাবি জানান বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, গুম-খুন-অপহরণের ঘটনায় একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশন হবে। বিচার বিভাগীয় অপর কমিশনটি হবে আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার জন্য। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির আগে এই কমিশন দুটি গঠন করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব অভিযোগ তদন্তের দাবি জানান শাহদীন মালিক। অনুষ্ঠানে র্যা বের ‘ক্রসফায়ার’ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এসবের পেছনে রয়েছে দেশের সংঘাতময় রাজনীতি। সংঘাতের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি। আলোচনায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এদেশের সবচেয়ে বড় মানবাধিকার হরণের ঘটনা ঘটেছে ৫ জানুয়ারি। ওইদিন দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সংবিধান রক্ষার জন্য এ নির্বাচন করা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন পার হওয়ার পর এখন তিনি পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা বলছেন। মান্না বলেন, আমরা দুর্নীতিকে যেভাবে না বলব, ঠিক ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে একইভাবে না বলব। আলোচনায় আরো অংশ নেন- আইনজীবী সারা হোসেন, মানবাধিকারকর্মী শাহনাজ হুদা প্রমুখ। আলোচনা শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়। মন্তব্য
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment