Sunday, December 21, 2014

তেলের বাজারে ধস, দাম কমাচ্ছে না বাংলাদেশ:RTNN

তেলের বাজারে ধস, দাম কমাচ্ছে না বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক আরটিএনএন ঢাকা: বিশ্ববাজারে গত ছয় মাসে তেলের দাম নেমে গেছে প্রায় অর্ধেকে। তবে এই মূল্যহ্রাসের প্রভাব পড়েনি বাংলাদেশের বাজারে। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও স্থানীয় বাজারে দাম কমানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। এর কারণ হিসেবে তিনি জ্বালানি তেলে দেওয়া ভর্তুকির কথা উল্লেখ করেছেন। তেলের দাম
অনেকখানি কমে যাওয়ায় সরকারের ভর্তুকিখাতে এখন সাশ্রয়ের সম্ভাবনা দেখো দিলেও, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনও বলছে, বিশ্ববাজারে মূল্যহ্রাসের ফলে এখন তারা আগের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলের দাম না কমালেও বাড়তি অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করাটা জরুরি। বাংলাদেশে সর্বশেষ জ্বালানি তেলের মূল্য কমেছিল প্রায় ৭ বছর আগে। এরপর বেশ কয়েক দফা তেলের দাম বাড়ানো হলেও কমার কোনো সম্ভাবনা দেখা যায়নি। তবে এবার বিশ্ববাজারে তেলের নাটকীয় দরপতনের পর আলোচনায় উঠে এসেছে তেলের দাম কমানোর ইস্যু। বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বলছে, বিশ্ববাজারে দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে গত দুই মাস যাবৎ তারা সব ধরনের জ্বালানি তেলেই লাভ করছেন। বিপিসির চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলছিলেন, এখন লাভে থাকলেও এই মুনাফা থেকে তারা আগের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। ‘আগের ঘাটতির কারণে বিপিসির প্রচুর পরিমাণ বকেয়া দায়-দেনা রয়ে গেছে। এখন যেটুকু লাভ হচ্ছে তা থেকে সেই বকেয়া দায়-দেনা কমাতে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে।’ গত অর্থবছরেও বিপিসির লোকসানের পরিমাণ ছিল প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। ইউনুসুর রহমান বলছেন, ডিজেল এবং কেরোসিনে সব সময় তারা ভর্তুকি দিয়ে আসলেও এই অর্থবছরে এ দুটি তেলেও তাদের মুনাফা হচ্ছে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম বলছেন, বাংলাদেশে তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে নির্ধারিত হয় না, এটি মূলত সরকারি নীতির ওপরেই নির্ভর করে এবং যে কারণে বিশ্ববাজারে দাম কমার সরাসরি কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়ছে না। তিনি বলছিলেন, সরকার যদি এখন সঠিকভাবে উদ্বৃত্ত অর্থ ব্যবহার করতে পারে, তাহলে এটি ভবিষ্যতে তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হবে। এর আগে ২০০৮ সালে সর্বশেষ যখন তেলের দাম কমেছিল তখন ম তামিম ছিলেন তত্ত্বাবধায় সরকারের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অধ্যাপক তামিম বলছিলেন, স্থানীয় বাজারে তেলের দাম কমানো হলেও, এর প্রভাব পরিবহন খরচ কিংবা পণ্যের দামে খুব বেশি পড়ে না। মূলতঃ ব্যবসায়ীরাই এর দ্বারা লাভবান হন। ‘ব্যবসায়ীদের পকেটে টাকা না দিয়ে সরকার যদি এই টাকা ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করে একটি তহবিল গঠন করতে পারে, তাহলেই ভাল হবে।’ তবে ম তামিমের মতে, বিদ্যুতের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকার হয়তো ফার্নেস অয়েলের দাম কমানোর চিন্তা করতে পারে। সেক্ষেত্রে হয়তো এখন বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রয়োজন হবে না। ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলছেন, সরকার যদি অর্থ উদ্বৃত্ত রাখতে চান তবে, সেখানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, ভর্তুকি বা যেভাবেই তেলের মূল্য স্থিতিশীল রাখা হোক না কেন, সেই অর্থ ভোক্তারাই দিচ্ছে। ‘এ সমস্ত অর্থগুলো সরকার কিভাবে ব্যবহার করছে তার কোনো স্বচ্ছতা বা স্পষ্টতা নেই। আমরা এ ধরনের অর্থ ব্যবহারের নীতিমালা চাই এবং জনস্বার্থসম্মত ব্যবহারের নিশ্চয়তা চাই।’ বিশ্ববাজারে এখন তেলের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে কমে গেলেও, এই অবস্থা কতদিন চলবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন তেলের মূল্য কমানো হলেও বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়তো স্থানীয়ভাবেও সেটি বাড়াতে হতে পারে। যে কারণে এখনি হয়তো সরকার এই ঝুঁকিটা নিতে চাইবেন না। সূত্র: বিবিসি বাংলা মন্তব্য      


No comments:

Post a Comment