
ক্লাবে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘শিশু জিহাদের করুণ মৃত্যুতে শোক এবং উদ্ধারকারী তরুণদের সম্মাননা’ সভায় শাহদীন মালিক এসব কথা বলেন। সভায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘জিহাদের উদ্ধাকারী এসব তরুণদের প্রশিক্ষক করে উদ্ধার তৎপরতা চালানো ফায়ার সার্ভিসের বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার।’ শাহদীন মালিক বলেন, ‘সরকারি উদ্ধার বাহিনীতে বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ ও পদোন্নতি হয়। যোগ্যতা আর দক্ষতার এখানে কোনো মূল্য নেই। উদ্ধার করা শিশুর জন্য ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক একটি অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন ছিল, এই জ্ঞানও আমাদের দেশের সরকারি বাহিনীর কর্তাব্যক্তিদের মাথায় সেদিন আসেনি।’ তিনি বলেন, ‘মরে গিয়ে শিশু জিহাদ বোধ হয় বিরোধী দলের সদস্য হয়ে গেছে। মানুষ নামের উদ্ভট প্রাণি আমাদের শাসন করছে। এই পাগলা (অ্যাবনরমাল) সরকারের কাছে তাই আর কিছুই চাওয়ার নেই। সব চাওয়া জিহাদকে উদ্ধারকারী এই তরুণদের মত তরুণ সমাজের কাছে।’ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘জিহাদের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আমরা আমাদের রাষ্ট্র নামক যন্ত্রের মৃত্যু দেখেছি। একই সঙ্গে সততা ও সক্ষমতার মৃত্যু দেখেছি। এর প্রধান নায়ক অথর্ব, অক্ষম এই সরকার।’ তিনি বলেন, ‘এরপরেও সাধারণ মানুষের উদ্দীপনা আমাদের বার বার উদ্দীপ্ত করে। জিহাদকে উদ্ধারকারী মুন, ফারুকদের দেখেই আমরা একটি সৎ ও সক্ষম সরকারের স্বপ্ন দেখি।’ সভায় স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘এ সমাজকে ক্যান্সারমুক্ত করতে হলে এমন তরুণ প্রজন্মই প্রয়োজন। যারা জিহাদকে উদ্ধার করেছে, তারাই পারবে এদেশকে ক্যান্সারমুক্ত করতে।’ সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না উপস্থিত শিশু জিহাদকে উদ্ধারকারীদের দেখিয়ে বলেন, ‘ওরাই মুক্তিযুদ্ধের সন্তান। আর সরকারে যারা আছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ব্যবসা করে।’ তিনি বলেন, ‘একজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী রাস্তায় বের হলে হাই-সিকিউরিটির ব্যবস্থা করা হয় অথচ উদ্ধারের স্বার্থে জিহাদের পড়ে যাওয়া পাইপের পাশে কোনো ব্যারিকেডের ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।’ এ সময় মান্না স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ফায়ার ব্রিগেডের কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি জিহাদ উদ্ধারের অসম্ভবকে সম্ভব করায় উদ্ধারকারী তরুণদের ১৬ কোটি মানুষের পক্ষ থেকে সম্মাননা জানান। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে শিশু জিহাদকে উদ্ধারকারী দলের বেশ কয়েকজন বক্তব্য দেন। তারা এই উদ্ধারের কৃতিত্ব দেশের ১৬ কোটি মানুষকে উৎসর্গ করেন। উদ্ধারকারী শাহ মো. আব্দুল্লাহ আল মুন বলেন, ‘জিহাদকে উদ্ধারের পুরো কৃতিত্ব জাতির। আমরা বাঙালি, ইচ্ছে করলে সব পারি। জিহাদ উদ্ধারই তার প্রমাণ।’ তিনি বলেন, ‘আমরা একে অপরের ভুল না ধরে সবাই এক সঙ্গে কাজ করলে দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’ আরেক উদ্ধারকারী শফিকুল ইসলাম ফারুক বলেন, ‘আমরা জিহাদকে উদ্ধারের কৃতিত্ব দেশের ১৬ কোটি মানুষকে উৎসর্গ করেছি। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি- সব ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবেলায় পূর্বপ্রস্তুতি রাখার, যাতে এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন যেন আর না হতে হয়।’ উদ্ধারকারী সুজন দাস রাহুলও সরকারের দৃষ্টিআকর্ষণ করে বলেন, ‘আমারা যেন আর এ ধরনের দুর্ঘটনার সম্মূখীন না হই।’ এ সময় উদ্ধারকারীরা দেশবাসীর কাছে জিহাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করার আহ্বান জানান। মন্তব্য
No comments:
Post a Comment