Monday, December 1, 2014

বেসরকারি খাতে পেনশন চালুর উদ্যোগ:RTNN

বেসরকারি খাতে পেনশন চালুর উদ্যোগ নিজস্ব প্রতিবেদক আরটিএনএন ঢাকা: বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের পেনশনের আওতায় আনার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সামান্য ভর্তুকি দেওয়ার চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে। সরকারি খাতের কর্মকর্তা কর্মচারিদের পেনশন ব্যবস্থা শুরু থেকে চলে আসছে। তবে দেশের উন্নতিতে বেসরকারি খাতের অবদান বেশি হওয়া সত্বেও এ খাতের চাকরিজীবীরা কোনো পেনশন পান না। এ বাস্তবতার ন
িরিখে সংগঠিত বেসরকারি খাতে পেনশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কার্যক্রম শুরু করেছে অর্থমন্ত্রণালয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সম্প্রতি অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলমকে দেওয়া এক নির্দেশনায় সরকারের এমন ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। ‘বেসরকারি সংগঠিত খাতে জাতীয় পেনশনব্যবস্থা প্রবর্তন’ শীর্ষক নির্দেশনায় দুই সচিবকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও বলেছেন মন্ত্রী। যেসব প্রতিষ্ঠানের হিসাব সঠিকভাবে সংরক্ষিত হয়, দৈনন্দিন কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার রয়েছে এবং অন্তত ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়, সেগুলোকেই সংগঠিত খাত বোঝানো হচ্ছে। নির্দেশনায় মুহিত বলেছেন, ‘আমাদের দেশে প্রচলিত নীতি অনুযায়ী শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই নিয়মিত পেনশন পেয়ে থাকেন। এমনকি আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার ক্ষেত্রেও পেনশনের তেমন ব্যবস্থা নেই। এ প্রেক্ষাপটে বেসরকারি সংগঠিত খাতে একটি পেনশনব্যবস্থা প্রবর্তনের বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে।’ এ বছরের জুনে প্রণীত জাতীয় বিমানীতিতেও বেসরকারি খাতে পেনশন ও অবসরকালীন আর্থিক নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রবর্তন করার কথা বলা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বেসরকারি খাতে পেনশনব্যবস্থা চালু করা হবে মূলত জাতীয় পেনশন কর্মসূচির আওতায়। তবে এটি আপাতত পরীক্ষামূলক হবে। অর্থাৎ বেসরকারি কিন্তু সংগঠিত— এ রকম কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানেই চালু করা হবে এই পেনশনব্যবস্থা। দেশে বেসরকারি খাতে কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই সরকারের কাছে। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী ছোট-বড় মিলিয়ে ৪২ হাজার ৫৯২টি কলকারখানা রয়েছে দেশে। এসব কলকারখানার ৯৯ শতাংশই বেসরকারি মালিকানাধীন। এগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ৫০ লাখ। এর বাইরে টেলিযোগাযোগ, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি করছেন। এ বিষয়ে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার জানান, সরকার কোনো খসড়া তৈরি করে পাঠালে তারা মতামত দেবেন। তবে বেসরকারি ব্যাংকে বর্তমানে গ্র্যাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফাণ্ড চালু রয়েছে এবং গ্র্যাচুইটি থাকলে পেনশন থাকতে পারে না। আশা ইন্টারন্যাশনালের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) এনামুল হক বলেন, আশাসহ বড় এনজিওগুলোতে গ্র্যাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু রয়েছে। এর পরও পেনশন কীভাবে চালু হতে পারে, তার ওপর এখনই কোনো মন্তব্য করতে পারছেন না তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসলাম আলম বলেন, ‘আমরা চাই বেসরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ কল্যাণ। গ্র্যাচুইটির পাশাপাশি পেনশন চালু থাকতে পারে। তবে এটা কীভাবে করা যায়, তার আগে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। সেই কাজটিই এখন করা হবে।’ উল্লেখ্য, একটি প্রতিষ্ঠানে ২০ বছর চাকরি করে সর্বশেষ মূল বেতন যদি ২৫ হাজার টাকা হয়, তাহলে চাকরি শেষে তিনি গ্র্যাচুইটি পাবেন মোট চাকরির বয়সের প্রতিবছরের জন্য ২৫ হাজার টাকার দ্বিগুণ অর্থাৎ ৫০ হাজার টাকা। সে হিসাবে মোট পাবেন তিনি ১০ লাখ টাকা। কতটি দেশে বেসরকারি খাতে পেনশন পদ্ধতি চালু রয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে পারেননি সচিব আসলাম। প্রতিবেশি ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় রয়েছে কি না, জানতে চাইলে সচিব জানান, এ তথ্য তার কাছে নেই। তবে এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মডেল বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারের উদ্যোগ বাস্তবায়নে জাতীয় তথ্যভান্ডার তৈরি করা হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে ২০১৮ সাল থেকে কিছু প্রতিষ্ঠানকে পেনশনের আওতায় আনা হবে। তবে সরকারের উদ্দেশ্য পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে ২০২১ সাল থেকে। সচিবদের দেওয়া নির্দেশনায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী একটা অঙ্গীকার ছিল যে আমরা বেসরকারি খাতেও পেনশনব্যবস্থা চালু করব। এ বিষয়টি নির্বাচন-পরবর্তীকালে দৃষ্টির বাইরে চলে গেছে। এটাকে আবার জাগ্রত করতে হবে।’ সরকারের এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কেও সঙ্গে রাখতে অর্থ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকে পরামর্শ দেন মুহিত। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। ইতিমধ্যে কিছু বৈঠক হয়েছে। আরও কিছু বৈঠক ডেকে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।’ ২০২১ সাল থেকে সারা দেশেই তা পুরোপুরিভাবে চালু করা সম্ভব বলে মনে করেন সচিব আসলাম আলম। মন্তব্য pay per click    


No comments:

Post a Comment