৪০ দফার কাঠমান্ডু ঘোষণায় শেষ হচ্ছে সার্ক সম্মেলন মো. কামরুজ্জামান, সার্ক শীর্ষ সম্মেলন থেকে আরটিএনএন কাঠমান্ডু: আর কিছু সময়ের মধ্যেই শুরু হতে যাচ্ছে ১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী পর্ব। দক্ষিণ এশিয়ার এই সর্বোচ্চ ফোরামকে আরো কার্যকর ও সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে ৩৫ থেকে ৪০ দফা কাঠমান্ডু ঘোষণার মধ্যদিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান। ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি সমা
পনী অধিবেশনে যোগ দেয়ার জন্য সিটি হলে এসেছেন। নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা তাকে স্বাগত জানান। সার্কভুক্ত আট দেশের সরকার প্রধান এবং উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সমাপনী অনুষ্ঠানেই কাঠমান্ডু ঘোষণা দেয়া হবে। উল্লেখ্য, আট সদস্য দেশের ঐকমত্য না থাকায় তিন দশকেও খুব বেশি সাফল্য পায়নি দক্ষিণ এশিয়ার ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে জন্মলাভকারী দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক)। তিন বছর পর অনুষ্ঠিত হলো এবারের সম্মেলন। এর আগে ২০১১ সালে মালদ্বীপের রাজধানী মালে থেকেও বেশ খানিকটা দূরে ভারত মহাসাগরের বুকে কোনোমতে মাথা উঁচু করে জেগে থাকা আদ্দু সিটিতে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সম্মেলন ও উদ্যোগ বাস্তবায়নকে নিয়মিতকরণের অংশ হিসেবে প্রতি দুই বছরে অন্তত একটি করে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত থাকছে এবারের কাঠমান্ডু ঘোষণায়। এছাড়া ‘শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য গভীর প্রয়াস’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হওয়া এবারের সম্মেলনের মূল থিমকে স্বাগত জানিয়েছে এরই মধ্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলো। এছাড়া কাঠমান্ডু ঘোষণায় দক্ষিণ এশীয় অর্থনৈতিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অবাধ বাণিজ্য চালু, সার্ক উন্নয়ন তহবিল, যোগাযোগ, জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ, সাগর অর্থনীতি, ২০১৫ সাল-পরবর্তী উন্নয়ন এজেন্ডা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অভিবাসন, পর্যটন, সন্ত্রাসবাদ, সুশাসন, সার্ক সচিবালয়সহ সার্কের প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার মতো বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এসেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেছেন, কাঠমান্ডু ঘোষণায় বাংলাদেশের জাতীয় অগ্রাধিকারের অনেক বিষয় স্থান পেয়েছে। আর এটিই এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশের বড় অর্জন। সূত্রে আরো জানা গেছে, কাঠমান্ডু ঘোষণায় দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে সার্ক নেতারা নিজেদের সহযোগিতা জোরদারে অঙ্গীকার করবেন। এ লক্ষ্যে তারা সহযোগিতা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, নিরাপত্তা, অবকাঠামো, যোগাযোগ খাতের বিভিন্ন প্রকল্প অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এবং নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হবে- ফলাফলভিত্তিক এমন প্রকল্প, কর্মসূচি ও কার্যক্রম নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কাঠমান্ডু ঘোষণার খসড়ায় সার্কের সহযোগিতা আরো জোরদারের লক্ষ্যে ইতোপূর্বে সই হওয়া চুক্তি ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সার্ক সচিবালয়ের ক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার নেতারা সার্ককে আরো গতিশীল ও কার্যকর করতে বিভিন্ন বহুপক্ষীয় সংস্থায় অভিন্ন অবস্থান নেওয়া, ফলাফলভিত্তিক নীতি, কর্মসূচি ও প্রকল্প গ্রহণ এবং প্রতি তিন বছর পর পর সার্কের বিভিন্ন কাঠামোর পর্যালোচনার জন্য কাজের অগ্রগতি ও বাধা থাকলে তা মূল্যায়ন করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাশাপাশি এখন থেকে প্রতি বছর সার্কভুক্ত দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির প্রতিবেদন প্রকাশের মতো বিষয়টিও থাকবে কাঠমান্ডু ঘোষণায়। সন্ত্রাস দমনে অভিন্ন অবস্থান, আন্তর্জাতিক ফোরামে সার্কভুক্ত দেশের অভিন্ন কণ্ঠ উচ্চারণের মতো বিষয়ও স্থান পাবে এই ঘোষণায়। মন্তব্য pay per click
No comments:
Post a Comment