নয়া দিল্লি: বাংলাদেশের বিজয় দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চান নরেন্দ্র মোদি৷ সে জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সংসদে পাশ করতে উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এবং নরেন্দ্র মোদির সেই কাজ অনেকটাই সহজ করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ে সায় দেয়ার পরই এই চুক্তি কার্যকর করতে উঠেপড়ে লেগেছে মোদির সরকার৷ আগামী ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় বি
দসের আগে সংসদে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় বিল পাশ করিয়ে নিতে চাইছে কেন্দ্র৷ আর তার পরই বাংলাদেশ সফরে যেতে চান মোদি৷ আজ ভারতীয় মিডিয়া এই খবর দিয়েছে। ভারতীয় মিডিয়া লিখছে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল জেনারেল নিয়াজির অধীনস্থ পাক সেনাবাহিনী৷ তার স্মরণেই বাংলাদেশে বিজয় উৎসব পালন করা হয়৷ এ বছর সেই অনুষ্ঠানকে আরও মধুর করতে চায় ভারত৷ সংসদে চুক্তি পাশ করা গেলে, তার পরেই মোদি ঢাকা সফর করবেন এবং পরবর্তী সময়ে হাসিনাও দিল্লিতে আসবেন৷ তাই সংসদের আসন্ন শীত অধিবেশনে এই বিল পাশ করাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এই চুক্তির পোশাকি নাম ল্যান্ড বাউন্ডারি এগ্রিমেন্ট বা স্থল সীমান্ত চুক্তি৷ প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ২০১১ সালে মনমোহন সিং বাংলাদেশে গিয়ে স্থল সীমান্ত চুক্তি করে এসেছিলেন৷ কিন্ত্ত নিয়মানুযায়ী, সংসদে এই চুক্তির অনুমোদন করতে হবে ও সংবিধান সংশোধন বিল পাশ করাতে হবে৷ বাংলাদেশের পার্লামেন্টে বিল অনুমোদিত হয়েছে৷ কিন্ত্ত ভারতে মনমোহনের আমলে বিল পাশ করা যায়নি৷ কারণ, সে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার পাশাপাশি বেঁকে বসেছিল বিজেপি-ও৷ আসামের বিজেপি নেতারা ছিটমহল বিনিময়ের তীব্র বিরোধী ছিলেন৷ সংসদে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী সুষমা স্বরাজ জানিয়ে দেন, বিজেপি কিছুতেই এই বিল সমর্থন করবে না৷ কারণ, ছিটমহল বিনিময় হলে, আসামে অনেক বেশি জমি বাংলাদেশকে দিতে হবে৷ মোদির আমলে অবস্থা পাল্টেছে৷ মমতা এবার দিল্লি এসে জানিয়েছেন, কেন্দ্র উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিলে তিনি ছিটমহল বিনিময়ে রাজি৷ আর এই ক্ষতিপূরণ রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করতে হবে৷ এ ব্যাপারে কেন্দ্রের কোনো আপত্তি নেই৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং সকলেই এই চুক্তির পক্ষে৷ তাই অসমের নেতাদের বিরোধিতা খুব একটা আমল পাবে না৷ কংগ্রেস প্রথম থেকেই এই বিলের পক্ষে৷ আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ আগেই জানিয়েছিলেন, ছিটমহল বিনিময়ে তার কোনো আপত্তি নেই৷ মমতাও সমর্থন করছেন৷ ফলে দুই তৃতীয়াংশ ভোটে এই বিল পাশ করাতে সরকারের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়৷ প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান, মায়ানমারে গেলেও এখনও বাংলাদেশ সফরে যাননি মোদি৷ তার অন্যতম কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় ও তিস্তা চুক্তি দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া পড়ে থাকা৷ তিস্তা নিয়ে মমতা তার আগের আপত্তি থেকে সরে আসেননি৷ ফলে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধিতাকে উড়িয়ে দিয়ে তিস্তা চুক্তি করা সম্ভব নয়৷ কিন্ত্ত ছিটমহল বিনিময় চুক্তির রূপায়ণ সম্ভব৷ তাই বাংলাদেশের মানুষকে এই উপহার দিতে পারলে মোদির ঢাকা সফর সফল হবে৷ মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেয়ার সময় হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত সে সময় বিদেশ সফররত হাসিনা আসতে পারেননি৷ সীমান্ত চুক্তি সংসদে অনুমোদিত হলে হাসিনাও ভারতে আসতে পারবেন৷ নতুন বার্তা/এসএফ
No comments:
Post a Comment