Thursday, November 27, 2014

কারা হচ্ছেন পার্বত্য বোর্ড ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান? :Natun Barta

রাঙামাটি: আইন সংশোধনের কাজ শেষ হয়েছে, তাও ছয় দিন। এখনও কোনো খবর নেই। কারা হচ্ছেন উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান? এই আলোচনায় চায়ের কাপে ঝড় তুলছে পার্বত্য মানুষ। সাধারণ মানুষের বিশ্লেষণ সব সময় সাধারণই থেকে যায়। তবে ফলে যায় ছত্রেছত্রে; তারা মতপ্রকাশ করে অনেক গভির ও সূক্ষ্মভাবে। এসব মতামত সাধারণ হলেও অগ্রাহ্য করার কোনো সুযোগ নেই। সেই জনমত বলছে, নিখিল কুমার চাকমাই আবারো হতে চলেছেন জেলা পরিষদের চে
য়ারম্যান। এর পেছনে বেশ যুক্তিও তুলে ধরছেন তারা। যেমন এই চেয়ারম্যান সবার কাছে অতিপ্রিয়, পাঁচ বছরে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন, তিনি সাম্প্রদায়িক চিন্তা তেমন একটা করেন না, চেয়ারম্যান থাকার সুবাধে রাজধানীর ওপর তলায় তার অবাধ যাতায়াত ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে বিপরীত যুক্তি যে কেউ দিচ্ছেন না এমন নয়, তবে জোর প্রতিবাদও কেউ করতে পারছেন না। তবে একটি বিষয়ে সবাই একমত চেয়ারম্যান হবেন আওয়ামী লীগেরই কোনো একজন নেতা। নতুন জেলা পরিষদ গঠনে তিন জেলার আলোচনাই মুখে মুখে থাকলেও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ যেন এবার মুখ্য আলোচ্য বিষয়। এর অবশ্য কয়েকটি কারণ-সমীকরণ রয়েছে। যেমন এই জেলায় এবার রয়েছে জোড়া এমপি। আবার দীর্ঘ বছর পর ক্ষমতাসীন দলের এমপি তার আসনে ফিরে আসতে পারেননি। যিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তাদের চিন্তা-চেতনা সরকারের বিপরীত। পক্ষান্তরে সব কাজেই সরকারকে এই এমপিকে বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে ইত্যাদি। একইভাবে যিনি মনোনীত এমপির আসন পেয়েছেন তারও নিজস্ব কিছু চিন্তা-চেতনা রয়েছে, সবার ওপরে দাদা তো আছেনই। তার সমান্তরালে রয়েছেন এমন একজন যিনি চাকমা সম্প্রদায়ের বাইরে। দণ্ডমুণ্ডের মূল ধরে বসে থাকা সেই প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে কি মন্ত্রণা দেবেন তার ওপরই অনেক কিছু নির্ভর করছে। তবে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে এবার কারা আসছেন এমন আলোচনায় প্রথমেই রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে তার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশী। যোগ্যতায়, অভিজ্ঞতায় চেহারায় এবং তদবিরে তিনি এগিয়ে রয়েছেন। যোগ্যতা অভিজ্ঞতায় অবশ্য সাবেক চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজাও কম নন কিন্তু জনশ্রুতি রয়েছে, তার তদবিরের জোর কম। এ ছাড়া সম্ভাব্য চেয়ারম্যানের তালিকায় রয়েছেন বরকল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার চাকমা, বর্তমানে পরিষদ সদস্য ও কাউখালীর নেতা অংশুই প্রু চৌধুরী এবং বাঘাইছড়ির আওয়ামী লীগ নেতা কেরল চাকমা। ইতিমধ্যে এদের সবার গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জমা পড়েছে। এর মধ্যে কেউ কেউ চেয়ারম্যান না হলেও দ্বিতীয় অপসন হিসেবে নিদেনপক্ষে সদস্য হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তবে সূত্র বলছে, চেয়ারম্যান মনোনয়নে প্রধানমন্ত্রী নিজের বিবেচনা ছাড়াও বর্তমান পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী এবং তার দুইজন উপদেষ্টাসহ অন্তত চারজন মন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। এই পরামর্শকদের মধ্যে কার ঝুঁলিতে কয়জন রয়েছেন তার উপরই নির্ভর করছে চেয়ারম্যানের ভাগ্য। সূত্র জানায়, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর ভিশন বিবেচনা করলে কাপ্তাইয়ে অংশ চাইন চৌধুরীকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখা গেলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না। সদস্য এবার বেশী, তাই লবিংও বেশী এরসঙ্গে যোগ হয়েছে জেএসএস কোটা। তথ্য রয়েছে ২৯ অক্টোবর আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পরিষদ গঠনের বিষয়ে একান্ত আলোচনা করেছেন। সেখানেই পরিষদের পরিসর বৃদ্ধির বিষয়টিও আলোচনা করা হয়। জেএসএস বিবৃতি দিয়ে আইন সংশোধনের বিরোধিতা করলেও বিষয়টি আগে থেকেই তাদের গোচরে ছিল। তবে সদস্য কোটায় জেএসএসের কয়জন স্থান পাবে তা কোনোভাবেই প্রকাশ করা হয়নি। ১৪ জন সদস্যের মধ্যে রাঙামাটি পরিষদে চাকমা উপজাতি থেকে চারজন প্রতিনিধি, মারমা উপজাতির দুইজন, খেয়াং, লুসাই ও পাংখোয়া উপজাতির একজন, ত্রিপুরা উপজাতির একজন, তঞ্চঙ্গ্যা উপজাতির একজন, অ-উপজাতীয় থেকে তিনজন সদস্য, অ-উপজাতি থেকে একজন মনোনীত নারী সদস্য ও উপজাতি থেকে একজন মনোনীত নারী সদস্য রাখার বিধান করা হয়েছে। এখানে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে এরা হলেন- সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি মুছা মাতব্বর, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজি সোলায়মান, যুবলীগ নেতা মুজিবুল হক, সাবেক যুবলীগ সভাপতি মো. জমির উদ্দীন, জাকির হোসেন, লংগদুর আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহীম ও জানে আলম, কাপ্তাই থেকে মফিজুর রহমান, নানিয়ারচরের ত্রিদীব দাশ এবং শহরের বাদল চন্দ্র দে ও অমর কুমার দে। বাঙালি কোঠায় দলীয় পরিচয়ের বাইরে সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে এবং বিজয় রতন দে এর নামও জোরোশোরে আলোচনায় রয়েছে। নারী সদস্যদের মধ্যে অনীল তঞ্চঙ্গ্যার সহধর্মিনী শান্তনা চাকমা, নারীনেত্রী টুকু তালুকদার, লংবতি ত্রিপুরা, পৌর কাউন্সিলর রোকসানা আক্তার, জেবুন্নেসা রহীম, মনোয়ারা জসিম ও শীলা রায় এর নাম শোনা গেছে। এখান থেকে দুইজন এমনকি তিনজন সদস্যও পরিষদে স্থান পেতে পারে। কারণ প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। এর বাইরে উপজাতীয় কোটায় কেরল চাকমা,অভয় প্রকাশ চাকমা, সমেরশ দেওয়ান, বৃষ কেতু চাকমা আশীষ কুমার চাকমা নব, সদানন্দ চাকমা, অংশু চাইন চৌধুরী, অংশুই প্রু চৌধুরী, অংচা মারমা,উবাচ মারমা, আশীষ কুমার নব, মিন্টু মারমা, জয়সেন তঞ্চঙ্গ্যা, মৃণাল তঞ্চঙ্গ্যা ও অভিলাষ তঞ্চঙ্গ্যার নাম শোনা গেছে। তবে এই তালিকার বাইরেও অনেকের নাম শোনা গেছে, যারা লবিং তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। নতুন বার্তা/এমবি/জিহ  

No comments:

Post a Comment