আরব নারীদের পাশ্চাত্যমুখীতার নেপথ্যের কারণ মো: কামরুজ্জামান বাবলু টাইম নিউজ বিডি, ১১ মে, ২০১৫ ০৯:৩৯:৩৩ ইরাকি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ স্থপতি (Architect ) জাহা হাদীদ হলেন সৌভাগ্যবান সেই প্রথম আরব নারী যিনি স্থাপত্যকর্মের জন্য মর্যাদাপূর্ণ প্রিতজকার (Pritzker) পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। একই গৌরব অর্জনকারী আরেক নারী হলেন লেবাননে জন্মগ্রহণকারী আমেরিকান ফ্যাশন ডিজাইনার রিম আকরা। পুরুষতান্ত্রিক আরব বিশ্বের মধ্য
প্রাচ্য থেকে গত দুই দশকে যেসব নারী উদ্যোক্তা সফলতার আশায় সব বাধা ছিন্ন করে দু:সাহসের সাথে নিজের জন্মভূমি থেকে বেরিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে গমন করেছিলেন তাদেরই অন্যতম জাহা ও রিম। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারায় এই দুই নারী অর্থনৈতিকভাবে অনেক সুবিধা পেয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো তাদেরকে এখনও এমনসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে যা একই পেশায় নিয়োজিত কোন পশ্চিমা নারীকে মোকাবেলা করতে হয় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই বিপত্তির ধরণ প্রায় একই রকম হয়ে থাকে। আর সেটা হলো খোদ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেই নারীদের উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করা হয়। আর প্রবাসী নারীরা বহিরাগত সম্প্রদায় থেকে উঠে আসার কারণেও তাদেরকে অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বদেশের পিছুটানও তাদের জন্য প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। বৃহত্তর পরিসরের বাজারে অবশ্য একজন নারী উদ্যোক্তার জন্য অধিক সুযোগ রয়েছে। তবে, এটা অনেকটাই নির্ভর করে সেই নারী আসলে কী করতে চায় তার ওপর। কিন্তু তারপরও একজন অভিবাসী হিসেবে তাকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের নারীদের ব্যবসায়ীক নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ করে এবং এসব নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে- এমনই একটি সংগঠন “আরব-আমেরিকান উইমেন’স বিসনেস কাউন্সিল”-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিনি ওহির মতে যখনই কোন নারী বিদেশে গমন করেন তখন প্রথম প্রতিবন্ধকতাই আসে তার পরিবার থেকে। তিনি বলেন, ব্যবসা করতে গেলে নারীদেরকে পরিবার থেকে সব সময় উৎসাহ দেয়া হয় না। অথচ ছেলেদেরকে এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়। মধ্য-প্রাচ্য থেকে প্রথম প্রজন্মের যেসব নারী অভিবাসী হিসেবে এসেছেন তাদেরকে তীব্রভাবেই এই পারিবারিক বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। এমনকী মধ্যপ্রাচ্য থেকে দ্বিতীয় প্রজন্মের যেই নারীরা বর্হিবিশ্বে গমন করেছেন তাদেরকেও একই পারিপারিক অসহযোগিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। রিনি ওহির মতে, যেসব নারী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন এবং সেখানে তাদের ভাগ্য নির্মান করেছেন তারা মনে করেন যে মধ্যপ্রাচ্যের তরুণ প্রজন্মকে তারা সফলতার রাস্তা দেখিয়েছেন। তিনি মনে করেন, মধ্য প্রাচ্য থেকে উঠে আসা যেসব নারী খ্যাতি অর্জন করেছেন এবং সম্মানজনক কোন পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন তারা হয়তো আর কখনো তাদের মাতৃভূমিতে স্থায়ীভাবে ফিরে যাবেন না, কিন্তু তাদের এই সফলতার মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে তাদের স্বজাতির গৌরবই বৃদ্ধি পায়। লেবাননে যা অসম্ভব সেটাই সম্ভব নিউইয়র্কে: লেবাননের রাজধানী বৈরুতের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার পর ১৯৮৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পাড়ি জমিয়েছিলেন রিম আকরা। আকরার বয়স ছিল তখন মাত্র ২০ বছর। আকরার দেশত্যাগের পেছনে তখন অবশ্য লেবাননে সংগঠিত গৃহযুদ্ধও বড় ভূমিকা রেখেছিল। পারিবারিক সহযোগিতা নিয়ে বিশ্বের অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতার শহর নিউইয়র্কে আকরা তার ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তাও আবার যেনতেন কোন ব্যবসা নয়, বিশ্বের সেরা ফ্যাশনেবল শহরিতে আরব বিশ্ব থেকে আসা ওই নারী ফ্যাশন ডিজাইনের ব্যবসাটিই বেছে নিয়েছিলেন। তখন থেকে এখনও পর্যন্ত নিউইয়র্কেই বসবাস করছেন এই সংগ্রামী নারী এবং চালিয়ে যাচ্ছেন তার ব্যবসা। নিজ দেশ লেবাননে এমন ব্যবসায়িক সফলতা কখনই পেত না আকরা। অথচ নিউইয়র্কের মতো জায়গায় যেখানে তার মতো মেয়ের পক্ষে হয়তো সর্বোচ্চ একটি পিননিক করাই শোভা পেত, সেখানেই তিনি এমন ব্যবসায়িক সফলতা অর্জন করেন। তবে, এজন্য তাকে কম কাঠ-খড় পোহাতে হয়নি। তার ভাষায়, “নিউইয়র্ক কোন সহজ জায়গা নয়, এখানে ভয়ানক প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই কিছু অর্জন করতে হয়”। আজ থেকে ৩২ বছর আগে আরব নারী আকরা যখন আমেরিকার মাটিতে পা রেখেছিলেন তখন ফ্যাশন জগতে কিছু বিখ্যাত নারী কাজ করতেন। তবে এরপরও নিজের সক্ষমতা প্রমান করতে আকরাকে তার সাথের পুরুষ সহকর্মীর দ্বিগুন কাজ করতে হতো। সময়ের ব্যবধানে আজ আকরার ডিজাইনের পোশাক প্রতিনিয়ত শোভা পাচ্ছে হলিউডের মাটিতে। হলিউডের লালগালিচাকে প্রতিমুহুর্তে ছুয়ে যাচ্ছে আকরার পোশাক। অ্যানজেলিনা জোলি, ইভা লংগোরিয়া এবং জেনিফার লোপেজের মতো বিশ্ববিখ্যাত তারকাদের শোভা বর্ধন করে চলছে আকরার ডিজাইনে তৈরি পোশাক। আকরা মনে করেন, ক্যারিয়ারের প্রথম বছরগুলোতে যে ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, এখনকার পরিস্থিতি তার চেয়ে অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। এখন তিনি দেখতে পাচ্ছেন অনেক লেবানিজ নারীই প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করছেন না। কেউ কেউ নিউইয়র্কসহ পশ্চিমাবিশ্বের বিভিন্ন কলেজে অধ্যয়ন করছেন। মাত্র ১০ বছর আগেও আকরার কাছে এমন দৃশ্য ছিল একেবারেই বিরল। আকরার মতে, এটা এজন্যই সম্ভবপর হয়েছে যে, এখন আরব বিশ্বের পরিবারগুলো আগের চেয়ে অনেক উদার। তারা তাদের নারীদের সফলতার লড়াইয়ে বিদেশে পাড়ি জমানোর পথে আর আগের মতো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে না; বরং অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করছে। আরবীয় নারী হওয়াই যেন অপরাধ: এবার আবারও একটু ফিরে যাই ইরাকি বংশদ্ভুত ব্রিটিশ নারী স্থপতি জাহা হাদীদ প্রসঙ্গে যিনি স্থপত্য শিল্পে নিজের ক্যারিয়ার গড়েছেন। ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন হাদীদ। শিক্ষা জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হাদীদকে অপেক্ষা করতে হয় ৩০টি বছর। তিনি ১৯৮০ সালে স্থাপত্য পেশায় নিজেকে কাঙ্খিত পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। তিনি বেশি পরিচিত ভবিষ্যতকে ইঙ্গিত করে নির্মিত তার স্থাপত্য কর্মের জন্য। এসব কর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো-২০১২ সালে অলিম্পিকের জন্য তৈরি লন্ডন অ্যাকুয়াটিক সেন্টার, যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাথিতে তৈরি কনটেম্পরারি আর্টস সেন্টার এবং স্পেনের জারাগোজায় তৈরি ব্রিজ প্যাভিলিয়ন। এছাড়া জন্মভূমি ইরাকে বর্তমানে তার দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। অবশ্য দুই বছর আগে কাতার বিশ্বকাপ স্টেডিয়ামে তার কার্ভ ডিজাইন বেশ বিতর্কের জন্ম দেয়। তবে, নারী দেহের একটি স্পর্শকাতর অঙ্গকে ইঙ্গিত করে জাহার নির্মিত ওই বিতর্কিত ডিজাইনকে অবশ্য অশ্লীলতার পর্যায়ে ফেলতে নারাজ ওই আরব নারী। তিনি এটাকে আবেদনময়ী বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। জাহা বলেন, মধ্যপ্রাচ্য থেকে উঠে আসা একজন নারী হিসেবে লন্ডনে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে তাকে ব্যাতিক্রমধর্মী সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। জাহার ভাষায়, “তাকে সবচেয়ে কঠিন যেসব প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তা মোটেই তার কাজের জন্য নয়। প্রথমত একজন নারী হিসেবে, দ্বিতীয়ত একজন আরব হিসেবে এবং প্রধানত একজন আরব নারী হিসেবে নিজের অস্তিত্বই ছিল তার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ”। বিরুপ পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করা কিংবা শক্তহাতে প্রতিহত করা, নিজেকে বড় কিংবা ছোট হিসেবে পেশ করা, উদ্ধত কিংবা অনুগত হিসেবে উপস্থাপন করা, দাম্ভিক কিংবা সাদামাটাভাবে চলাচল-কোন কিছুতেই যেন নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না জাহা। তার মতে, প্রথম দিকের সেই দিনগুলোতে প্রচন্ড পরিশ্রম করে একটি বাধা অতিক্রম করলাম তো আরেক বিপত্তি এসে সামনে হাজির। এক পর্যায়ে আমার নারীত্বকে সবাই মেনে নিলেও আমার আরবীয় অস্তিত্বকে যেন কেউই মানতে চাচ্ছিল না। জাহা হাদীদ বলেন, এটা আমার পক্ষে বলা বেশ কঠিন কোন হীনমন্যতার কারণে অন্যরা আমাদের পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে। তবে একটি ঘটনা তিনি কখনই ভুলতে পারবেন না। সেটি হলো-এখন থেকে ২০ বছর আগে কার্ডিফ বে অপারা হাউজ (Cardiff Bay Opera House) নির্মানের প্রতিযোগিতায় তিনি বিজয়ী হন। কিন্তু একজন বিদেশী হওয়ার কারণে এটা নিয়েও বিতর্কের জন্ম দেন অনেকেই। এমনকী শেষ পর্যন্ত পুরস্কারটি প্রত্যাহার করা হয়। হাদীদের ফার্ম পুনরায় বিজয়ী হলে শেষ মেষ প্রকল্পটিই বাতিল করা হয়। তবে, পুরস্কার না পেলেও ৯০-এর দশক থেকে শুরু করে হাদীদের ফার্ম একের পর এক ডিজাইনের কাজ করে যায়। হাদীদের ভাষায়, আজও সেদিনের সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা একের পর এক প্রকল্প দাঁড় করিয়েছি যা বর্তমান সময়ের আলোচিত প্রকল্পেগুলোরই অন্যতম। নিজের ক্যারিয়ারের মূল্যায়ন করতে গিয়ে হাদীদ কখনো নিজেকে অনুকরণীয় মডেল হিসেবে মনে করেন না। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি যে বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন তা হলো তিনি যে অন্যদের প্রভাবিত করতে পারছেন তা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন। তার মতে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো-খুব সাদামাটাভাবে বললেও তিনি যেটি করতে সক্ষম হচ্ছেন সেটি হচ্ছে তিনি অপরাপর নারীদেরকে তাদের লক্ষ্য অর্জনে আত্মবিশ্বাসী এবং সাহসী হতে সাহায্য করছেন। শত বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও হাদীদের দৃঢ় মনোবল আর অধ্যবসায় তাকে সাফল্য এনে দেয়। নানা চড়াই উতড়াই পেরিয়ে ২০০৪ সালে তিনি গৌরবজনক প্রিতজকার আর্কিটেকচার পুরস্কার (Pritzker Architecture Prize in 2004) লাভ করেন। কিন্তু হাদীদের বক্তব্য হলো-এত কিছুর পরও তাকে এখনো নানা বাধার মুখোমুখি হতে হয় প্রতিনিয়ত। হাদীদের ভাষায়-আমার বর্তমান অবস্থা এমন নয় যে আমি কোথাও গেলাম আর অন্যরা আমার ডাকে “হ্যা” বলে এগিয়ে আসেন। বাস্তবতা হলো-সব সময়ই আমাকে লড়াই করতে হয়। যেই লড়াই শত শত বার করেছি এবং লড়াইয়ে জিতেছি- তা আজও আমাকে একইভাবে করতে হয়। যদিও আমি এখন প্রতিবন্ধকতাকে পেরিয়ে এগিয়ে চলছি, কিন্তু সব সময়ই এই এগিয়ে যাবার রাস্তাটি বড় লম্বা এবং কন্টকাকীর্ণ। মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে লন্ডনে ব্যবসা সহজ: ফিলিস্তিনি লেবানিজ রাশা খৌরি সাফল্যের আশায় গত কয়েক বছরে তার ব্যবসার একটি বড় অংশই পাশ্চাত্যে স্থানান্তর করেছেন। যে অল্প কয়েকজন নারী তথ্য-প্রযুক্তি খাতে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন রাশা তাদেরই একজন। তিনি সৌখিন ফ্যাশন বিপনী ওয়েবসাইট “দিয়া দিওয়ান (Dia Diwan)”-এর প্রতিষ্ঠাতা যদিও ওয়েবটি বর্তমানে অফলাইনে রয়েছে। তবে, তিনি এই ব্যবসাটিকে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে নিতে নানা পরিকল্পনা করছেন। খৌরি ইতিপূর্বে লেবাননের রাজধানী বৈরুত, দুবাই এবং লন্ডনে বসবাস করেছেন। বর্তমানে তিনি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্রিটেনভিত্তিক পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। এখনও মধ্যপ্রাচ্যের সাথে নিবীড় সম্পর্ক রেখে চললেও এই আরব নারী মনে করেন, ব্যবসায় ভালো করার জন্য তার পাশ্চাত্য গমন একটি যথাযথ পদক্ষেপ ছিল। তিনি অপরাপর নারী উদ্যোক্তাদের সহযোগিতাসহ উদ্যোক্তা নেটওয়ার্কের সক্রিয় সমর্থন পেয়ে যথেষ্ট লাভবান হয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে কখনই এই সহযোগিতা পাওয়া যেত না বলেও মনে করেন রাশা খৌরি। তিনি বলেন, সৌখিন ফ্যাশন জগতে যারা মডেল এবং অভিভাবক হিসেবে খ্যাত তাদের কাছে তার ছিল অবাধ প্রবেশাধিকার। রাশা তাদের সাথে আইডিয়া শেয়ার করার পাশাপাশি তাদের সমর্থন ও উৎসাহ পেয়েছেন। রাশার মতে, মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে লন্ডনে ব্যবসা দাঁড় করানো অনেক সহজ। দুর্বল অবকাঠামোসহ নানা অসুবিধার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যবসার ঝুঁকি অনেক বেশি। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যয় বেশি কিন্তু স্পীড দুর্বল, মূলধনের অপ্রতুলতা এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাসহ নানা কারণে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যবসার পরিবেশ লন্ডনের চেয়ে অনেক খারাপ। আমি এক আরব নারী উদ্যোক্তা “দি প্যাসন কো (The Passion Co)”-নামের একটি আইডিয়া ডেভেলপিং কম্পানির উদ্যোক্তা লেবাননের নারী জেসিকা সিমান ২০১৪ সালে সানফ্রান্সিসকোতে তার কার্যক্রম শুরু করেন। তার মতে সানফ্রান্সিসকো তার জন্য একটি সম্ভাবনাময় এবং স্থিতিশীল বাজারের দুয়ার খুলে দিয়েছে। তবে, ভবিষ্যত পরিকল্পনায় তিনি লেবাননকেও রেখেছেন তার কার্যক্রম পরিচালনার অংশ হিসেবে। জেসিকার ভাষ্য হলো-“আমি সবসময়ই বলি আমি একজন আরব নারী উদ্যোক্তা। নিজেদের বাইরেও অপর নারীদের উঠিয়ে আনার ক্ষেত্রে আমাদের সবসময়ই দায়িত্ব পালন করতে হবে”। তার মতে, “তোমার মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে যে তুমি এই কাজটি করার জন্য যথেষ্ট যোগ্যতাসম্পন্ন। সমাজের পক্ষ থেকে ব্যাপক চাপ থাকবে। তবে, কোন চাপটি তুমি গ্রহণ করবে আর কোনটি উপেক্ষা করবে তা নির্ধারণের এখতিয়ার তোমার রয়েছে”। জেসিকার ইচ্ছে, তিনি নিজের সফলতার গল্প চারদিকে ছড়িয়ে দিবেন যাতে গৃহাভ্যন্তরে পড়ে থাকা নারীরা আগ্রহী হয়ে উঠেন। তিনি বলেন, “আমি আমার কার্যক্রম মধ্যপ্রাচ্যেও পরিচালনা করতে চাই যাতে সেখানকার নারীরা বাইরে বেরিয়ে আসার এবং কিছু করে দেখানোর উৎসাহ পান”। (বি. দ্র. গত৩০এপ্রিল২০১৫বিবিসিওয়ার্ল্ডসার্ভিসে “To find success, Arab women go west”-এই শীরোনামে প্রকাশিত ব্রুকি এন্ডারসনের বিশেষ প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে এই লেখাটি তৈরি করা হয়েছে। বিবিসির মূল প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন: http://www.bbc.com/capital/story/20150429-for-success-arab-women-go-west) লেখক: সাংবাদিক ই-মেইল:
No comments:
Post a Comment