ইন্দোনেশিয়ার তীরে ভিড়েছে ৫০০ রোহিঙ্গাবাহী দুটি ট্রলার আন্তর্জাতিক ডেস্ক আরটিএনএন জাকার্তা: নিজেদের বাড়িঘর ভেঙে-পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারপর তাড়িয়ে দেয়া হয় এলাকা থেকে। ঘরবাড়ি ছাড়া খোলা আকাশের নীচে জীবনযাপনেও তাদের আপত্তি ছিল না। নিজের জন্মভূমিতে তো থাকা যাবে। কিন্তু তাদের এই অধিকারটুকুও নেই! জন্মভূমির ক্ষমতাবান মানুষরা তাদেরকে গ্রহণ করে না। ফলে শেষ ভরসা একটি ট্রলারে উঠে অজানার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দে
য়া। এটাই তাদের নিয়তি। এরা মিয়ানমারের রোহিঙা মুসলিম জনগোষ্ঠি। এমনই অজানার খোঁজে গত কয়েকদিন ধরে ঘুর থাকা ৫০০ রোহিঙা নারী-পুরুষ ও শিশুসহ দুটি ট্রলার রবিবার সকালে ট্রলার ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্রতীরে ভিড়েছে। মানবাধিকার সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন ইন জাকার্তার ডেপুটি চীফ স্টিভ হ্যামিল্টন বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, দুটি ট্রলারের একটিতে ৪৩০ জন এবং অন্যটিতে ৭০ জনের মতো নারী-শিশু ও পুরুষ ছিলেন যাদের অনেকের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নেয়া দরকার। তিনি জানান, ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের মানটাং পুনটং এলাকায় ট্রলারগুলো ভেড়ানোর সময় সেখানে টহল দলের সদস্যরা অবস্থান করছিল। আরাকান প্রজেক্টের পরিচালক ক্রিস লেওয়াও রবিবার ভোরে ৫০০ রোহিঙার সেখানে পৌঁছার তথ্য নিশ্চিত করে জানান, তাদের অনেকে খাবার এবং পানীয়ের অভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। রোহিঙাদের ওপর মিয়ানমারে সরকারিভাবে গত কয়েক দশক ধরে বৈষম্য এবং নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। বিগত তিন বছর ধরে স্থানীয় বৌদ্ধদের দ্বারা নির্যাতনের মাত্রা ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। এর ফলে ভিয়েতমান যুদ্ধের পর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ নৌপথে পালিয়ে নিজেদের দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। আরাকান প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত এক লাখ মানুষ এভাবে নৌপথে পলায়ন করেছেন। তারা অনেকে কাজ বা আশ্রয়ের সন্ধানে পাচারের শিকার হচ্ছেন। তাদের সাথে যোগ দেন বাংলাদেশের বেকার শত শত যুবক। কাজের জন্য পাচারকারীদের মাধ্যমে থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় যান বহু রোহিঙা এবং বাংলাদেশি। কিন্তু সেখানে প্রতারিত হয়ে তাদের স্থান হয় জঙ্গলে পাচারকারীদের বন্দি শিবিরে। এরপর কারো পরিবারকে বড় ধরনের চাঁদার বিনিময়ে ছাড়া পেতে হয়। অন্যথায় নির্যাতনের শিকার হয়ে বা অনাহারে মৃত্যু বরণ করতে হয়। গত কয়েকদিন ধরে থ্যাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ায় মানবাপাচারকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি অভিযান শুরু হওয়ায় দেশগুলোতে ঢুকতে পারছেন অভিবাসী। ক্রিস লেওয়া জানান, ফলে এখন তারা কৌশল পরিবর্তন করে নৌকা বা ট্রলারে অবস্থান করছেন। মালক্কা প্রণালীতে বর্তমানে অন্তত সাত থেকে আট হাজার অভিবাসী রোহিঙা এবং বাংলাদেশি অবস্থান করছেন বলেও এই মানবাধিকার কর্মীর ধারণা। খাবার এবং পানির সংকটের কারণে তাদের অনেকে দুর্বল হয়ে পড়ছেন বলেও জানান তিনি। সূত্র: এপি, নিউইয়র্ক টাইমস মন্তব্য
No comments:
Post a Comment