Wednesday, May 20, 2015

পাচার হয় বাংলাদেশ থেকে অ্যাকশন হয় থাইল্যান্ডে:টাইমনিউজ

পাচার হয় বাংলাদেশ থেকে অ্যাকশন হয় থাইল্যান্ডে স্টাফ রিপোর্টার টাইম নিউজ বিডি, ২০ মে, ২০১৫ ১১:৪৪:৫৬ বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার এবং থাইল্যান্ডের জঙ্গল ও সমুদ্রে তাদের করুণ মৃত্যু নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় চললেও নির্বিকার সরকার। সরকারের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কার্যকর কোনো অ্যাকশন পরিলক্ষিত হয়নি বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। এমনকি, মানবপাচারে জড়িত যেসব গডফাদারের নাম উঠে এসেছে তাদের বেশির ভাগ এখনো প্রকাশ
্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্যের চোখের সামনে দিয়ে প্রতিনিয়ত মানবপাচার হচ্ছে তারাও বহাল তবিয়তে। নিম্নপর্যায়ের দুই কর্মকর্তাকে বদলি করা হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসৎ ওই সদস্যদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের কোনো অ্যাকশন এখনো নেয়া হয়নি। এর মধ্যে তিনজন ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের মানবপাচারকারী হিসেবে দাবি করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে মানুষ মৃত্যুর ঘটনায় সেখানকার শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার মেয়রকে বরখাস্তের পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানরা পাচার হয়ে থাইল্যান্ডের জঙ্গল ও সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্বজুড়ে চলছে তোলপাড়। দেশী-বিদেশী মিডিয়াগুলোতে এ নিয়ে কয়েক দিন ধরেই ব্যাপক লেখালেখি হচ্ছে। নিহতদের সুনির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা এখনো জানা সম্ভব না হলেও শত শত মানুষের মৃত্যুর খবর আসছে। থাইল্যান্ডের দৈনিক পত্রিকা দ্য নেশন-এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, থাইল্যান্ডের জঙ্গলে গণকবর পাওয়ার ঘটনায় দেশটির দণিাঞ্চলীয় প্রদেশ সঙ্খলার প্যাডাং বাসের পৌরসভার মেয়র বানজং পংফন বরখাস্ত এবং গ্রেফতার হয়েছেন। সেখানকার শতাধিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যার মধ্যে সিনিয়র কর্মকর্তারাও রয়েছেন। থাইল্যান্ডের জাতীয় পুলিশ প্রধান জেনারেল সময়ত পামপানমুয়াংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই পত্রিকাটি এ সংবাদ প্রকাশ করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, থাইল্যান্ডের জঙ্গলে গণকবর পাওয়ার ঘটনায় সেখানকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হয়েছে। কিন্তু যে দেশ থেকে ওই মানুষগুলো পাচার হয়ে গেল সে দেশের কারো বিরুদ্ধেই এখন পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কোনো অ্যাকশন হয়নি। গডফাদার হিসেবে ক্ষমতাসীন দলের এক সংসদ সদস্য, তার ভাই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং অপর এক উপজেলা চেয়ারম্যানের নামসহ বেশ কিছু পাচারকারী গডফাদারের নাম উঠে এলেও তারা এখনো বহাল তবিয়তে। তাদের অনেকেই এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ মিলেছে। শুধু তাই নয়, এখনো তারা পাচারের জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে আদম সংগ্রহ করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। থাইল্যান্ডে যখন একের পর এক গণকবরের সন্ধান মিলছিল, ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র উপকূলে যখন নৌকায় ভাসছিল পাচারের শিকার মানুষ তখনো পাচারকারীরা কক্সবাজার এলাকা থেকে মানবপাচার করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাড়া খায়। সেখানে পাচারকারীদের হাত থেকে কয়েকজন উদ্ধারও হয়েছে। এ ছাড়া গত ৮ মে টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে বিচ হ্যাচারি এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত হয়। পুলিশের দাবি তারা মানবপাচারকারী। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলাউদ্দিন ও হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল মান্নানকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। অথচ পুলিশের বেশ কিছু অসৎ সদস্যের বিরুদ্ধে মানবপাচারকারীদের সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও কিভাবে এই ব্যর্থতার দায় এড়ান তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন রয়েছে। অথচ তারা সবাই বহাল তবিয়তে আছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মানবপাচারকারী এবং তাদের সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে কী ধরনের অ্যাকশন নেয়া হবে সে সম্পর্কে এখনো সরকারের শীর্ষ মহল থেকে সুনির্দিষ্ট কোনোই বক্তব্য আসেনি। যে বক্তব্য পাওয়া গেছে তা অনেকটা দায়সারাগোছের বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। গত ১০ মে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেন একটি জাতীয় দৈনিকের সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, মানবপাচার রোধে স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, প্রবাসীকল্যাণসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সমন্বয়ে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। ওই সাক্ষাৎকারে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেছেন, এত হুঁশিয়ারি ও সতর্কতার পরও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়া যাচ্ছে। এর ফলে দেশে-বিদেশে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত ১৫ মে বলেছেন, মানবপাচার প্রতিরোধে প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে। তবে এটি প্রতিরোধে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সহযোগিতা দরকার। কক্সবাজারের চকোরিয়ার চিরিঙ্গা ও মালুরঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। (সূত্র: নয়াদিগন্ত) কেবি  

No comments:

Post a Comment