Sunday, March 22, 2015

কোন পথে ২০ দল: সিটি নির্বাচন না আন্দোলন:Time News

কোন পথে ২০ দল: সিটি নির্বাচন না আন্দোলন মোজাম্মেল হক তুহিন টাইম নিউজ বিডি, ২২ মার্চ, ২০১৫ ১৪:২৬:২৬ তফসিল ঘোষণার পর থেকেই রাজনীতির মাঠে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট আসন্ন ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা? নির্বাচনে অংশ নিলে চলমান আন্দোলন হোঁচট খাবে, নাকি অংশ না নিলে সরকার সুবিধা পাবে, এ বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে বিএনপি হাইকমান্ডকে। তফসিল ঘোষ
ণার পর থেকেই এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি বরাবরই নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে ইতিবাচক। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবদিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। এজন্য দলের নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে পরামর্শকদের কাছ থেকেও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা নিতে চায় দলীয় প্রধান। এরপরেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। তবে দলের অপর একটি সূত্র মতে, বর্তমান অবস্থায় জোটের অনেকেই সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। তাদের মতে,আন্দোলনের এই পর্যায়ে এসে সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়া মূলত ক্ষমতাসীনদের পাতানো ফাঁদে পা দেয়ার নামান্তর। কারণ এটি সরকারের পক্ষ থেকে বিরোধী জোটের আন্দোলন বাঁধাগ্রস্ত করার সর্বশেষ হাঁতিয়ার। জনগণের রায় বিরোধী জোটের পক্ষে আসলেও অন্যান্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মত পরবর্তীতে এখানেও সরকার তাদের সরিয়ে নিজেদের পছন্দের লোক বসাবে। তাই আসন্ন সিটি নির্বাচনের অংশ নেয়া হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী এমন পক্ষটির অভিমত হল, স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে নেতাকর্মীদের বিরত রাখা কঠিন। দলীয় সিদ্ধান্ত না থাকলেও অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। এমতাবস্থায় দলীয়ভাবেই নির্বাচনে অংশ নেয়া ভাল এতে ফলাফল নিজেদের পক্ষে আসতে পারে। অন্যদিকে আন্দোলন শুরুর পর থেকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় যেসব নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দিয়ে আছেন তারাও প্রকাশ্যে আসার সুযোগ পাবেন। আর নির্বাচনে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কারচূপির আশ্রয় নিলে জনমত বিরোধী জোটের আন্দোলনের   পক্ষে চলে আসবে। তবে সিটি নির্বাচন প্রশ্নে দু-একদিনের মধ্যেই ২০ দলীয় জোটের অবস্থান পরিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন জোটের নেতারা। শুক্রবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপিপন্থী শিক্ষক-সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেয়া একটি সূত্র টাইমনিউজবিডিকে বলেন, বেগম জিয়া সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে ইতিবাচক হলেও নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে অনেকটাই সন্দিহান। একইসঙ্গে চলমান আন্দোলনের বিষয়টিও তিনি মাথায় রাখছেন। যদি তার কাছে প্রতীয়মান হয় যে নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে চলমান আন্দোলন চাঙ্গা হবে তবেই তিনি বিষয়টিতে সায় দেবেন। এজন্য তিনি কৌশলী ভুমিকা নিতে পারেন। তবে বিষয়টি নিয়ে দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চান বিএনপি নেত্রী। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান টাইমনিউজবিডিকে এ বিষয়ে বলেন, ২০ দলীয় জোট সবার অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছে। দেশের জনগনের কাছে সেটিই এখন সবচেয়ে গুরুত্বের বিষয়। কিন্তু ইলেকশন কমিশন তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করেছে। এই নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে হয়তো খুব তাড়াতাড়ি আমাদের সিদ্ধান্ত জানা যাবে। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছি না। ২০ দলীয় জোটের শরীক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এমএম আমিনুর রহমান টাইমনিউজবিডিকে বলেন, ২০ দলের চলমান আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতে ও জনগণের দৃষ্টি সরানোর নিতেই সরকার তড়িঘড়ি এই তিন সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থানীয় সরকারের অধীনে, তাই এই নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ নেই। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যই ২০ দলের বর্তমান মনোনিবেশ। জোটের অপর শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী টাইমনিউজবিডিকে বলেন, আমরা এখন মধ্যবর্তী জাতীয় নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি। সুতরাং এখন ঢাকা বা অন্যকোনো সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। সরকার এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে মূলত চলমান আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য। তারপরেও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সময়োপযোগী যেকোনো সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা করছি। প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কমিশনের বৈঠক শেষে (১৮ মার্চ) বুধবার সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ তিন সিটি করপোরেশনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ২৯ মার্চ। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ২ এপ্রিল। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ এপ্রিল। এই তিনটি সিটি করপোরেশনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ১০ এপ্রিল। এমএইচ/জেএ 


No comments:

Post a Comment