Monday, December 15, 2014

‘মূর্খের চেয়ে অর্ধশিক্ষিতরা বেশি ডেঞ্জারাস’ :Natun Barta

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে সমালোচনামূলক কলাম লেখা এবং তা প্রকাশের দায়ে প্রথম আলো পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবীসহ আপিল বিভাগ। শুনানির এক পর্যায়ে আপিল বিভাগে বিচারপতি এএইচ শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, “মূর্খের চেয়ে অর্ধশিক্ষিতরা বেশি ভয়ঙ্কর।” ‘প্রধান বিচারপতি বেছে নেওয়া’ শীর্ষক একটি কলাম লেখার কারণে প্র
থম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে করা আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি মানিক এ কথা বলেন। শুনানির পর প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানকে তলব করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ।  তাদেরকে আগামী ৫ জানুয়ারি স্বশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ সিরাজুম মনির আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করেন। শুনানি শেষে তলবের পামপাশি তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুলও জারি করেছেন আপিল বিভাগ। আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চত করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, “মিজানুর রহমান খানের লেখাটি আদালত অবমাননাকর। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে আদালতকে হেয় করে এ ধরনের লেখা আগে কখনো কেউ লেখেনি।”   সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে একাধিক আদালতের আদেশে সংবাদ মাধমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সম্পূর্ণ না। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদেশ দিলে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হয় না।” এর আগে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। তিনি শুনানিতে বলেন, “খান তার পুরো লেখায় আপিল বিভাগের মর্যাদাহানি করেছেন। উনি বলেছেন, বাইরে থেকে লোক এনে যেন প্রধান বিচারপতি বানানো হয়। তার লেখা পড়ে মনে হয়, যেন কেবিনেট সেক্রেটারি অথবা উত্তরপাড়া থেকে কোনো লোক এনে প্রধান বিচারপতি করা হয়। আপনাদের কারো যোগ্যতা নেই প্রধান বিচারপতি হওয়ার।” এ সময় আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, “অর্ধশিক্ষিত কোনো লোকের পক্ষেতো আইনের অনেক ব্যাখ্যা বোঝা সম্ভব নয়। ” আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেন, “এজন্য অর্ধশিক্ষিত থেকে অশিক্ষিত ভালো। কোনো এক জ্ঞানী মনীষী বলেছেন, তোমরা অশিক্ষিতের কাছে যাও কিন্তু অর্ধশিক্ষিতের কাছে যেও না।” রোকন উদ্দিন মাহমুদ আর্টিকেলের একটি অংশ পড়ে শুনিয়ে বলেন, “তিনি লিখেছেন, নিম্ন আদালতের বিচারক অথবা বাইরে থেকে যোগ্য যে কাউকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে সংবিধান বাধা নেই। এ উক্তির মাধ্যমে তিনি আদালতের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। উনি লিখেছেন, বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা ও বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার নিয়োগ বিএনপি সরকারের আমলে স্থায়ী হয়। এ লেখার দ্বারা উনি কী বুঝাতে চেয়েছেন।”  এ সময় আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি বলেন, “এ তথ্য সঠিক নয়। বিচারপতি এসকে সিনহার চাকরিও বিএনপির আমলে স্থায়ী হয়।” ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন বলেন, “উনি লিখেছেন প্রধান বিচারপতি নিয়োগে সংসদ এবং নির্বাহী বিভাগের মতামত নিতে হবে। উনি নির্বাহী বিভাগের প্রেমে পড়েছেন।” এ সময় একজন বিচারপতি বলেন, “এটা খুবই বিপজ্জনক কথা।” রোকন উদ্দিন  মাহমুদ, আদালত অবমাননার রুল ইস্যুও এবং প্রথম আলোর সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদককে তলবের আবেদন জানান। আদালত এ পর্যায়ে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলামের বক্তব্য জানতে চান। মাহমুদুল ইসলাম বলেন, “আদালতের এখতিয়ার কখনো চ্যালেঞ্জ করা যায় না। আপনারা তো তাদের বিরুদ্ধে এখনই কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, শোকজ করা যেতে পারে। তারা তাদের ব্যাখ্যা দিক।” জেষ্ঠ্য আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি বলেন, “মিজানুর রহমান খান একজন স্বভাবজাত আদালত অবমাননাকারী। অতীতে তিনি অনেকবার আদালত অবমাননা করেছেন। আপনারা রুল ইস্যু করেন এবং তলব করেন।” অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম নিবন্ধের কিছু অংশ আদালতে উপস্থাপন করে বলেন, “তার এ লেখা আদালত অবমানাকর। ১৯৪৭’র পর আদালতের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে এভাবে কেউ কোনো লেখা অতীতে কখনো লেখেননি।” শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেন। এর আগে সকালে ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ মিজানুর রহমান খানের লেখাটি আদালতের নজরে আনেন। আদালত তাকে লিখিত আবেদন দায়েরের পরামর্শ দেন। আবেদনের ওপর শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা আপনাদের অভিযোগগুলো আমলে নিলাম।” এরপর আদালত তলবের আদেশ দিয়ে রুল জারি করেন। নতুন বার্তা/এজেখান/জবা


No comments:

Post a Comment