বাংলাদেশের গোয়েন্দারাও যাবেন ভারত স্টাফ রিপোর্টার টাইম নিউজ বিডি, ২০ নভেম্বর, ২০১৪ ০৯:৪২:৩৫ ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র চার সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর শেষে এবার বাংলাদেশের গোয়েন্দারা যাচ্ছেন ভারতে। দু’দিনের সফরে জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে ভারত ও বাংলাদেশকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে বলে দুই দেশের গোয়েন্দাদের যৌথসভায় একমত হন। এরই ধারাবাহিকতায় ভারতে যাবেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। এনআইএ সদস্যরা বাংলাদ
েশের গোয়েন্দাদের ভারতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। এর পরই গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। অনুমতি পেলেই তারা ভারতে জঙ্গিদের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ ও তথ্য সংগ্রহের জন্য ভারতে যাবেন। এদিকে, ঢাকা সফর শেষে বুধবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র চার সদস্যের প্রতিনিধি দল নিজ দেশে ফিরে যান। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সন্ত্রাসীদের বড় একটি অংশ দীর্ঘদিন ধরে ভারতে আত্মগোপনে আছে। পশ্চিমবঙ্গে থেকেই তারা নাশকতার পরিকল্পনা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বৈঠকে কিছু তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছে। এখন থেকে জঙ্গি দমনে দুই দেশের গোয়েন্দারা যৌথভাবে কাজ করবে। তিনি বলেন, ভারতীয় গোয়েন্দারা আমাদের আমন্ত্রণ জানানোর পর বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।অনুমতি পেলে আমরা যাবো। ভারতে যেতে পারলে অনেক উপকার হবে। অনেক সন্ত্রাসীরা ভারতে আত্মগোপন করে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছে। যৌথ বৈঠকে অংশ নেয়া আরেকজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র সঙ্গে মূলত জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ- জেএমবি ও জাল মুদ্রার ব্যবসা এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে দুই ব্যক্তি মারা যায়। এরপরই তারা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় জেএমবির নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে পারেন। তাদের তদন্তে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর জেএমবি সদস্য নানা ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে রয়েছে বলেও তারা জানতে পারেন। ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, এনআইএ বাংলাদেশের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সহযোগিতা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আত্মগোপনে থাকা জঙ্গি কার্যক্রম নির্মূল করতে চায়। গত সোমবার ঢাকায় আসার পর দুই দিনে বাংলাদেশের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে। এসব বৈঠকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে দুই দেশের গোয়েন্দারা তাৎক্ষণিক যোগাযোগেও একমত হয়েছেন। এজন্য তারা নিজেদের সরকারি ও ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরও আদান-প্রদান করেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের এপার-ওপার যাওয়া-আসা ঠেকাতে করণীয় কি হতে পারে তা নিয়েও আলোচানা হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, ভারতের গোয়েন্দারা যে ১৪ জঙ্গি সদস্যের তালিকা দিয়েছে তাদের মধ্যে বেশির ভাগই বাংলাদেশী মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি সদস্য। দুই দেশ যেহেতু একই জঙ্গিদের খুঁজছে সে জন্য বাংলাদেশের গোয়েন্দা প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে কোন জঙ্গি তালিকা হস্তান্তর করা হয়নি। তবে এলিট ফোর্স র্যাব নিজেদের উদ্যোগে ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থানরত ৪১ জন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও ৫ জন জঙ্গি সদস্যের তালিকা দিয়েছে। উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র মহাপরিচালক শারদ কুমারের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল ঢাকায় আসে। অন্যরা হলেন- মহাপরিদর্শক (আইজি) সঞ্জিত কুমার সিং, উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সজীব ফরিদ সপু ও অনুরাগ তানখা। ভারতীয় এই গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. কামাল উদ্দিনকে প্রধান করে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গঠন করা হয়। এই দলে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম, র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্ণেল আবুল কালাম আজাদ এবং পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) একজন করে প্রতিনিধি ছিলেন। জেএ
No comments:
Post a Comment