কারাগারে কেমন আছেন লতিফ সিদ্দিকী নিজস্ব প্রতিবেদক আরটিএনএন ঢাকা: পবিত্র হজ, মহানবী (সা.) ও তাবলিগ জামাত নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্যের জেরে গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এরপর কেটে গেছে দুদিন। এই দুদিন তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ২৬ নম্বর সেলে একাকী দিন কাটিয়েছেন। লতিফ সিদ্দিকী নির্জন সেলে একেবারেই চুপচাপ ও শান্ত সময় কাটাচ্ছেন বলে কারাসূত্রে জান
া গেছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নাছির উদ্দিন জানিয়েছেন, আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে ডিভশন দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য বরাদ্দ খাবারের পাশাপাশি তিনি বাড়ি থেকে পাঠানো কিছু ফলও খেয়েছেন। তিনি জানান, বাড়ি থেকে তার জন্য আপেল, কমলা ও কলা পাঠানো হয়েছিল। তিনি সেগুলো খেয়েছেন। রাতে বেশ ঠাণ্ডা পড়ায় তাকে শীতের কাপড়ও দেওয়া হয়েছে। নাছির উদ্দিন বলেন, লতিফ সিদ্দিকী চাইলে বাড়ি থেকে টিভি সেটও আনতে পারেন। অবশ্য টিভি সেটের জন্য তেমন আগ্রহও তিনি দেখাননি। প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ সিদ্দিকীর প্রধান শখ বই পড়া। তার বাড়িতে রয়েছে সমৃদ্ধ পাঠাগার। তবে বুধবার পর্যন্ত তিনি বাড়ি থেকে কোনো বই আনেননি বলে কারা সূত্রে জানা গেছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র তত্ত্বাবধায়ক ফরমান আলী জানিয়েছেন, কারাবিধি অনুযায়ী একজন আইনজীবী বুধবার তার সঙ্গে দেখা করে ওকালতনামায় সই নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এ সময় লতিফ সিদ্দিকী আইনজীবীর সঙ্গে কিছু পরামর্শও করেন। মনে করা হচ্ছে, তিনি অচিরেই উচ্চ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করবেন।’ উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সফরকালে গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে টাঙ্গাইল সমিতির এক মতবিনিময় সভায় লতিফ সিদ্দিকী বলেছিলেন, ‘আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। তবে তার চেয়েও হজ ও তাবলিগ জামাতের বেশি বিরোধী।’ তিনি বলেন, ‘এই হজে যে কত ম্যানপাওয়ার নষ্ট হয়। হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গিয়েছে। এদের কোনো কাম নাই। এদের কোনো প্রডাকশন নাই, শুধু রিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা দিয়ে আসছে।’ এমন মন্তব্যের পর তখনকার টেলিযোগাযোগমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীকে ‘মুরতাদ’ ঘোষণা দিয়ে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ ও হরতাল পালন করে হেফাজতে ইসলামসহ বেশ কয়েকটি ইসলামী দল। এরপর বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য অন্তত ২৬টি মামলা হয়। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। চাপের মুখে সরকার লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। পরে আওয়ামী লীগ থেকেও তাকে বহিষ্কার করা হয়। এরই মধ্যে পরোয়ানা মাথায় নিয়ে গত ২৩ নভেম্বর রবিবার রাতে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী নাটকীয়ভাবে কলকাতা থেকে বিমানে ঢাকায় ফেরেন। একদিন আত্মগোপনে থাকার পর মঙ্গলবার ধানমন্ডি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। মন্তব্য pay per click
No comments:
Post a Comment