Sunday, June 14, 2015

স্বামী-সন্তান হারা নারীর স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার:টাইমনিউজ

স্বামী-সন্তান হারা নারীর স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার শিশির হাওলাদার, ভোলা॥ টাইম নিউজ বিডি, ১৩ জুন, ২০১৫ ১৮:৪৬:১৫ দুই ছেলে আর স্বামীকে নিয়ে সুখেই কাটছিলো নুরুন নাহারের সংসার। ঢাকার কাছে নারায়নগঞ্জে ঝাল মুড়ি বিক্রি করতেন স্বামী মোঃ বেল্লাল। এর সিমিত আয় দিয়েই আনন্দ আর হাসিতে কেটে যেত ৪ সদস্যের সংসার। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভাইয়ের ছেলে জুয়েলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সপরিবারে বেড়াতে যান মনপুরা উপজেলায়। স্বপ্ন ছিল
ো বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে নারায়নগঞ্জ পৌছেই বড় ছেলে জনি (৫) কে স্কুলে ভর্তি করাবে। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন আজ দুঃস্বপ্ন হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার ভোলার বিছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরা থেকে ফেরার পথে ট্রলার ডুবিতে চুরমার হয়ে যায় তার স্বপ্ন। স্বপরিবারে ডুবে যান তিনি। স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় নুরুন নাহার উদ্ধার হলেও তার স্বামী মোঃ বেলাল (৪০) ও তার বড় ছেলে জনির (৫) কোন সন্ধান গত ২ দিনেও পাওয়া যায়নি। দেড় বছরের ছোট ছেলে রনিকে উদ্ধার করা হলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মনপুরা হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। নুরুন নাহার জানান, তার বাপের বাড়ি তজুমদ্দিন উপজেলার আড়ালিয়া গ্রামে। স্বামীর বাড়ি ভোলা সদরের ইলিশা গ্রামে। স্বামী সন্তান নিয়ে থাকতেন নারায়ন গঞ্জের ঢাকেশ্বরী জব্বারের গ্রেজ এলাকায়। গত সবে বরাতের ৪দিন আগে বোনের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২ ছেলে নিয়ে তিনি মনপুরার কলাতলি আসেন। ৩ দিন পর তার স্বামীও আসেন মনপুরায়। বিয়ের আনন্দে ভালই কাটছিলো তাদের দিনগুলো। কিন্তু তারা জানতো না যে এ আনন্দই তাদের জীবনের শেষ আনন্দ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে তারা নারায়নগঞ্জে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কলাতলি থেকে ট্রলার যোগে মনপুরার রামনেওয়াজ যাওয়ার জন্য রওয়ানা দেয়। ট্রলার টি রামনেওয়াজের কাছাকাছি মেঘনায় হঠাৎ ঝড়ো বাতাস আর ঢেউয়ের তোরে ডুবে যায়। তার পর নুরুন নাহার আর কিছুই বলতে পারে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে তার জ্ঞান ফিরে আসলে নিজেকে দেখেন মনপুরা হাসপাতালের বেডে। কিছু সময় পর দেখতে পান তার ছোট ছেলের নিথর দেহ হাসপাতালে পড়ে রয়েছে। কিন্তু তার স্বামী বেল্লাল ও তার বড় ছেলে জনির কোন খবর নেই। কেউ বলতে পারছে না তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে। জ্ঞান ফিরার পর পর স্বামী সন্তানের জন্য মুর্ছা যেতে থাকেন তিনি। তার আর্ত চিৎসারে হাসপাতালের আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে। সে চিৎকার দিচ্ছে আর বলছে, ”বোন পুতের কেন বিয়া খাইতে গেলাম। স্বামী সন্তান লইয়া আইলাম আর শুন্য বুকে যাই” এদিকে, স্থানীয় ও নিহতের স্বজনরা নুরুন নাহারের ছোট ছেলে রনিকে মনপুরা দাসের হাওলা গ্রামে দাফন করেন। এমকে

No comments:

Post a Comment