সালাহ উদ্দিনকে ফিরিয়ে আনতে ‘আইনি প্যাঁচ’ নিউজ ডেস্ক আরটিএনএন ঢাকা: ভারতের শিলংয়ে সন্ধান পাওয়া বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে দেশে ফিরিয়ে আনতে দেখা দিয়েছে আইনি জটিলতা। ‘অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের’ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার পরই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে। দুমাসেরও বেশি সময় ‘নিখোঁজ’ থাকার পর ভারতের শিলংয়ে সন্ধান পাওয়া যায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও সাবেক প্রতিম
ন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদের। এখন ভারত থেকে তাকে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তার স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। বুধবার নিজের বাসায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারের সহযোগিতা সবসময় কামনা করছি। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়।’ ভারতের ভিসা পেলেই ‘যতদ্রুত সম্ভব’ শিলংয়ের উদ্দেশে রওনা হতে চান জানিয়ে বিএনপির এই যুগ্ম-মহাসচিবের স্ত্রী বলেন, ‘ভিসার জন্য সকালেই আবেদন জমা দিয়েছি, ভিসা পেলেই শিলং রওনা হবো।’ সালাহ উদ্দিন আহমেদকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার কোনো উদ্যোগ নেবে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ডয়চে ভেলে-কে বলেন, ‘তিনি তো ভারতে আত্মগোপনে ছিলেন। তাই যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।’ কিভাবে প্রক্রিয়াগুলো শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সালাহ উদ্দিন আহমেদ এখন ভারতে অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে সেখানে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ফলে তাকে আনতে হলে ভারত সরকারের একটা আইনি প্রক্রিয়া থাকবে এবং আমাদের একটা আইনি প্রক্রিয়া থাকবে।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুখ্য ভূমিকা নেবে। আমরা সেভাবেই শুরু করছি। তবে আমরা এখনও অফিশিয়ালি কাগজপত্র হাতে পাইনি। মৌখিকভাবে যেসব খবর পাচ্ছি, তার ভিত্তিতেই কথাগুলো হচ্ছে। আমরা আশা করছি, সব কিছুই হবে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সব কিছু সম্পন্ন করা হবে।’ জানা গেছে, অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, তার নিষ্পত্তি হওয়ার পর দুদেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। বিএনপি চুপ সালাহ উদ্দিনের সন্ধান পাওয়ার পরও বিএনপির তরফ থেকে এ ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। বুধবার টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন ডয়চে ভেলে-কে বলেন, ‘সালাহ উদ্দিনকে ফিরিয়ে আনার পরই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি যে সরকারের কোনো সংস্থা তাকে তুলে নিয়ে গেছে।’ কিন্তু সালাহ উদ্দিন আহমেদকে শিলং কিভাবে পাঠানো হলো– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘...তাই তো বলছি, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলেই পুরো বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার হওয়া যাবে।’ ‘ভিসা পেলেই যাবো’ বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ ‘অন্তর্ধানের’ দুমাস পর গত মঙ্গলবার ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে তার হদিস মেলে। ওই দিন দুপুরে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ জানান, শিলংয়ের হাসপাতাল থেকে তিনি স্বামীর ফোন পেয়েছেন। অন্যদিকে শিলং পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, সঙ্গে কাগজপত্র না থাকায় তারা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়েছে। পুলিশের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে তিনি মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। হাসিনা আহমেদ জানান, ‘ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদনপত্রে সড়ক ও আকাশপথ- দুই সুযোগই রেখেছি। যে পথ সুবিধাজনক হবে, সে পথেই যাবো। তবে মঙ্গলবার হাসপাতাল পরিবর্তন হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারিনি।’ তিনি বলেন, ভিসার জন্য ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। হাসিনা আহমেদ ও তার ভগ্নিপতি মাহবুবুল করীম বুলবুলসহ চারজনের নামে ভিসার আবেদন করা হয়েছে। যাদের ভিসা পাওয়া যাবে তাদের নিয়েই ভারত যাবেন হাসিনা। প্রসঙ্গত, গত ১০ই মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে র্যা ব ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। সেই থেকে ৬২ দিন নিখোঁজ ছিলেন তিনি। সূত্র: ডয়চে ভেলে। মন্তব্য
No comments:
Post a Comment