
দলটি। দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপকালে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। অন্যদিকে তিন সিটিতে ভোট বর্জনের ঘোষণার পর থেকেই দলের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতারা এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনায় অনেকটা সরব হয়ে উঠেছেন। অনেকে আবার নির্বাচনে অংশ নেয়ায় লাভ ক্ষতির হিসেব কষতে শুরু করেছেন। যদিও বিএনপির ধারণা ছিল বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে তিন সিটি নির্বাচনে সরকার নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিয়ে বিরোধী দল ও জনগণের কিছুটা হলেও আস্থা অর্জন করতে চাইবে। সে জন্য শরীক দলগুলোর মতামত উপেক্ষা করে অনেকটা একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েই আন্দোলনের বিরতি দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। তবে সেই আশা ক্ষীণ হতে থাকে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা সময় থেকেই। নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাতে গিয়ে নেতাকর্মী থেকে শুরু করে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও সরকার সমর্থকদের হামলার শিকার হন। যার চূড়ান্ত পরিণতি পায় নির্বাচনের দিন। সকাল থেকেই ক্ষমতাসীনরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় কেন্দ্র দখল ও ব্যাপক কারচুপির আশ্রয় নেয়। প্রতিবাদে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। এরইমধ্যে দেশি-বিদেশী গণমাধ্যমে তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কেন্দ্র দখল, এজেন্টদের বের করে দেওয়া, জালভোট প্রদান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতমূলক আচরণসহ নানা অনিয়মের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে এরইমধ্যে কূটনৈতিকমহলও উদ্ধেগ প্রকাশ করেছে। দলের অন্য একটি সূত্রমতে, নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের অপকর্মকে পুঁজি করে ধীরগতিতে আন্দোলনকে সক্রিয় করাই হবে কৌশলী কাজ। তবে এনিয়ে শিগগিরই পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে বিএনপি ও জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়া বৈঠক করতে পারেন। সেই সূত্র আরও জানিয়েছে আগামী সপ্তাহে দুদিনের কর্মসূচি আসতে পারে। তবে সেটি হরতাল অবরোধের মত কঠোর হওয়ার সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে প্রতিবাদ হিসেবে আপাতত ১দিন ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকা হতে পারে।এছাড়া আরও ১দিন সারাদেশ ব্যাপীও বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। তবে দলটির সাধারণ নেতাকর্মীসহ অনেকেরই প্রশ্ন বিএনপি এখন কি করবে। তারা কি আবারো আন্দোলনে ফিরে যাবে? নাকি আবারো সংগঠন গোছানোর কাজে মন দিবে। দলটির অধিকাংশ নেতাকর্মী মনে করেন নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল।যুক্তি হিসাবে তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের অধীনে যে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে তার পক্ষে যুক্তি আরো জোরালো হলো। এদিকে তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকারি দলের হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাসহ সার্বিক বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে ঢাকাস্থ কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরার চিন্তা করছে বিএনপি। সেই সূত্র মতে, কী পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হয়েছে কূটনীতিকদের কাছে তা ব্যাখ্যা করে বলা হবে। এজন্য নির্বাচন বর্জনের পর থেকেই দলের বেশ কয়েকজন নেতা এ বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান টাইমনিউজবিডিকে বলেন, ২৮ এপ্রিলের সিটি নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করে প্রমাণ করেছি বিএনপি একটি নির্বাচনমূখী গণতান্ত্রিক দল। তবে ক্ষমতাসীনরা যে ভোট জালিয়াতি ও কারচূপির আশ্রয় নিয়েছে তা নজীরবিহীন। এই নির্বাচনের দিন ভোট বর্জনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছি আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। তাই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেওয়াটা বিএনপির ভুল ছিল না। তবে কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, সবকিছু বিবেচনা করে জোটের শরীক দলের মতামত নিয়েই কর্মসূচি দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপির আন্দোলনে সাময়িক কিছুটা ছেদ পরলেও পরবর্তী সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপিতে জনসম্পৃক্ততা বাড়বে। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়ায় সরকারের প্রকৃত চেহারা জনগণের কাছে পরিষ্কার হয়েছে। তারা যে জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দেয় না সেটি সবাই বুঝে গেছে। তিনি আরো বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে পরবর্তী পদক্ষেপ শিগগিরই আপনদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানানো হবে। এমএইচ/জেআই
No comments:
Post a Comment