Sunday, December 21, 2014

অর্থ আত্মসাৎ: তাবলীগ আমিরের অপসারণ দাবি একাংশের:Time News

অর্থ আত্মসাৎ: তাবলীগ আমিরের অপসারণ দাবি একাংশের স্টাফ রিপোর্টার টাইম নিউজ বিডি, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০৮:৫৬:৪১ তাবলীগ জামাতের প্রধান মুরুব্বি (আমির) সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামসহ কয়েকজন শূরা সদস্যের বিরুদ্ধে হাদিয়া বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাতসহ কয়েকটি অভিযোগ তুলে তাদের অপসারণ ও তদন্তের দাবি জানিয়েছে তাবলীগ জামাতের একাংশ। তাদের দাবি, তাবলীগের প্রধান মুরুব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম তাবলীগকে রাজনৈতিক লিপ্সা পূরণের হাতিয়া
র ‍হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করে আসছেন। গত বছরের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের কর্মসূচিতে তাবলীগকে যুক্ত করার পাঁয়তারা করেছিলেন বলেও দাবি তাদের। এছাড়া ওলামায়ে কেরামের ওপর নির্যাতন, কাকরাইল মসজিদ নির্মাণেও বহুরকম দুর্নীতির সাথে সৈয়দ ওয়াসিফুল জড়িত। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ২৪ সাধারণ তাবলীগ কর্মীকে আটক করা হয়েছে উল্লেখ করে তাদের মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন তারা। শুক্রবার রমনা থানার সামনে অবস্থান নিয়ে তারা এ দাবিও জানান। তবে সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম অনুসারীরা বলছেন, যারা শূরা সদস্যদের বিরুদ্ধে অর্থআত্মসাতের অভিযোগ করছেন তারা তাবলীগ করে না। তাদের আনীত অভিযোগের কোনো ভিত্তিও নেই। তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালেয়ের শিক্ষক প্রফেসর মুশফিক সাহেবের তাবলীগ বিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন বলে দাবি তাদের। তাবলীগ জামাতের একাংশের দাবি, ১৯৮৮ সাল থেকে হাদিয়া বাণিজ্য করে আসছেন সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। ১৯৮৮ সালে মহিলা মহলে হাদিয়া বাণিজ্য শুরু করেন। ১৯৯২ সালে সৌদি আরবে গমন করেন। তখন সৌদি আরব থেকে বিপুল পরিমাণ তাবলীগ জামাতের নামে হাদিয়া আসা শুরু হয়। সেসময় থেকেই মৌলানা জুবায়ের, শাহাবু্দ্দিন নাসিম ও মুহাম্মদ হুসাইনসহ আস্থাভাজনদের মাধ্যমে হাদিয়ার টাকা আত্মসাৎ শুরু করেন তিনি। সেসময় কাকরাইল মসজিদের পক্ষ থেকে সৌদি আরবের কাছে বেহাতে হাদিয়ার টাকা হস্তান্তরে সতর্ক করা হয়েছিল বলেও দাবি তাদের। ২০০৩ সালে সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম ১৪ জন শূরা সদস্যের একজন নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালের পর থেকে স্ত্রী মিনুকে মহিলা শাখার দায়িত্ব দিয়ে রমরমা হাদিয়া বাণিজ্য শুরু করেন। ২০১২ সালে কাকরাইল মসজিদের নির্মাণের কথা বলে দেশ বিদেশ থেকে আসা বহুজাতিক হাদিয়ার টাকা থেকে আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ তাবলীগ জামাতের একাংশের। এব্যাপারে আবদুর রহমান নামে একজন তাবলীগ কর্মী বলেন, ‘তাবলীগের বর্তমান মুরব্বী ওয়াসিফুল ইসলাম বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অনিয়ম করছেন দীর্ঘ দিন ধরে। আমরা যখনই প্রতিবাদ করেছি তখনই আমাদের রোষাণলে পড়তে হয়েছে। তিনি যদি অন্যায় না করেন তবে আমাদের ওপর হামলা করছে কেন?’ এমন দাবি করেন তিনি। রমনা থানার সামনে অবস্থান নেয়া তাবলীগ জামাত কর্মীদের নেতৃত্বদানকারী মাওলানা সুমন বলেন, ‘সবাই তাবলীগ কর্মীদের অরাজনৈতিক দীনি মেহনতকারী হিসেবে জানে। কিন্তু সৈয়দ ওয়াসিফুল সেখানে তাবলীগকে সরকার বিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। তিনি বলেন, আমরা চাই সরকার ওয়াসিফুলসহ নের্তৃস্থানীয়দের যারাই তাবলীগ জামাতের অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িত। তাদের বিচার হোক। তাদের আর্থিক অনিয়মের তদন্ত করা হোক। এজন্য তিনি সরকারের হস্তক্ষেপও কামনা করেন। এরআগে বৃহস্পতিবার রাতে তাবলীগ জামাতের ২৪ কর্মীকে আটক করে রমনা থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে কাকরাইল মসজিদ থেকে তাদের আটক হয়। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বেশকিছু তাবলীগ কর্মী মাগরিবের নামাজের পর মসজিদের ভেতরে লিফলেট বিলি করছিলেন। একপর্যায়ে কাকরাইল মসজিদের আমির ওয়াসিফুল ইসলামের লোকজন তাদের মসজিদের ভেতর আটক করেন। এশার নামাজের পর তাবলীগ জামাতের মুরুব্বী সৈয়দ ওয়াসিফুল রমনা থানায় অভিযোগ করেন, কতিপয় ব্যক্তি তাবলীগকে বিভক্তকরণ ও মসজিদের পরিবেশ নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। তারা আসন্ন বিশ্ব ইজতেমাকে বাধাগ্রস্ত করতে এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে।’ এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ২৪ জন কর্মীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর শুক্রবার দুপুরে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। তবে লিফলেট বিতরণকারী মাসুম নামে এক তাবলীগ কর্মী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমির ওয়াসিফুলের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করে আসছি। যখনই আমরা তাদের অনিয়ম নিয়ে কথা বলি, তখনই তারা আমাদের ওপর হামলা চালান। মিথ্যা অভিযোগ করে পুলিশি হয়রানি করেন।’ এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তাবলীগ জামাতের মুরুব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা তিনি মোবাইলফোন রিসিভ করেননি। পরে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। তবে সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের সহকারি ১২ শূরা সদস্যের একজন মাওলানা আব্দুল্লাহ। তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যারা তাবলীগ মুরুব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, লিফলেট বিতরণ করছেন তারা তাবলীগের কেউ নন। তারা ভিন্ন স্বার্থে কাজ করছে। তারা রাবি শিক্ষক প্রফেসর মুশফিকুর রহমানের নেতৃত্বে জঙ্গীবাদী কোনো সংগঠনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পিতভাবে তাবলীগকে বিভক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন বলেও দাবি করেন তিনি। জেইউ/ এআর


No comments:

Post a Comment